নির্বাচনের দিন ছাড়া গণভোটের সিদ্ধান্ত বিএনপি মেনে নেবে না: মির্জা ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘নির্বাচনের আগে প্রস্তাবিত গণভোট সম্ভব নয়। নির্বাচনের মতো সময়, অর্থ এবং বিশাল আয়োজন বিবেচনা করলে এটি অযৌক্তিক এবং বেপরোয়া। নির্বাচনের দিন ছাড়া গণভোটের সিদ্ধান্ত বিএনপি কখনই মেনে নেবে না।’ আজ বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ঐক্যমত্য কমিশনের প্রস্তাবিত বিষয়গুলির উপর গণভোট হবে। কিন্তু বিপরীতে, জুলাই সনদে রাজনৈতিক দলগুলির মতামত, ভিন্নমত এবং ভিন্নমতের নোট উল্লেখ করা হয়নি। অর্থাৎ, কমিশনের প্রস্তাব এবং সুপারিশ একতরফাভাবে এবং জোরপূর্বক জাতির উপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।’
প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, ‘তাহলে দীর্ঘ এক বছর ধরে সংস্কার ও ঐক্যমত্য কমিশনের সাথে রাজনৈতিক দলগুলির আলোচনা কি অর্থহীন? এটা একটা প্রহসন এবং জাতির সাথে বিশ্বাসঘাতকতা।’ বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, ‘সরকারের জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দেওয়ার এখতিয়ার নেই। কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর গণতান্ত্রিক অধিকার বিবেচনা করেনি।’
সংস্কার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘প্রথম অধিবেশন শুরুর তারিখ থেকে ২৭০ ক্যালেন্ডার দিনের মধ্যে সংস্কার সম্পন্ন করতে ব্যর্থ হলে, গণভোটে অনুমোদিত সাংবিধানিক সংস্কার বিলটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত হবে। এটি সম্পূর্ণ অযৌক্তিক, হাস্যকর এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’
তিনি বলেন, ‘জাতীয় পরিষদে অনুমোদনের পর, যেকোনো বিল রাষ্ট্রপতির অনুমোদন পাওয়ার পরই আইনে পরিণত হয়। এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই। যদি এটি ঘটে, তাহলে এটি গণতান্ত্রিক রীতিনীতি এবং সংসদীয় সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে হবে।’
বিএনপি সংবাদ সম্মেলনে ১৯টি দফা উত্থাপন করে। এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা জাতির সামনে এটি উপস্থাপন করেছি, প্রয়োজনে আমরা উপদেষ্টার কাছে যাব।’ মির্জা ফখরুল বলেন, ‘নির্বাচন ইস্যুতে প্রধান উপদেষ্টার উপর আমাদের আস্থা আছে। নির্বাচন নিয়ে কোনও অস্পষ্টতা নেই।’
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সালাহউদ্দিন আহমেদ, বেগম সেলিমা রহমান এবং মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদও উপস্থিত ছিলেন।
এই সংবাদ সম্মেলনের আগে গত মঙ্গলবার এবং বুধবার দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে জাতীয় স্থায়ী কমিটির দুটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। উভয় সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তগুলি সংবাদ সম্মেলনে উপস্থাপন করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল।

