পাঁচ লাখ শিক্ষক-কর্মচারীকে অবসরকালীন সুবিধা দেওয়ার নির্দেশ
দেশের এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাঁচ লাখ অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক-কর্মচারীকে ছয় মাসের মধ্যে অবসর সুবিধা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাঁচ লাখ শিক্ষক-কর্মচারীর বেতন ১০ শতাংশ কর্তনের বিপরীতে নির্ধারিত সময়ে আর্থিক ও অবসর সুবিধা প্রদানের এক রিটের রায়ে হাইকোর্ট এ আদেশ দেন।
এর আগে গত সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) এ সংক্রান্ত রুলের শুনানি শেষ হয়। হাইকোর্টের বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ পরদিন মঙ্গলবার এ রায়ের দিন ধার্য করেন।
আদালতে রিটকারী শিক্ষক-কর্মচারীদের পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করছেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ সিদ্দিক উল্লাহ মিয়া। তিনি বলেন, বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক ও কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্ট প্রবিধান-১৯৯৯-এর প্রবিধান-৬ এবং বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও কর্মচারী অবসর সুবিধা প্রবিধান-২০০৫-এর প্রবিধান-৮ অনুযায়ী দুই শতাংশ ও চার শতাংশ বাদ দেওয়ার বিধান ছিল। শিক্ষক ও কর্মচারীদের মূল বেতন। যার বিপরীতে শিক্ষক ট্রাস্ট ফান্ড থেকে শিক্ষক-কর্মচারীদের কিছু আর্থিক সুবিধা দেওয়া হতো। কিন্তু বিগত ১৯ এপ্রিল, ২০১৭- এই প্রবিধানগুলিকে চার শতাংশ ও ছয় শতাংশে সংশোধন করে দুইটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছিল ।এতে অতিরিক্ত অর্থ কাটার বিপরীতে তাদের কোন অতিরিক্ত আর্থিক সুবিধা দেওয়ার বিধান করা হয়নি।
এরপর ১৫ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে, মাউশি একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এপ্রিল ২০১৯ মাসের বেতনের যথাক্রমে চার শতাংশ এবং ছয় শতাংশ অবসর সুবিধা বোর্ড এবং কল্যাণ ট্রাস্টে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেয়। ফলে আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কায় বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রায় পাঁচ লাখ শিক্ষক-কর্মচারী ক্ষুব্ধ হয়ে ২০১৯ সালের ১৫ এপ্রিল মাউশির জারি করা প্রজ্ঞাপনকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন।
রিটের প্রাথমিক শুনানি শেষে ২০১৯ সালের ৮ ডিসেম্বর বিচারপতি এম এনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো: মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুল জারি করেন। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের জারি করা প্রজ্ঞাপন কেন অবৈধ হবে না তা জানতে চাওয়া হয়েছে এবং চার সপ্তাহের মধ্যে বিবাদীদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
পরবর্তীতে নতুন প্রবিধান জারি করে শিক্ষক-কর্মচারীদের অবসরের ছয় মাসের মধ্যে ছয় শতাংশ ও চার শতাংশ করে মোট ১০ শতাংশের বিপরীতে সম্পূরক বিধিমালার আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারপতি জাফর আহমেদ ও বিচারপতি মো: আখতারুজ্জামান হাইকোর্ট বেঞ্চ রুল জারি করে চার সপ্তাহের মধ্যে বিবাদীদের জবাব দিতে নির্দেশ দেন। ওই রুলের শুনানি শেষে মহামান্য আদালত রায়ের জন্য ২২ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেন।