প্যারালাইজড বাবাকে রাস্তায় ফেলে গেলেন, দুদিন পর মারা যান
রাজধানীর আজিমপুর কবরস্থানের পাশ থেকে আব্দুর রশিদ খান (৮০) নামে এক বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তার গ্রামের বাড়ি বরিশাল জেলায়। রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে সন্তানদের কাছে থাকতেন তিনি। স্বজনদের ধারণা, তার ছোট ছেলে বৃহস্পতিবার তাকে আজিমপুরে নামিয়ে দেন লিটন। শনিবার বিকেলে সড়কে তার মৃত্যু হয়।
আব্দুর রশিদের বড় ছেলে মো. স্বপন জানান, তার বাবা প্যারালাইজড রোগী ছিলেন। তিনি হাঁটতে পারতেন না। সবসময় বিছানায় থাকতে হতো। তার বাবা কামরাঙ্গীরচরের বড়গ্রামে বড় বোন বিউটি আক্তারের বাড়িতে থাকতেন। বুধবার বাড়ি বদল করেন বিউটি। নতুন বাড়ির গোছগাছ করার জন্য বৃহস্পতিবার তিনি তার বাবাকে ছোট ভাই লিটনের নূরবাগের বাসায় পাঠান। দুদিন পর আজিমপুর কবরস্থানের কাছে বাবার লাশ পাওয়া যায়।
স্বপন জানান, লিটন তার বাবাকে ফেলে গেছেন, নাকি তার বাবা একাই চলে গেছেন তা আমি জানি না । কিন্তু মনে হচ্ছে ছোট ভাই লিটন ফেলে চলে গেছেন।
এ বিষয়ে জানাতে লিটনের মোবাইল ফোনে একাধিক কল করা হলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন পাওয়া যায়।
বিউটিকে ফোন করলে তার মেয়ে নাইমা আক্তার ফোন রিসিভ করে বলেন, নানা আমাদের বাসায় থাকতেন। বাসা বদল করলাম। নতুন বাড়িতে জিনিসপত্র গোছাতে সময় লাগবে। তাই নানাকে বৃহস্পতিবার ছোট মামার (লিটন) সঙ্গে তার বাড়িতে পাঠানো হয়েছে। তারপর শনিবার শুনলাম নানা মারা গেছেন।
স্বজনরা জানান, আবদুর রশিদের দুই স্ত্রী রয়েছে। দুই ঘরে চার সন্তান। তাদের মধ্যে বিউটি ও লিটন প্রথম ঘরের সন্তান। আর স্বপন ও সেলিনা দ্বিতীয় পক্ষ। লিটন চকবাজারের একটি বেসরকারি ব্যাংকে পিয়নের চাকরি করেন। স্বপন কামরাঙ্গীরচরের একটি ফ্যান কারখানার কর্মচারী।
লালবাগ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) হুজাইফা হোসেন বলেন, শনিবার বিকেলে আজিমপুর কবরস্থানের পাশে এক বৃদ্ধের লাশ পড়ে আছে বলে খবর পাওয়া যায়। পরে অজ্ঞাত পরিচয় হিসেবে বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। রাতে আঙুলের ছাপ দেখে তার পরিচয় শনাক্ত করা হয়। পরে তার বড় ছেলে স্বপন ও নাতি রাব্বি লাশ নেন। তিনি বলেন, মরদেহ নেওয়ার সময় লিটন মর্গে যাননি। শনিবার রাতেই রশিদের মরদেহ আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হয়।