• বাংলা
  • English
  • জাতীয়

    পাঁচ সিটিতে আ’লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী ৪১ জন

    দেশের পাঁচ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ব্যাপক প্রার্থী রয়েছে। দলীয় মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন ৪১ নেতা। এর মধ্যে সবচেয়ে কম প্রার্থী রাজশাহীতে এবং সবচেয়ে বেশি গাজীপুরে। ফলে বিএনপিকে বাদ দিয়ে অনুষ্ঠিতব্য এ নির্বাচনে সরকারি দলের টিকিট পেতে আওয়ামী লীগের নেতাদের মধ্যে তুমুল লড়াই হবে। এর মধ্যে একজন বাদে সবগুলোতেই মেয়র আওয়ামী লীগ নেতা। দলের অন্য নেতারা তাদের চ্যালেঞ্জ করে মনোনয়নপত্র কিনেছেন।

    গতকাল বুধবার ছিল আওয়ামী লীগের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। বিএনপি নির্বাচনে না এলেও জাতীয় পার্টি ও ইসলামী আন্দোলন অংশগ্রহণ করবে। তবে সরকারি দল কীভাবে দলের অন্য মনোনয়ন প্রত্যাশীদের ঐক্যবদ্ধভাবে নৌকার প্রার্থীর পক্ষে রাখবে সেটাই বড় প্রশ্ন।

    আওয়ামী লীগের মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিনে গাজীপুরে ১৭ জন, রাজশাহীতে ৩ জন, সিলেটে ১০ জন, খুলনায় ৪ জন ও বরিশালে ৭ জন প্রার্থী রয়েছেন। নির্বাচন কমিশনে মনোনয়নপত্র জমা দিতে এখনো অনেক সময় বাকি। আগামী ১৫ এপ্রিল শনিবার মেয়র পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী চূড়ান্ত করা হবে। এ জন্য ওই দিন সকাল ১১টায় গণভবনে দলের স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ডের সভা ডাকা হয়েছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে বৈঠকে মনোনয়ন বোর্ডের সদস্যরা অংশ নেবেন। নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, আগামী ২৫ মে গাজীপুর সিটি করপোরেশন, ১২ জুন বরিশাল ও খুলনা সিটি করপোরেশন এবং ২১ জুন সিলেট ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

    নির্বাচনে গাজীপুর আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্দ্বী এখন আওয়ামী লীগ। এ পদে প্রার্থী হতে দলীয় মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বহিষ্কৃত মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লা খান, সাবেক সহসভাপতি আসাদুর রহমান মিরন, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান প্রমুখ।

    এখানে দলীয় মনোনয়ন পাওয়া নিয়ে রয়েছে নানা মত। কেউ কেউ বলছেন, সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে সাধারণ ক্ষমা দিয়ে আওয়ামী লীগে আনা হয়েছে। তাই তিনি এবারও দলীয় মনোনয়ন পাচ্ছেন। আবার কেউ বলছেন, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সিনিয়র নেতা আজমত উল্লা খানকে দল মনোনয়ন দেবে। এই দুই প্রার্থীর সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়ে কেউ কেউ বলছেন, নির্বাচনে চমক থাকতে পারে। সেক্ষেত্রে নতুন কাউকে মনোনয়ন দেওয়া যেতে পারে। নতুন প্রার্থীর দিক থেকে বারবার উঠে আসছে মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক কামরুল আহসান সরকার রাসেলের নাম। নগরীর ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরণের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না অনেকেই। তাদের কর্মী-সমর্থকরাও বলছেন মহানগর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম ও কাউন্সিলর মামুন মণ্ডল।

    আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচনে প্রার্থী বাছাইয়ের ওপর নির্ভর করছে নৌকার প্রার্থীর জয়-পরাজয়। আওয়ামী লীগের জনপ্রিয় কোনো নেতা নৌকা না পেলে বিদ্রোহী হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলে নৌকার পরাজয়ের আশঙ্কাও করছেন তারা। সিলেটে আলোচনায় এসেছেন ব্যবসায়ী ও বাফুফের নির্বাহী সদস্য মাহি উদ্দিন আহমদ সেলিম। তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী হলেও এর আগে কোনোভাবেই জানাননি। আওয়ামী লীগের তালিকা দীর্ঘ হলেও প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। তিন মাস আগে যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফিরে শহরে প্রচারণা শুরু করেন তিনি। তবে তিনি চ্যালেঞ্জ ও অনেক চাপের মধ্যে রয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে সিলেটের মাঠে থাকা প্রার্থীরা বাঁকা চোখে তাকিয়ে আছেন। আলোচনায় রয়েছেন নগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আসাদ উদ্দিন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেনসহ দুজন।

    আওয়ামী লীগে মেয়র পদে প্রার্থীর সংখ্যা দীর্ঘ হলেও বিএনপিতে তা অনেক দীর্ঘ। এসব প্রার্থীর মধ্যে দলের কেন্দ্রীয় নেতা বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর নাম বেশি আলোচিত হচ্ছে। দলের একাধিক নেতা জানান, দল নির্বাচনে অংশ না নিলেও নাগরিক কমিটির ব্যানারে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন আরিফুল হক। এ জন্য তিনি যুক্তরাজ্যে গিয়ে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারিক রহমানের সঙ্গে দেখা করেন। মঙ্গলবার যুক্তরাজ্য যুবদলের আলোচনা ও ইফতার পার্টিতে অংশ নিয়ে আরিফ বলেন, দল নির্বাচনে যাবে না। তাই আমার নির্বাচনের প্রশ্নই ওঠে না। ২০১৮ সালে মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের একক প্রভাবশালী নেতা। পারিবারিক সূত্রে রাজনীতিতে আসার পর তিনি সিটি মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হন।

    মন্তব্য করুন