পদত্যাগ করলেন কুয়েটের উপাচার্য ও উপ-উপাচার্য
শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগ করেছেন খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ মাছুদ ও উপ-উপাচার্য অধ্যাপক এসকে শরিফুল আলম। বুধবার রাতে তারা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পদত্যাগপত্র পাঠান।
বৃহস্পতিবার সকালে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এখন তাদের পদত্যাগপত্র গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান তিনি।
ওই কর্মকর্তা বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে সব পদক্ষেপ নেওয়ার পরও যখন সমস্যার সমাধান হয়নি, তখন মন্ত্রণালয় উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যকে বিষয়টি বিবেচনা করার অনুরোধ জানায়। এরপর তারা পদত্যাগপত্র জমা দেন।
তিনি আরও বলেন, নিয়ম অনুযায়ী পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ে পাঠানো হবে। তিনি পদত্যাগপত্র গ্রহণ করলে তা কার্যকর হবে।
এর আগে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক ঘটনার প্রেক্ষাপটে সৃষ্ট সংকট নিরসনে এবং দ্রুত শিক্ষা কার্যক্রম চালু করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও সহযোগী উপাচার্যকে অব্যাহতি দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। এ দুটি পদে নতুন নিয়োগ দিতে অবিলম্বে একটি সার্চ কমিটি গঠন করা হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত কার্যক্রম অব্যাহত রাখার স্বার্থে অন্তর্বর্তীকালীন সময়ে একজন সিনিয়র অধ্যাপককে সাময়িকভাবে উপাচার্যের দায়িত্ব দেওয়া হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে দ্বন্দ্বের জেরে ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে পঞ্চাশের বেশি লোক আহত হয়। এই ঘটনার পর ২৫ ফেব্রুয়ারি সিন্ডিকেট সভায় অনির্দিষ্টকালের জন্য একাডেমিক কার্যক্রম ও হল বন্ধ ঘোষণা করা হয়। কর্তৃপক্ষের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ছাত্রছাত্রীদের প্রবেশ নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ৩ এপ্রিল ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
গত ১৪ এপ্রিল রাতে অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০১তম জরুরি সিন্ডিকেট সভায় ১৮ ও ১৯ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে সহিংসতার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ৩৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করে। এসব ঘটনায় কুয়েটের উপাচার্যের অপসারণের দাবিতে গত ২২ এপ্রিল বিকেল থেকে আমরণ অনশনে রয়েছেন ২৯ শিক্ষার্থী।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও উপাচার্যের পদত্যাগের আল্টিমেটাম দিয়েছেন। অবশেষে ৫৮ ঘণ্টা পর দাবি মানা হলে অনশন ভেঙেছে কুয়েটের শিক্ষার্থীরা।
এদিকে বুধবার বিকেলে সিন্ডিকেট সভায় ৩৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার প্রত্যাহার করা হয়। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো খোলার সিদ্ধান্ত হয়।