পরিলকের ভাগ্নে পরিয়ে পলিথিন সিন্ডিকেট
বরিশালের বাজার রোডে ‘নূর মদিনা’ নামের ব্যবসার মালিক ব্যবসায়ী রনি গোমস্তা। নিজেকে বরিশাল পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক আব্দুল হালিমের ভাগ্নে পরিচয় দিয়ে পলিথিন সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করছেন তিনি। এই পলিথিন সিন্ডিকেটের অন্তত ১৫ জন ব্যবসায়ী রয়েছে। তাদের ছায়ায় বরিশালের হাটবাজার থেকে বিপণিবিতান- সর্বত্রই চলছে নিষিদ্ধ পলিথিনের যথেচ্ছ ব্যবহার।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বরিশাল বিভাগে পলিথিনের সবচেয়ে বেশি মজুদ রয়েছে পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে। দুর্গম এলাকা হওয়ায় পলিথিন ব্যবসায়ীরা এই স্থানটিকে স্টোরেজের জন্য নিরাপদ মনে করেন। প্রতি কয়েকদিনে বড় বড় যানবাহনে ১৮ থেকে ২০ টন পলিথিনের চালান মির্জাগঞ্জে আসে। সেখান থেকে পলিথিন বরিশাল, ঝালকাঠি, বরগুনাসহ বিভিন্ন উপজেলায় সরবরাহ করা হয়।
বরিশাল শহরের প্রধান পলিথিনের ব্যবসা মোকাম বাজার রোড। মির্জাগঞ্জ থেকেও পলিথিন আসে। বাজার রোডের ব্যবসায়ীদের ভাড়া করা বিক্রেতারা সাইকেলে করে শহরের বাজার ও দোকানে পলিথিন বিক্রি করে। রনি বাজার রোডের পলিথিনের প্রধান ব্যবসায়ী হলেও নিয়ামত, নুরুজ্জামান, শহিদ ও সাইফুলসহ আরও সাত-আটজন ব্যবসায়ী রয়েছেন।
নগরীর পরিবেশ অধিদপ্তরের অফিসেও রনির অবাধ প্রবেশাধিকার রয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। পরিচালক আব্দুল হালিম ও রনির গ্রামের বাড়ি বরিশালের গৌরনদীর সারিখালে। সেই অর্থে তাদের মধ্যে গভীর সম্পর্ক রয়েছে।
বরিশাল পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক আব্দুল হালিম বলেন, “আমার কার্যালয়ে সাত থেকে আটজন নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যবসায়ীর তালিকা রয়েছে। তাদের একজনের নাম রনি। তিনিও এসব ব্যবসায়ীকে খুঁজছেন। পরিচালকের দাবি, রনি তার আত্মীয় নন। হয়তো তার আত্মীয়স্বজন তাকে ব্যবসা করার জন্য পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে।
পলিথিন ব্যবসায়ীদের একজন মো. নুরুজ্জামান বলেন, ‘পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক আবদুল হালিমকে মামা বলে ডাকতেন রনি। পরিচালকের ভাগ্নে হিসেবে বরিশালের পলিথিন ব্যবসার পুরো নিয়ন্ত্রণ এখন রনি।
নুরুজ্জামান অবশ্য দাবি করেন যে তিনি ২০১৬ সালে পলিথিনের ব্যবসা ছেড়ে দেন। কয়েকদিন আগে রনি তাকে মাসে দুই লাখ টাকা দিলে আবার ব্যবসা করার প্রস্তাব দেন। নুরুজ্জামান রনির প্রস্তাবে রাজি হননি। পলিথিনের বড় চালান আসার বিষয়টি পরিবেশ অধিদপ্তরকে জানানো হলেও অজ্ঞাত কারণে অভিযান চালানো হয়নি বলে অভিযোগ করেন তিনি।
‘নূর মদিনা’ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক রনিকে একাধিকবার মোবাইল ফোনে কল করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।
সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন বরিশাল জেলার সাধারণ সম্পাদক কাজী এনায়েত হোসেন শিবলু বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তর নগরীতে পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর পলিথিন নিয়ন্ত্রণে দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। যে কারণে পলিথিনে সয়লাব হয়ে উঠেছে হাটবাজার। ‘
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতির (বেলা) বরিশালের সমন্বয়ক লিঙ্কন বায়েন বলেন, “পলিথিন একটি মারাত্মক পরিবেশবিরোধী পণ্য। বরিশালে অবাধে ব্যবহার করা হচ্ছে নিষিদ্ধ এই পণ্যটি।