জাতীয়

প্রধানমন্ত্রী রাজি হলে আগামী ৩০ জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধন

পদ্মা সেতু এখন যান চলাচলের জন্য প্রস্তুত। সেতুতে কার্পেটিং (পিচ ঢালাই) এর কাজ শেষ। সেতুর রেলিং ও রোড মার্কিং ছাড়া বাকি সব কাজ শেষ। কর্মকর্তারা বলছেন, স্বপ্নের পদ্মা সেতুতে এখন গাড়ি চালানো সম্ভব।

তবে সেতু অধিদপ্তর সূত্র জানায়, সেতুটি উদ্বোধন হবে ৩০ জুন। এ তারিখ থেকে প্রধানমন্ত্রীর কাছে সময় চাওয়া হয়েছে। সেতু বিভাগ ইতিমধ্যে সেতুর জন্য খসড়া টোল হার নির্ধারণ করেছে। অর্থ বিভাগ রাজি হয়েছে। চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য গত বৃহস্পতিবার খসড়া টোল তালিকা প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠিয়েছে সেতু বিভাগ।

প্রকল্প পরিচালক মো: শফিকুল ইসলাম বলেন, শুক্রবার মূল সেতুতে পিচ ঢালাইয়ের কাজ শেষ হয়েছে। সেতুর ভায়াডাক্ট অংশে কার্পেটিং কাজ রয়ে গেছে। আশা করছি, আগামী জুনের মধ্যে সেতুর সব কাজ শেষ হবে। তবে কবে নাগাদ সেতুটি উদ্বোধন করা হবে তা ঠিক করেছে সরকার। প্রধানমন্ত্রী বললে সেতুটি চালু করা হবে।

জুন না ডিসেম্বরে পদ্মা সেতু চালু হবে তা নিয়ে সংশয় কাটেনি। ৮ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদে বলেন, ২০২২ সালের মধ্যে পদ্মা সেতু যান চলাচলের জন্য খুলে দিতে কাজ চলছে।

যদিও সরকার দেড় বছর ধরে বলে আসছে ২০২১ সালের জুনে পদ্মা সেতু চালু হবে। সেতু উদ্বোধনের তারিখ নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। এদিকে আগামী ৩০ জুন উদ্বোধনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে সময় চাওয়া হয়েছে।

খসড়া অনুযায়ী, পদ্মা সেতুতে ফেরি ভাড়ার দেড় গুণ টোল দিতে হবে। বর্তমানে ফেরিতে মোটরসাইকেল পারাপারের জন্য আপনাকে ৬০ টাকা দিতে হবে। পদ্মা সেতুতে ১০০ টাকা টোল দিতে হবে। এছাড়া প্রাইভেট কারের জন্য ৬৫০ টাকা, এসইউভি, জিপ ও পিকআপের জন্য ১২০০ টাকা, মাইক্রোবাসের জন্য ১ হাজার ৩০০ টাকা, ছোট বাসের জন্য ১৪০০ টাকা, মাঝারি বাসের জন্য ২ হাজার ও বড় বাসের জন্য ২ হাজার ৪০০ টাকা টোল প্রস্তাব করা হয়েছে।

ছোট ট্রাকের (পাঁচ টনের কম) জন্য টোল হবে ১৬০০ টাকা, মাঝারি ট্রাকের জন্য (পাঁচ থেকে আট টন) ২১০০ টাকা এবং বড় ট্রাকের জন্য (আট টনের বেশি) ২৮০০ টাকা। তিন-এক্সেল কভার্ড ভ্যানের জন্য আপনাকে ৫,৫০০ টাকা এবং চার-অ্যাক্সেল ট্রেলারের জন্য ৬,০০০ টাকা দিতে হবে।

পদ্মা সেতু প্রকল্পের পরিচালক বলেন, টোল তার এখতিয়ারের মধ্যে নেই। কিভাবে টোল আদায় করা হবে তা সরকারের সিদ্ধান্ত। প্রকল্প পরিচালক হিসেবে তার দায়িত্ব সময়মতো সেতুর কাজ শেষ করা। জুনে শেষ হবে।

সেতুটি বছরের শেষ নাগাদ চালু হবে বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তবে যুদ্ধের কারণে কোনো পণ্য আমদানি বন্ধ হয়নি বলে প্রকল্প সূত্র জানিয়েছে। ব্রিজের প্যারাপেটের (রেলিং) ওপরে শুধু অ্যালুমিনিয়াম গার্ড রেল দেশে আসতে বাকি আছে।

প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, যুদ্ধের কারণে এক মাস বিলম্ব হওয়া সত্ত্বেও জাহাজটি ২৬শে মার্চ বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে যুক্তরাজ্য ত্যাগ করে।

পদ্মা মূল সেতু প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান আবদুল কাদের বলেন, ৯ মে চট্টগ্রামে পৌঁছাবেন। মে মাসের মধ্যে সেতুর কাজ শেষ হবে। সেতুর ভায়াডাক্ট অংশে এগুলো বসানো হয়েছে। সেতুতে বাতি লাগানো হয়েছে, বৈদ্যুতিক সংযোগ দেওয়ার কাজ চলছে। ব্রিজের উপর রাস্তা চিহ্নিত করার কাজ বাকি।

বাকি দুটি প্রকল্পের চেয়ে রেল সংযোগের কাজ অনেকটাই পিছিয়ে। সেতু প্রকল্পের অপর একটি সূত্রে জানা গেছে, সেতুর ওপর দিয়ে একযোগে ট্রেন ও যানবাহন চলাচল শুরু করতে আগামী ডিসেম্বরে পদ্মা সেতু চালু হতে পারে।

মন্তব্য করুন