• বাংলা
  • English
  • জাতীয়

    নারীর চুল কেটে, মুখে কালি মাখিয়ে, নির্যাতন, গ্রেফতার ৪

    যশোরের ঝিকরগাছায় তুচ্ছ ঘটনায় ফজিলা চম্পা (৪৫) নামে এক নারীকে তার তালাকপ্রাপ্ত পুত্রবধূর পরিবারের লোকজন কেটে দিয়েছে। এ সময় তার মুখে কালি মাখিয়ে মারধর ও নির্যাতন করা হয়। গত রোববার সন্ধ্যায় ঝিকরগাছা উপজেলার বেনালী গ্রামে তার তালাকপ্রাপ্ত পুত্রবধূকে দেখতে গিয়ে তাকে নির্যাতন করা হয়।

    ভিকটিম ফজিলা খাতুন ঝিকরগাছা উপজেলার চাপাতলা গ্রামের তোরাব মোড়লের মেয়ে। তার নির্যাতনের ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।

    ভুক্তভোগী বাদী হয়ে ঝিকরগাছা থানায় ছয়জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ৫-৬ জনকে আসামি করে মামলা করেন। পরে পুলিশ চারজনকে আটক করে।

    গ্রেফতারকৃতরা হলেন ঝিকরগাছার বনেয়ালী কলাবাগানপাড়ার আব্দুল হামিদের ছেলে শিমুল হোসেন, পদ্মপুকুর গ্রামের ইব্রাহিম খলিলের স্ত্রী শারমিন আক্তার রুমি, বেনালী গ্রামের মফিজুর গাড়িচালকের স্ত্রী রনি বেগম ও পদ্মপুকুর গ্রামের মুকুল বিশ্বাসের স্ত্রী রহিমা।

    সোমবার তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ফজিলা চম্পা জানান, দুই বছর আগে তার ছেলে রায়হান পার্শ্ববর্তী পদ্মপুকুর গ্রামের মুকুল বিশ্বাসের মেয়ে বিথীকে বিয়ে করে। বিয়ের পর সম্প্রতি পারিবারিকভাবে তাদের বিচ্ছেদ ঘটে। বিচ্ছেদের পর বিথী বিয়ে করেন একই উপজেলার গদখালী ইউনিয়নের বেনিয়ালী গ্রামের আব্দুল হামিদের ছেলে শিমুলকে। রোববার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ফজিলা বেগম তার সাবেক পুত্রবধূ বিথীর সঙ্গে দেখা করতে বেনালী গ্রামে যান। এ সময় বিথীর নতুন স্বামী শিমুল হোসেন, খালা শারমিন আক্তার রুমি, খালা রনি বেগম, মা রহিমা বেগম, তার স্বামী ও বিথীর বাপের বাড়ির লোকজন তার চুল কেটে মুখে কালি দিয়ে মাখিয়ে দেয়।

    তিনি জানান, এ সময় তারা তাকে নির্বিচারে বাঁশের লাঠি দিয়ে পিটিয়ে শারীরিক নির্যাতন করে। উপস্থিত আরও অনেক নারী ও পুরুষ পুরো ঘটনার ভিডিও ধারণ করেন। এমন বর্বরতার সময় অনেকেই উল্লাস করতে থাকে। শুধু তাকে মারধর করেই থেমে থাকেনি তারা। বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত শিমুলের বাড়ির পিলারে বেঁধে সন্ধ্যায় দেশীয় অস্ত্রসহ তাকে থানায় সোপর্দ করার চেষ্টা করা হয়।

    ফজিলা অভিযোগ করেন, অভিযুক্তরা কোথাও অভিযোগ করলে আরও ক্ষতি করার হুমকি দেন। সেখান থেকে ছাড়া পেয়ে তিনি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।

    গোদখালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৮নং ওয়ার্ডের সদস্য আবুল কাশেম বলেন, আমি শুনেছি তাবিজ মন্ত্র (জাদু) চর্চার সন্দেহে ওই নারীকে আটক করে নির্যাতন করা হয়েছে। একজনকে এভাবে নির্যাতন করা ঠিক নয়। এ ব্যাপারে ঝিকরগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাবলুর রহমান খান জানান, ফজিলা চম্পা তার তালাকপ্রাপ্ত পুত্রবধূ বিথীকে দেখতে তার নতুন স্বামীর বাড়িতে গিয়েছিলেন। বিথীর স্বামী ও বাবার পরিবারের লোকজন ফজিলাকে আটক করে চুল কেটে দেয়। এ সময় তাকে মারধর করা হয়। এ ঘটনায় ছয়জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগে অভিযুক্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

    Do Follow: greenbanglaonline24