• বাংলা
  • English
  • জাতীয়

    পাগলা মসজিদের দানবাক্স খোলা হয়েছে, এবার সাড়ে ১৬ বস্তা টাকা

    কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্স তিন মাস ২০ দিন পর খোলা হয়েছে। শনিবার সকাল ৮টায় জেলা প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে মসজিদের আটটি দানবাক্স খোলা হয়।

    এসব বাক্স থেকে টাকা উত্তোলনের কাজ শেষে মোট সাড়ে ১৬ বস্তা টাকা পাওয়া গেছে। এছাড়াও পাওয়া গেছে বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালঙ্কার।

    এর আগে সর্বশেষ দানবাক্স খোলা হয় ১২ মার্চ। ওই সময় পাওয়া যায় সর্বোচ্চ ৩ কোটি ৮ লাখ ৫৩ হাজার ২৯৫ টাকা। এরপর দানবাক্স খুলে ১৫ বস্তা টাকা পাওয়া যায়। এবার সাড়ে ষোল বস্তা হওয়ায় গতবারের চেয়ে টাকার পরিমাণ বেশি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

    সাধারণত তিন মাস পর পাগলা মসজিদের কফিন খোলা হয়। কিন্তু বিশ্বব্যাপী মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে সিন্দুক খোলার সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে। এবার ৩ মাস ২০ দিন পর বাক্সটি খোলা হলো।

    সংশ্লিষ্টরা জানান, শনিবার দানবাক্স থেকে টাকা বের করে প্রথমে বস্তায় ভর্তি করা হয়। এরপর শুরু হয় দিনভর টাকা গণনার কাজ। বর্তমানে চলছে টাকা গণনার কাজ।

    কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফার তত্ত্বাবধানে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. উবায়দুর রহমান সাহেল ও মাহবুব হাসান, পাগলা মসজিদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. শওকত উদ্দিন ভূঁইয়া, রূপালী ব্যাংকের এজিএম মো. রফিকুল ইসলামসহ অন্যরা টাকা গণনার কাজ তদারকি করছেন। এছাড়া পাগলা মসজিদের সদস্যবৃন্দ, প্রবীণ নাগরিক ও জেলা প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

    প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ মসজিদের দান বাক্সে নগদ টাকার পাশাপাশি স্বর্ণের অলংকার দান করেন। এছাড়া মসজিদে গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগিসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র দান করা হয়। কথিত আছে, খাস খাতিরে এই মসজিদে দান করলে মনের আশা পূরণ হয়। তাই দূর-দূরান্ত থেকে অসংখ্য মানুষ এখানে দান করেন।

    ২০২০ সালে করোনভাইরাস সংক্রমণের প্রাদুর্ভাবের পরে, লকডাউনের সময় উপাসকদের মসজিদে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল এবং মহিলাদের প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়েছিল। এরপরও মানুষ মসজিদে দান করতে থাকে।

    পাগলা মসজিদ কিশোরগঞ্জ শহরের অন্যতম ঐতিহাসিক স্থাপনা। শহরের পশ্চিমে হারুয়া এলাকায় নরসুন্দা নদীর তীরে মাত্র ১০ শতাংশ জমিতে মসজিদটি নির্মিত হয়েছে। কালের বিবর্তনে এই মসজিদের পরিধির পাশাপাশি এর খ্যাতি ও ঐতিহাসিক মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। মসজিদকে কেন্দ্র করে এখানে গড়ে উঠেছে অত্যাধুনিক ধর্মীয় কমপ্লেক্স। মূল মসজিদ ভবন সম্প্রসারণ করা হয়েছে। দেশের অন্যতম লাভজনক ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃত মসজিদটির নাম পরিবর্তন করে পাগলা মসজিদ ইসলামিক কমপ্লেক্স রাখা হয়েছে। এই মসজিদের আয়ে কমপ্লেক্সের বিশাল ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে মসজিদকে ঘিরে ব্যাপক উন্নয়ন কাজ চলছে। এছাড়া মসজিদের আয় বিভিন্ন সেবা খাতে সহায়তার জন্য ব্যবহৃত হয়। বর্তমানে পাগলা মসজিদকে অন্যতম আধুনিক ইসলামী স্থাপত্য হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে কাজ চলছে।

    মন্তব্য করুন