বিবিধ

নাসিরনগরের বন্যা কবলিত এলাকায় সাপ-আতঙ্ক

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার বন্যা কবলিত এলাকায় সাপ আতঙ্ক বাড়ছে। বন্যার্তরা জানান, নাসিরনগরের বিভিন্ন গ্রামে বন্যা দীর্ঘায়িত হওয়ায় বিভিন্ন প্রজাতির সাপ লোকালয়ে আশ্রয় নিচ্ছে।

সাপের ভয়ে অনেকেই নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন। বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দারা জানান, বিছানায় ঘুমানোর সময় সাপ পাওয়া গেছে।

বিভিন্ন প্রজাতির বিষধর সাপের পাশাপাশি শেয়ালও খাবার ও আশ্রয়ের জন্য লোকালয়ে আসছে।

উপজেলা সদর ইউনিয়নের বাসিন্দা চৌধুরী সুমন বলেন, তার একটি কৃষি খামার রয়েছে। আমি সেখানে ৬টি পুকুর ও কিছু লেবুর বাগান করেছি। সাম্প্রতিক ভারি বর্ষণ ও সিলেটে পানির উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে বন্যায় আমার কৃষি খামার তলিয়ে গেছে। কিন্তু লেবু বাগানে লেবু আনতে গিয়ে দেখি ৮-১০টি পদ্ম। সে ভয় পায় এবং এখন আমি লেবু আনতে সাহস করি না।

বুড়িশ্বর ইউনিয়নের আলম শাহ বলেন, আমাদের বাড়িতে পানি ছিল না। কিন্তু চারিদিকে পানি বেড়ে যাওয়ায় বাড়ির পাশের একটি ঝোপে বেশ কিছু কোবরা সাপ দেখতে পেলাম। সাপের ভয়ে এখন ঘর থেকে বের হতে সাহস পাচ্ছি না।

সিংহগ্রামের বাসিন্দা জয় সরকার জানান, বন্যার পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সাপের ভয়ও বাড়ছে। কাল রাতে একটা কোবরা সাপ আমাদের বাড়িতে ঢুকেছিল। প্রতিবেশীদের কারনে সাপটিকে মারতে পেরেছি।

গোকর্ণ ইউনিয়নের নুরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. আকবর হোসেন বলেন, স্কুলে যাওয়ার জন্য একটি কালো সাপ ঘর থেকে বের হতে দেখেছি। কাছে আসতেই সে ফ্যানা তুলে নিয়ে ফিসফিস করছে। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় সাপটিকে মেরে ফেলি। পরে জানতে পারলাম এটা একটা কমল সাপ, যেটা খুবই বিষাক্ত।

গুনিয়াউক ইউনিয়নের শরীফ মিয়া জানান, শিয়ালের বয়ে সন্ধ্যার পর বাড়িতে থাকতে পারিনা। প্রতিদিন আমাদের পাড়ার ৫-৬টি মুরগি খাচ্ছে। শিয়াল এখন পর্যন্ত আমাদের বাড়ির ৯টি মুরগি খেয়েছে।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভেনম রিসার্চ সেন্টারের শিক্ষানবিশ গবেষক রফিকুল ইসলাম বলেন, সারাদেশ বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। তাই সাপ ও বিভিন্ন বন্যপ্রাণীর নিরাপদ আশ্রয়স্থল এখন জলাবদ্ধ। উঠানে সাপ দেখলে নিরাপদ দূরত্বে থাকুন। বাড়ির আশেপাশের এলাকা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও ঝোপ মুক্ত রাখুন। ঘরে বা বাড়ির আশেপাশে গর্ত বা ফাটল দেখা গেলে তা স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

তিনি বলেন, কাউকে সাপে কামড়ালে তাকে দ্রুত নিকটস্থ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যেতে হবে।

নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. অভিজিৎ রায় বলেন, সাপে কামড়ানোর ভয় না পেয়ে দ্রুত স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসতে হবে। আমাদের এখানে অ্যান্টিভেনম আছে। যাইহোক, অ্যান্টিভেনম নেওয়ার আগে, আপনাকে নিশ্চিত করতে হবে যে সাপ আপনাকে কামড় দিয়েছে। এটি করতে ব্যর্থ হলে অ্যান্টি-ভেনম প্রয়োগের কারণে আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যু হতে পারে।

মন্তব্য করুন