নিত্যপণ্য আমদানির জন্য মজুদ থেকে ডলার প্রদানের সুপারিশ
ডলার সংকটের কারণে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি অনেক ক্ষেত্রেই ব্যাহত হচ্ছে। আসছে রমজানে পণ্যের স্বাভাবিক সরবরাহ বজায় রাখা কঠিন হবে বলে আশঙ্কা করছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এমন পরিস্থিতিতে নিত্যপণ্য আমদানির জন্য বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে ডলার সরবরাহের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে মন্ত্রণালয়।
রোববার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো চিঠিতে ভোজ্যতেল, ছোলা, মসুর, পেঁয়াজ, চিনি ও খেজুর আমদানিতে ডলারের বিশেষ বরাদ্দ করতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে এসব পণ্য আমদানির জন্য এলসি খোলার জন্য তফসিলি ব্যাংকগুলোকে প্রয়োজনীয় ডলার সরবরাহের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে অনুরোধ করা হয়েছে।
চিঠিতে আরও বলা হয়, জানুয়ারি থেকে ডলার সংকট থাকবে না বলে বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, এলসি খোলা সম্ভব নয়। এভাবে চলতে থাকলে রমজানে পণ্য সরবরাহে ঘাটতি দেখা দিতে পারে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ ব্যাংকের সহযোগিতা অপরিহার্য।
মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, এর আগে ১৪ ডিসেম্বর ও ১০ জানুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংককে পণ্য আমদানির জন্য প্রয়োজনীয় ডলার সরবরাহ নিশ্চিত করতে অনুরোধ করা হয়েছিল। তবে রিজার্ভ থেকে ডলার সরবরাহের কোনো উল্লেখ নেই। আগের চিঠিতে বলা হয়েছিল, জনসাধারণের ক্রয়সীমার মধ্যে নিত্যপণ্যের দাম রাখতে নিয়মিত এলসি খোলা জরুরি। আমদানি ব্যয় মেটাতে ব্যাংকগুলোতে প্রয়োজনীয় ডলার ব্যালেন্স নিশ্চিত করা প্রয়োজন। কেন্দ্রীয় ব্যাংককে বিশেষভাবে বেসরকারি ব্যাংকগুলোকে নিয়মিত এলসি খোলা ও নিষ্পত্তি কার্যক্রম পরিচালনার নির্দেশ দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।
এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ যাতে বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে না পড়ে সেজন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক ইচ্ছামতো ডলার দিচ্ছে না। মজুদ থেকে ডলার বিক্রি হচ্ছে শুধুমাত্র সার, জ্বালানি ও সরকারি খাদ্য আমদানির জন্য। চলতি অর্থবছরে এ পর্যন্ত বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে ৮৫৩ মিলিয়ন ডলার বিক্রি হয়েছে।
ডলার বিক্রির ফলে রিজার্ভ ক্রমাগত কমছে। বৃহস্পতিবার ৩২.৪৮ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে। গত বছর একই দিনে যা ছিল ৪৫.২০ বিলিয়ন ডলার। বর্তমান রিজার্ভ থেকে রপ্তানি উন্নয়নসহ বিভিন্ন তহবিলে দেওয়া অর্থ বাদ দিলে ২৪ বিলিয়ন ডলার রয়েছে, যা দিয়ে প্রায় সাড়ে তিন মাসের আমদানি দায় মেটানো সম্ভব।