পিপিআরসি ও বিআইজিডির গবেষণা।করোনায়, ৯৭% পিতা-মাতা তাদের সন্তানকে স্কুলে পাঠাতে চান
করোনাভাইরাস মহামারীর দ্বিতীয় তরঙ্গ সত্ত্বেও, দেশের প্রায় সকল প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বাবা-মা স্কুল আবার চালু হওয়ার পরে তাদের বাচ্চাদের স্কুলে পাঠাতে আগ্রহী। প্রাথমিকের ৯৭.৭০ শতাংশ এবং ৯৫.৫০ শতাংশ শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা এ জাতীয় মতামত দিয়েছেন।
গবেষণা সংস্থা পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিটিশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি) এবং বেসরকারী ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অফ গভর্নেন্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিজিআইডি) দ্বারা পরিচালিত একটি গবেষণা থেকে এই তথ্য পাওয়া গেছে।
সোমবার ভার্চুয়াল প্রেস কনফারেন্সের মাধ্যমে এই সংস্থা দুটি জরিপ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। ২০২০ এপ্রিল এবং মার্চ মাসে ৬,০০০ এরও বেশি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের সাথে কথা বলে এই সমীক্ষা করা হয়।
মহামারীর সময় মারাত্মক করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও তারা বলেছে যে শিশুদের স্কুলে পাঠানোর কারণ হ’ল স্কুল বন্ধ থাকলেও বাচ্চারা বাইরে যাওয়া বন্ধ করে না ।
দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ থাকার কারণে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা শিশুদের পড়াশোনার অপূরণীয় ক্ষতি ঘটাচ্ছে, যা তারা বাড়াতে চায় না। লোকসান কমাতে কিছু বাচ্চাকে কোচিং সেন্টারে পাঠাতে বাধ্য করা হচ্ছে। ফলস্বরূপ, নিয়মিত ব্যয়ের তুলনায় শিক্ষার ব্যয় ১১-১৩ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
অভিভাবকরা বলেছেন যে স্কুল দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় তাদের শিক্ষার প্রতি শিশুদের আগ্রহ হ্রাস পাচ্ছে। এবং মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিকের ‘অটো পাস’ হওয়ার কারণে তাদের সন্তানরা তাদের ভবিষ্যতের কর্মজীবনে যে কোনও সমস্যার মুখোমুখি হবে কিনা তা নিয়ে তারা খুব চিন্তিত।
এ সমীক্ষা প্রতিবেদন তুলে ধরেন পিপিআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান হোসেন জিল্লুর রহমান এবং বিজিআইডি নির্বাহী পরিচালক মো. ইমরান মতিন।
গবেষণার প্রতিবেদনের কথা তুলে ধরে হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, “সমীক্ষা প্রতিবেদনের মূল বার্তাটি হল স্কুল বন্ধ থাকা সত্ত্বেও প্রাথমিকের ৫১ শতাংশ এবং মাধ্যমিকের ৬১ শতাংশ শিক্ষার্থী কোচিং সেন্টারের মাধ্যমে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন।
সমীক্ষায় আরও দেখা গেছে যে ৫৯ শতাংশ অত্যন্ত দরিদ্র পিতা-মাতা তাদের সন্তানদের শিক্ষার ক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকলে ভবিষ্যতে সমস্যার মুখোমুখি হতে হবে এই আশঙ্কায় তাদের কোচিং সেন্টারে পাঠিয়েছেন। কওমী মাদ্রাসা স্কুল খোলা থাকায় শিক্ষার্থীদের সংখ্যা ৪ শতাংশ বেড়েছে।
এই পরিস্থিতিতে পিপিআরসি এবং বিআইজিডি সরকারকে সুপারিশ করেছে আগামী বাজেটে প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের প্রতিমাসে ৫০০ টাকা হারে মোট ২,৯৬০ কোটি টাকা নগদ সহায়তা প্রদানের জন্য।