প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসায় কেঁদে ফেললেন বিদায়ী মুখ্যসচিব
মন্ত্রিসভায় শেষ বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব। আহমদ কায়কাউস। কিন্তু সরকারের সঙ্গে তার সম্পর্কের এখন শেষ নেই। চুক্তিভিত্তিক প্রধান সচিবের মেয়াদ শেষ করে বিশ্বব্যাংকে বাংলাদেশের পক্ষে বিকল্প নির্বাহী পরিচালকের দায়িত্ব পালন করতে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে। ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে বাংলাদেশ ছাড়তে পারে। আমলাতন্ত্রে মুখ্য সচিবের পদটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
সোমবার মন্ত্রিসভার নিয়মিত সাপ্তাহিক বৈঠক হয়। বৈঠকের নির্ধারিত আলোচনা শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম মুখ্য সচিবের বিদায়ের বিষয়টি উত্থাপন করেন। বৈঠক সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুখ্য সচিবের বিভিন্ন কাজের প্রশংসা করেন। তার প্রতিক্রিয়ায়, মুখ্যমন্ত্রী করোনা সংকটের সময়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে মুখ্য সচিবসহ প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সাহসী পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেছেন। এ কারণেই বাংলাদেশ বিশাল সংকটের মধ্যেও ভালো করতে পেরেছে বলে মন্তব্য করেন সরকারপ্রধান।
বিদায় উপলক্ষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউকে কিছু বলার আহ্বান জানান। কিন্তু মুখ্যসচিব নিজে থেকে কিছু বলতে রাজি হচ্ছিলেন না। একপর্যায়ে আবার ফোন করা হলে মুখ্যসচিব বলেন, এই দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আমি আমার জীবনে অনেক বড় অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে অনেক কিছু শিখেছি। তার সঙ্গে কাজ করাটা সৌভাগ্যের ব্যাপার। সরকারি সিদ্ধান্ত গ্রহণ বা কোনো নির্দেশনা দেওয়ার ক্ষেত্রে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের বাইরে আমি কিছু করিনি। বক্তব্য রাখার এক পর্যায়ে মুখ্যসচিব আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন বলে সূত্র জানায়। এ সময় মন্ত্রিসভায় আবেগঘন পরিবেশ বিরাজ করে।
প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিবরা উপস্থিত ছিলেন। আহমদ কায়কাউস টানা প্রায় তিন বছর প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৯ থেকে এই পদে রয়েছেন। এর আগে তিনি বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ছিলেন। কায়কাউস, যিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হয়েছেন, তিনি তার স্নাতকোত্তর এবং পিএইচডি করতে গিয়েছিলেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ডিগ্রি। এছাড়াও তিনি সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থায় কর্মরত ছিলেন।
প্রশাসনের শীর্ষ দুটি পদ অর্থাৎ মন্ত্রিপরিষদ সচিব এবং মুখ্য সচিব উভয়েই চুক্তিভিত্তিক। আগামী মাসে উভয় কর্মকর্তার চুক্তির মেয়াদ শেষ হচ্ছে। তবে এ দুটি পদে কাউকে নিয়োগ দিয়ে কোনো বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়নি। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, শিগগিরই এ দুটি পদের বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।