জাতীয়

পরিস্হিতির সুযোগে  বাজার চড়া

সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগে টানা যাচ্ছে না লাগাম। ফলে ক্রেতাদের মুখে হাসি ফিরছে না। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে পণ্য সরবরাহ, শুল্ক ছাড়, এলসি (ডিবেঞ্চার) খোলার ক্ষেত্রে জিরো মার্জিন সুবিধা, নতুন মজুদ নীতি, বিভিন্ন সংস্থার নজরদারি বাড়ানোসহ সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের বাজারে কোনো প্রভাব নেই। . উল্টো যেকোনো পণ্যের দাম প্রতিদিনই বাড়ছে। নিম্ন ও নিম্ন-মধ্য আয়ের মানুষ কম দামে পণ্য কিনতে সারাদিন টিসিবির ট্রাক, ওএমএস ও ন্যায্যমূল্যে ভিড় করতে বাধ্য হচ্ছে। অপর্যাপ্ত সরবরাহের কারণে অনেকেই খালি হাতে বাড়ি ফিরছেন।

করোনা-পরবর্তী সময়ে চাহিদা বৃদ্ধি এবং ইউক্রেনের সাম্প্রতিক যুদ্ধের কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে কিছু পণ্যের দাম কিছুটা বেড়েছে বলে মনে করছেন বাজার বিশ্লেষকরা। তবে দেশের কিছু অসাধু ব্যবসায়ী এ অবস্থার পুরো সুযোগ নিচ্ছে, যার প্রভাব পড়ছে বাজারে। দেশে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির পেছনে বাজার ও বাজার বহির্ভূত কারণ রয়েছে। কাঁচামাল ও পরিবহন খরচ বৃদ্ধিসহ নানা কারণ দেখিয়ে আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের দাম বাড়ায় ব্যবসায়ীরা। অন্যদিকে চাঁদাবাজি, সিন্ডিকেট, কৃত্রিম সংকট, যানজট—এসব অজুহাত ব্যবহার করে বাজার সচল রাখতে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী। যৌক্তিক কারণে দাম যতটা বাড়ার কথা, তার চেয়ে বেশি বাড়াচ্ছে। পরিস্থিতির জন্য সরকারের বাজার নিয়ন্ত্রণের অভাবকে দায়ী করছেন বিশ্লেষকরা।

তারা বলছেন, বাজারে সুশাসন নেই। সরকারি নিয়ন্ত্রণ নেই। এ কারণে রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন উদ্যোগের সুফল পাচ্ছে না মানুষ। তারা বাজারের স্বাভাবিকতা ফিরিয়ে আনতে সরকারের নজরদারি জোরদার করার পরামর্শ দেন। এছাড়া বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকার বিভিন্ন সময়ে যেসব উদ্যোগ নিয়েছে সেগুলো যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। বাজারে ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে দোকানে পণ্যের মূল্য তালিকাভুক্ত করা, গুদামে মজুদের পরিমাণ নির্ধারণ এবং কিছু পণ্যের দাম বাড়ানোর আগে অনুমোদন নেওয়ার বিধান রয়েছে। এখন সেভাবে এসব নিয়ম বাস্তবায়ন হচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে।

সরকারি বিভিন্ন দপ্তরও ব্যবসায়ীদের অবৈধ মজুদ ও বাজারে চাঁদাবাজির কথা স্বীকার করছে। সম্প্রতি, ভোক্তা সুরক্ষা অধিদপ্তর কিছু জেলা প্রশাসককে চিঠি দিয়ে তাদের প্রয়োজনীয় পণ্যের ট্রাকে চাঁদাবাজি বন্ধে পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ করেছে। অন্যদিকে হোর্ডিং বন্ধে তদারকি বাড়ানোর অনুরোধ জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

এদিকে, সরকার অপরিশোধিত চিনি আমদানিতে নিয়ন্ত্রক শুল্ক ১০ শতাংশ কমিয়েছে। তবে বাজারে চিনির দাম কমেনি। আবার শূন্য মার্জিনে এলসি খোলার সুবিধাও ঠিকমতো পাওয়া যাচ্ছে না।

মন্তব্য করুন