• বাংলা
  • English
  • বিবিধ

    পুলিশ বলছে রহস্যমযয়ী, ডাকাতদের কাছে বোন

    নামটা ইতি। নিজে করে না ডাকাতি। তার দুই ভাইয়ের পাকা হাত! সেই রসায়নে ডাকাত ছায়া দেয়, প্রশ্রয় দেয়। সব সময় ছুটছে আদালতপাড়ায়। রাজধানীর ডেমরার কোণায় বাড়ি। পুলিশের কথায়, ইতি একজন রহস্যময়ী নারী। ডাকাত সদস্যরা ‘ডাকাত বোন’ নামে পরিচিত।

    সম্প্রতি রাজধানীর তুরাগ এলাকায় একটি ডাকাতি মামলার রহস্য উদঘাটন করতে গিয়ে ইতিকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এরপর ইতির অপরাধের অন্ধকার জগতের চিত্র গোয়েন্দাদের কাছে জানাজানি হয়।

    ডিবি কর্মকর্তারা বলছেন, ইতি আক্তার (২৭) সর্বদা লুকিয়ে থাকতেন, যদিও ডাকাতের ভয়ঙ্কর দল তাকে আচ্ছন্ন করে রেখেছে। তবে তুরাগ ছিনতাইয়ের মামলায় গ্রেফতার হওয়ার পর রিমান্ডে বেরিয়ে আসে । এ ছাড়া চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের একজন ওমর হোসেন ইতির নিজের ভাই। পুলিশের রেজিস্টারেও তাকে পেশাদার ডাকাত ও ছিনতাইকারী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। অপর পলাতক ভাই শামীম হোসেনও এই চক্রের সদস্য। ইতির বিয়েও হয়ে গেল। সে তার অপরাধের জন্য তার স্বামীর কাছ থেকে তালাক পেয়েছে। ইতিকে গ্রেপ্তারে অভিযানে নেতৃত্বদানকারী গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উত্তরা জোনাল টিমের এডিসি বদরুজ্জামান জিল্লু জানান, ওই নারী ডেমরা, সাভার, আশুলিয়া, গাজীপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় ডাকাতদের বড় সহযোগী ছিলেন। লুট করা মালামাল ওই চক্রের হাতেই রাখত ইতি। ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের পর পালাতে সদস্যদের আশ্রয়ও দেয় ডাকাতরা। দলের কোনো সদস্য গ্রেপ্তার হলে জেল থেকে বের হওয়ার জন্য তিনি আদালতপাড়ায় ছুটতেন।

    গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, যে দল ডাকাত টাঙ্গাইলের চিকিৎসক শফিকুল ইসলামকে ২০ জানুয়ারি উত্তরার আবদুল্লাহপুরে বাসের ভেতরে নির্যাতন করে সবকিছু ছিনিয়ে নিয়েছিল, তাদের অনেককেই চিনতেন। শুধু তাই নয়; ডাক্তারের কাছ থেকে লুট করা মোবাইল ফোনও উদ্ধার করা হয়েছে ইতির থেকে। ডাকাতির পর তার হাতে মোবাইল ফোন তুলে দেয় চক্রের সদস্যরা। চিকিৎসকের নম্বর ব্যবহার করে বাস থেকে ওই নারীর কাছে টাকা পাঠায় ডাকাতরা। সেই মোবাইল ফোনটিও জব্দ করা হয়েছে।

    গোয়েন্দা এক বিবৃতিতে বলেছেন যে ডাকাতিতে সহায়তা করা তার কাজ নয়।  ছিনতাই ও মাদক ব্যবসার বিভিন্ন অভিযোগে জেলে গেলে সে মাঝেমধ্যেই তার দুই ভাইকে মুক্ত করার চেষ্টা করত। এভাবে অন্য অপরাধীদের সঙ্গে তার পরিচয়। সেই পরিচয়ে তিনি মাঝেমধ্যে দুই ভাইকে ‘বন্ধু’ রাখার ব্যবস্থা করতেন। তারা তাদের জিনিসপত্র রেখেছিল। ‘মানবিক’ কারণে তাদের মুক্তি দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। এভাবে সে নিজের অজান্তেই এমন অপরাধে জড়িয়ে পড়ে।

    তদন্তকারী ডিবির এক কর্মকর্তা জানান, সাধারণ যাত্রীদের মনে আস্থা ও বিশ্বাস জাগানোর জন্য ইতি ও তার পরিচিত আক্তার সময় সময় রাতের বাসে উঠতেন যাতে যাত্রীরা বুঝতে না পারে বাসটি ছিল। ডাকাতদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে।

    গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উত্তরা বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার আছমা আরা জাহান জানান, গত ২০ জানুয়ারি আব্দুল্লাহপুরে এক চিকিৎসকের কাছ থেকে মালামাল ছিনতাইয়ের সঙ্গে ইতির গ্রুপের সাগর ও জাকির সরাসরি জড়িত ছিল।

    মন্তব্য করুন