জাতীয়

নির্বাচন নিয়ে কথা বলাকে ‘হস্তক্ষেপ’ মনে করে না যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্র নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে কথা বলাকে ‘অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ’ বলে মনে করে না। সোমবার মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার একথা জানিয়েছেন।

স্টেট ডিপার্টমেন্টের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অন্য কোনো দেশ আমাদের দেশের নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে কথা বললে আমরা এটাকে অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ বলে মনে করি না। আমরা এ ধরনের আলোচনাকে স্বাগত জানাই। কারণ এটি আমাদের গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করে।

মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রতিনিধিদল ঢাকায় আসার কথা এমন এক সময়ে মিলার এসব মন্তব্য করেন। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়া এবং সহকারী সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু ১১ জুলাই থেকে ১৫ জুলাই পর্যন্ত বাংলাদেশ সফর করবেন। বাংলাদেশের আসন্ন সাধারণ নির্বাচন নিয়ে আমেরিকা ও ইউরোপের কূটনৈতিক তৎপরতার প্রেক্ষাপটে এই সফরকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও সরকারের সিনিয়র নেতারা প্রকাশ্যে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক পদক্ষেপে তাদের ‘অসন্তোষ’ প্রকাশ করেছেন। এমন প্রেক্ষাপটে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় টুইটারে এক বিবৃতির মাধ্যমে বলেছে, বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলোর তৎপরতাকে অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ ছাড়া আর কী বলা যায়!

সোমবার স্টেট ডিপার্টমেন্টের এক সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নে বলা হয়, রাশিয়া, চীন ও ইরান বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ বলে বর্ণনা করেছে। গত সপ্তাহে রাশিয়া ও চীন কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন নেটওয়ার্কে এর সমালোচনা করা হয়। এ বিষয়ে স্টেট ডিপার্টমেন্টের মন্তব্য কী?

জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে অন্যরা কেন আপত্তি করবে তা তিনি বুঝতে পারছেন না। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বারবার অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পক্ষে তার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন। ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশের বন্ধু ও অংশীদার হিসেবে আমরা দুজনেই এই আকাঙ্খা তৈরি করি।

মিলার বলেন, তারা বাংলাদেশে একটি রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করে না, অন্য দলের বিপরীতে। বরং আমেরিকা প্রকৃত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে সমর্থন করে।

উজরা জেয়া ও ডোনাল্ড লু সফরকালে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হবে। স্টেট ডিপার্টমেন্টের প্রেস কনফারেন্সে তা স্পষ্ট হয়েছে। এ সফরে তারা সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। সেখানে রোহিঙ্গা সংকট, শ্রম অধিকার, মানবাধিকার, মানব পাচার এবং অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হবে।

মিলার বলেন, এই সফরে মার্কিন প্রতিনিধিদল বাংলাদেশের সুশীল সমাজের সঙ্গে দেখা করবে। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, সুশাসন ও গণতন্ত্র নিয়ে আলোচনা হবে।