• বাংলা
  • English
  • জাতীয়

    পটুয়াখালী আরেকটি স্বপ্ন পূরণের পথে। পায়রা সেতুর নির্মাণ কাজ পুরোদমে চলছে।

    ব্রিজটির দৈর্ঘ্য ১৪৭০ মিটার এবং প্রস্থ ১৯.৭৬ মিটার। যানবাহন চলবে আগামী জুনে। পদ্মা সেতু এখন আর স্বপ্ন নয়, বাস্তব। সমস্ত স্প্যান বসানো শেষ হয়েছে। এখন চলছে স্ল্যাব রাখার কাজ। লোকেরা ২০২২ সালে স্ল্যাব সহ অন্যান্য কাজ শেষ করে পদ্মা জুড়ে ভ্রমণ করতে সক্ষম হবে। দক্ষিণের মানুষের এই স্বপ্ন বাস্তবায়নের পাশাপাশি তাদের আরও একটি স্বপ্ন খুব শীঘ্রই পূরণ হতে চলেছে। পটুয়াখালী সেতুর নির্মাণ কাজ দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলছে। করোনাভাইরাসের কারণে বেশ কয়েক মাস ধরে নির্মাণ কাজ ধীর হয়ে যায়। তবে কুয়াকাটা-ঢাকা মহাসড়কের পটুয়াখালীর লেবুখালীর পায়রা সেতু নির্মাণের কাজ এখন পুরোদমে চলছে। যদি সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে, তবে প্রকল্পের স্টেকহোল্ডাররা দাবি করছেন যে এই ব্রিজটি ২০২১ সালের জুনে ট্র্যাফিকের জন্য উপযুক্ত হবে। বহুলোকিত পদ্মা সেতু এবং পায়রা সেতুটি সমাপ্ত হওয়ার সাথে সাথে পটুয়াখালীর সাথে ঢাকার সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপন হবে এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর, পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং সাগরকন্যা কুয়াকাটার সহ পুরো দক্ষিণ উপকূলের সাথে সড়ক যোগাযোগের জন্য নতুন দিগন্ত উন্মুক্ত করা হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি ছিল কুয়াকাটা-ঢাকা মহাসড়কের পটুয়াখালী জেলার ডুমকি উপজেলার লেবুখালীতে পায়রা নদীর উপর একটি “পায়রা ব্রিজ” নির্মাণের। সে লক্ষ্যে ২০১১ সালে কুয়েত সরকারের সাথে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ২০১৩ সালের ১৯ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেতুর ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন।

    আরব অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য কুয়েত তহবিল, আন্তর্জাতিক উন্নয়নের জন্য ওপেক তহবিল এবং বাংলাদেশ সরকারের যৌথ বিনিয়োগে পাইড়া নদীর উপর সেতুটি নির্মিত হচ্ছে ১.১৭০কোটি টাকা ব্যয়ে। প্রকল্প পরিচালক মো: ছাত্র ত্রিনা সরকার বলেন যেহেতু সৈকত কুয়াকাটা, পাইরা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, দক্ষিণ জেলার পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ; তাই সেতুটি চালু হলে দক্ষিণে ভ্রমণ, বাণিজ্য ও শিক্ষার ক্ষেত্রে বিপ্লব দেখা দেবে। রাস্তা যোগাযোগ সহজতর হবে। বাসচালক আবদুস সালাম ও সাদেক হোসেন জানান, ব্রিজটি চালু হলে যাত্রা অনেক সহজ হবে। যাত্রী ও চালককে ঘন্টার পর ঘন্টা ফেরিতে বসে পড়তে হবে না। ফেরিতে উঠার কোনও ঝুঁকি থাকবে না। ব্রিজটি শেষ হয়ে গেলে গন্তব্যটি সময়মতো পৌঁছানো যায়। পটুয়াখালী বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন মৃধা বলেছেন, এই সেতুটি কেবলমাত্র দক্ষিণাঞ্চলের জেলা নয়, এই অঞ্চলের মানুষের অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবস্থারও উন্নতি করবে। কর্মসংস্থান বাড়বে। বাস পরিষেবা চালু করা হবে। দক্ষিণ শহরটি দেশের অন্যতম অর্থনৈতিক অঞ্চল হবে। পটুয়াখালী চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পায়রা সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। পায়রা সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হলে পটুয়াখালীসহ পুরো দক্ষিণাঞ্চলের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে। এটি পটুয়াখালী সহ পুরো দক্ষিণাঞ্চলকে জাতীয় অর্থনীতিতে বিশেষ ভূমিকা নিতে সক্ষম করবে। পায়রা সেতু নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক মোহাম্মদ আবদুল হালিম বলেন, পায়রা সেতুর নির্মাণ কাজ দ্রুতগতিতে চলছে। তবে প্রযুক্তিগত জটিলতা এবং করোনাভাইরাস কারণে কিছু সময়ের জন্য কাজ ব্যাহত হয়। তবে এখন কাজ পুরোদমে চলছে। প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ আবদুল হালিম বলেছেন, “আশা করছি, প্রকল্পটি আগামী বছরের জুনের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে এবং দক্ষিণের মানুষের স্বপ্নের পায়রা সেতুটি ট্রাফিকের জন্য উন্মুক্ত হবে।”

    মন্তব্য করুন