নুসরত হত্যার দুই বছর।পরিবার খুনিদের ফাঁসি কার্যকরের প্রহর গুনছে
আজ ফেনীর সোনাগাজীতে মাদ্রাসার ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যার দুই বছর। ২০১২ সালে এই দিনে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে তিনি মারা যান। অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা সহ ১৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আদেশ দিয়েছে আদালত। রাফির পরিবার দাবি জানিয়েছে, আইনি প্রক্রিয়া শেষ করেই এই মামলার রায় কার্যকর করা উচিত।
শুক্রবার সকালে রাফির বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে যে সেখানে চার পুলিশ সদস্য মোতায়েন রয়েছেন। মা শিরিনা আক্তার বলেন রাফির শূন্যতা পূরণ করার নয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমার পরিবারের সদস্যদের তাঁর বুকে টেনে নিয়েছেন এবং তাদের ন্যায়বিচারের আশ্বাস দিয়েছেন। আমরা বিচার বিভাগে ন্যায়বিচার পেয়েছি। আমি ১০০% আশাবাদী যে আসামির মৃত্যুদণ্ড হাইকোর্টেও বহাল থাকবে। আমরা আসামিদের ফাঁসির অপেক্ষায় রয়েছি। ‘
রাফি সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী ছিলেন। যৌন নিপীড়নের অভিযোগে পুলিশ ২৭ শে মার্চ, ২০১৯ তে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে গ্রেপ্তার করে। এরপরে ৬ এপ্রিল মাদ্রাসার একটি ভবনের ছাদে অধ্যক্ষের সহযোগীরা রাফির শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়। চার দিন পরে তিনি মারা যান। এ বিষয়ে রাফির বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলায় ৬১ কার্যদিবসে ৮৭ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়। একই বছরের ২৪ শে অক্টোবর আদালত সকল আসামিকে মৃত্যুদণ্ডে দন্ডিত করে। দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন মাদ্রাসার তৎকালীন অধ্যক্ষ এস এম সিরাজ উদ্ দৌলা, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও তত্কালীন মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সহ-সভাপতি রুহুল আমিন, মাদ্রাসা শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহাদাত হোসেন শামীম, কাউন্সিলর ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. সোনাগাজী পৌর আওয়ামী লীগ মাকসুদ আলম, নুরফ জোবায়ের, জাবেদ হোসেন ওরফে সাখাওয়াত হোসেন, হাফিজ আব্দুল কাদের, প্রভাষক আবছার উদ্দিন, কামরুন নাহার মনি, উম্মে সুলতানা পপি, আবদুর রহিম শরীফ, ইফতেখার উদ্দিন রানা, ইমরান হোসেন মামুন, মহিউদ্দিন শাকিল ও মোহাম্মদ শামীম প্রমুখ।
বাদীপক্ষের আইনজীবী শাহজাহান সাজু বলেন, “প্রধান বিচারপতি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আপিল শুনানির জন্য একটি বেঞ্চ গঠন করেন। করোনার কারণে সেই বেঞ্চ বাতিল করা হয়েছে। তার পরে বেঞ্চ গঠন করা হয়নি। সুতরাং শুনানি নেই। একবার করোনার মহামারীটি হয়েছে শেষ, শুনানি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে অনুষ্ঠিত হবে। ‘
নুসরাতের বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান বলেছেন, “খুনিরা ও তাদের আত্মীয়রা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হুমকি দিচ্ছে। মামলার সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে আমরা কিছুই জানি না। তবে আমাদের আইনজীবী শাহজাহান সাজু বলেন যে মহামরির কারণে মামলার বেঞ্চ গঠনে দেরি হচ্ছে।