পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মানবাধিকার সেল।’অপপ্রচার’রোধই হবে প্রধান কাজ
র্যাবের সাবেক ও বর্তমান কয়েকজন কর্মকর্তার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি সরকার গুরুত্বের সঙ্গে নিচ্ছে। দ্রুত নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে নানা কূটনৈতিক তৎপরতা চলছে। বিশেষ করে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রচারণার মুখে সরকারি কর্মকাণ্ডের ইতিবাচক দিকগুলো তুলে ধরার ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে।
এরই অংশ হিসেবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জাতিসংঘের পরমাণু বিভাগের পৃষ্ঠপোষকতায় একটি মানবাধিকার সেল গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মানবাধিকার সেলের কাজ হবে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে অপপ্রচার রোধ করা। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র আরও জানায়, এরই মধ্যে বেশ কয়েকজন মার্কিন সিনেটর ও কংগ্রেসম্যানের চিঠিতে সরকারের কর্মকাণ্ডের ইতিবাচক দিক এবং মানবাধিকার রক্ষায় এবং বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরা হয়েছে। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্রেটিক পার্টির কংগ্রেসম্যান গ্রেগরি ডব্লিউ মিক্স এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের চমৎকার সম্পর্ক রয়েছে। এই সম্পর্ক চলতেই থাকবে। মানবাধিকার বিষয়গুলো খতিয়ে দেখতে এ বছর তার বাংলাদেশ সফরের কথা রয়েছে।
মানবাধিকার সেল যে ভূমিকা পালন করবে: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, পররাষ্ট্র সচিবের বরাত দিয়ে কয়েকটি সংবাদমাধ্যম গত সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মানবাধিকার সেল গঠনের বিষয়ে ভুল তথ্য পায়। তার বক্তব্য গণমাধ্যমে ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। আসলে, জাতিসংঘের পৃষ্ঠপোষকতায় নয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জাতিসংঘের পরমাণু বিভাগের অধীনে একটি মানবাধিকার সেল গঠন করা হচ্ছে। এই সেলটি সম্পূর্ণভাবে বাংলাদেশ সরকারের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হবে। সেলের নেতৃত্বে থাকবেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা।
সূত্র জানায়, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে নেতিবাচক তথ্য প্রচার ও উপস্থাপনের বিরুদ্ধে সরকারের অবস্থান ও ইতিবাচক কার্যক্রম তুলে ধরাই হবে এই সেলের মূল কাজ। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে একটি অংশ দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা এবং মানবাধিকারকে গুরুত্ব দেয় এমন প্রভাবশালী দেশে নেতিবাচক তথ্য ছড়াচ্ছে। এ কারণে সম্প্রতি সরকারি পর্যায়ে একাধিক বৈঠকের মাধ্যমে এই মানবাধিকার সেল গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেলটি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা, জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্য সহ বিভিন্ন দেশের প্রাসঙ্গিক বিভাগের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে যোগাযোগ করবে।
সূত্রটি আরও জানায়, পশ্চিমা বিশ্বে মানবাধিকার সম্পর্কে সঠিক তথ্য উপস্থাপনের জন্য আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কোনো জনসংযোগ সংস্থা বা লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ করা হলে মানবাধিকার সেল সেই ফার্মকে তথ্য সরবরাহ এবং সার্বিক বিষয়ে যোগাযোগ করতে কাজ করবে।
মার্কিন কংগ্রেসম্যান গ্রেগরি ডব্লিউ মিক্স বলেছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের চমৎকার সম্পর্ক রয়েছে। এই সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্র কখনোই বাংলাদেশের ওপর কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে চায় না। কিছু র্যাব অফিসারের উপর নিষেধাজ্ঞা মানে সমগ্র বাংলাদেশে নিষেধাজ্ঞা নয়। মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।