জাতীয়

নিম্নমানের খোয়ায় পানি দিলে কাদা।৬৫ লাখ টাকার কাজে অনিয়ম

কুষ্টিয়ার কুমারখালী বাসস্ট্যান্ড থেকে প্রধান শহরে প্রবেশের একমাত্র পথ সোনাবন্ধু সড়ক। গোলচত্বর থেকে শুরু হয়ে মূল বাজারে চলে গেছে। চলাচলে সমস্যা হওয়ায় কুমারখালী পৌরসভা সড়কটি সংস্কারের জন্য দরপত্র আহ্বান করে। তবে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় প্রায় ৬৫ ​​লাখ টাকা ব্যয়ের কাজ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয়রা। তারা বলছেন, এভাবে কাজ চলতে থাকলে এক বছরের বেশি রাস্তা চলবে না।

সংশ্লিষ্টরা হাততালি দিয়ে কাজ শেষ করে বিল আদায়ের চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গত কয়েকদিন ধরে ঠিকাদার নির্মমানের কাজ করলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। পৌর প্রকৌশলীদের উপস্থিতিতে এ কাজ চলছে। সংস্কারে ব্যবহৃত রোলার দিয়ে প্রায় ৭০০ মিটার রাস্তা ভেঙে ফেলা হচ্ছে। পানি ছিটানোর পরও তা কাদায় পরিণত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। জানা গেছে, টেন্ডারের মাধ্যমে কাগজে কলমে অজয় ​​চক্রবর্তী কাজ পেলেও তা বাস্তবায়ন করছেন পুরসভার এক জনপ্রতিনিধি। এ প্রক্রিয়ায়ও অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।

স্থানীয় এক ব্যবসায়ী জানান, রাস্তার কাজে যে রাস্তাটি ব্যবহার করা হচ্ছে সেটি তিন নম্বর ইট। এ খাদের কাজ করলে এক বছরের মধ্যে সড়কটি আগের মতোই নষ্ট হয়ে যাবে। এমন কর্মকাণ্ড করেও প্রতিবাদ করার সাহস নেই কারো। মিউনিসিপ্যাল ​​ইঞ্জিনিয়াররা ঘুরে বেড়ান, দেখেও ব্যবস্থা নেন না।

স্থানীয় এক বীর মুক্তিযোদ্ধা জানান, পৌরসভায় কোনো সাধারণ ঠিকাদার কাজ করতে পারে না। মাত্র পাঁচটি লাইসেন্স কাজ করে। কিছু জনপ্রতিনিধি এসব লাইসেন্স ব্যবহার করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। অধিকাংশ কাজে অনিয়ম-দুর্নীতি থাকলেও কারো কিছু বলার নেই।

একাধিক ব্যবসায়ী ও ক্ষমতাসীন দলের কয়েকজন নেতা জানান, পৌরসভার কাজগুলো সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণে। এ বছর সংস্কার করা সব সড়কের অবস্থা একই। রাস্তার কাজ নিয়ে মানুষের ক্ষোভ থাকলেও কিছু বলার সাহস নেই। ঠিকাদারের পেছনে দলের প্রভাবশালী নেতাদের হাত থাকায় এ অবস্থা।

ঠিকাদার অজয় ​​চক্রবর্তী জানান, সব জিনিসের দাম বেড়েছে। তাই ভালো ইটকে খারাপের সঙ্গে মিশিয়ে কাজ করতে হবে। দুই ও তিন নম্বর ইট ব্যবহার না করলে কোনো লাভ হবে না। তাই বাধ্য হয়েই তিনি এ কাজ করছেন। এটা পৌরসভার সবাই জানে।

কুমারখালী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান খান বলেন, সড়ক সংস্কারের নামে নৈরাজ্য ও লুটপাট চলছে। যারা দেখবেন, তারা রঙিন চশমা পরে আছেন।

পৌর প্রকৌশলী অহিদুল ইসলাম বলেন, সোনাবন্ধু সড়কের কাজের মান খুব একটা ভালো না হলেও খারাপও নয়। খারাপ ইট ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

পৌর মেয়র শামসুজ্জামান অরুন বলেন, ঠিকাদার খারাপ কাজ করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মন্তব্য করুন