শিক্ষা

নতুন বছরের ৬০ হাজার বই বিতরণের আগেই বাতিল!

একই সঙ্গে, সময়মতো পাঠ্যপুস্তক বিতরণে মুদ্রণের অগ্রগতি ও মান বজায় রাখতে মনিটরিং তদারকি আরও তীব্র করার নির্দেশনা দিয়েছে।প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মতে, ২০২১ শিক্ষাবর্ষের পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ ও বিতরণ কার্যক্রম বাস্তবায়নের অগ্রগতি পর্যালোচনা করার জন্য সম্প্রতি মন্ত্রণালয়ে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভাপতিত্ত্ব করেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাপতি মো:জাকির হোসেন।সভা সূত্রে জানা গেছে, সভার চেয়ারম্যান প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী বলেন, আসন্ন ২০২১ শিক্ষাবর্ষের পাঠ্যপুস্তক যাতে দেশের সকল শিক্ষার্থীর হাতে সময়মতো ছাপানো হয় এবং পৌঁছে দেওয়া হয় তা নিশ্চিত করার জন্য পর্যালোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।

অতিরিক্ত সচিব  জানান, ২০২১ শিক্ষাবর্ষে ১০ কোটি ২৫ লাখের বেশি পাঠ্যপুস্তক ছাপানোর জন্য ৩৯ টি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে। প্রায় ৬০ শতাংশ মুদ্রণের কাজ শেষ হয়েছে এবং প্রায় ৪০ শতাংশ বই ইতিমধ্যে মাঠে প্রেরণ করা হয়েছে।

প্রতিমন্ত্রী বৈঠকে বলেন যে মাঠের স্তর থেকেই এটি জানা ছিল যে সরবরাহিত কয়েকটি বই মানসম্পন্ন ছিল না। উদাহরণস্বরূপ, কিছু বইয়ের কাগজের মান ভাল না, এবং কিছু বই সঠিকভাবে ছাপানো হয়ই না। ব্যুরো ভেরিটাস বাংলাদেশ প্রা। লিমিটেড, এক্ষেত্রে পাঠ্যপুস্তকের মান যাচাইয়ে নিযুক্ত একটি সংস্থা। এর প্রতিনিধির কাছ থেকে বিস্তারিত জানতে চান।

ব্যুরো ভেরিটাস প্রতিনিধি। আফজাল কবির ভূঁইয়া জানান, মুদ্রিত প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে একজন করে পরিদর্শক রয়েছেন। মুদ্রণের মান নিশ্চিত করতে তারা পুরো সময় নিযুক্ত করে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, অনেক মুদ্রণ সংস্থার ব্যুরো ভেরিটাসের প্রতিনিধি নেই। তদুপরি, একাধিক সংস্থায় প্রতিনিধি থাকার বিষয়ে মাঠ পর্যায়ের পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে।

এক্ষেত্রে সচিব ব্যুরো ভেরিটাসের প্রতিনিধিদের অবিলম্বে তাদের প্রতিটি দায়িত্বশীল পরিদর্শকের নাম, মোবাইল নম্বর সরবরাহের জন্য মন্ত্রণালয়, ডিপিই এবং এনসিটিবি-র প্রতি অনুরোধ জানান।

সভায় সচিব বলেন, মানসম্পন্ন বইয়ের জন্য বাস্তবায়ন তদারকি জোরদার করা দরকার। এজন্য প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর এবং এনসিটিবি ব্যুরো ভেরিটাস পরিদর্শকদের কাজের তদারকির জন্য একটি কমিটি গঠন করেছে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, বই উৎসব প্রতি বছর ১ জানুয়ারি পালিত হয়। এ লক্ষ্যে, এই বছরটিও যথাযথভাবে নতুন বইগুলি পৌঁছে দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা দরকার।

অতিরিক্ত সচিব (বিদ্যালয়) জানান, মুদ্রণের কাজ তদারকির জন্য মন্ত্রণালয় থেকে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক জানান, ইতিমধ্যে ঢাকা বিভাগীয় উপ-পরিচালকের মাধ্যমে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে একজন করে কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এই কর্মকর্তাগণ নিয়মিত মুদ্রণ কার্যক্রম তদারকি করছেন এবং ৬০,০০০ বই ইতোমধ্যে বাতিল করা হয়েছে।বৈঠকে এনসিটিবিকে পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ ও বিতরণের অগ্রগতি ও মান সম্পর্কে মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন দেওয়ার কথাও বলা হয়। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রন কর্তৃক গঠিত মনিটরিং কমিটি এর কার্যক্রম আরও তীব্র করবে এবং ডিপিই এবং এনসিটিবি মুদ্রণের কাজ তদারকির জন্য তদারকি কার্যক্রম ত্বরান্বিত করবে। এটি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়কে নিয়মিত প্রতিবেদনও প্রেরণ করবে। জানানো হয়েছিল যে এনসিটিবি প্রিন্টিংয়ের উপাদানগুলি বুঝতে পারে এবং ডিপিইর সাথে সমন্বয় করে প্রতিবেদন করবে।

এনসিটিবি এবং ডিপিই বইয়ের মুদ্রণের সময় পর্যবেক্ষণ কার্যক্রম জোরদার করে বইয়ের মান বজায় রেখে মুদ্রণ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে, বৈঠক সূত্র জানায়।

সভায় আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক সকল বিভাগীয় উপ-পরিচালক, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এবং উপজেলা / থানা শিক্ষা অফিসারদের সাথে বই সরবরাহ, রক্ষণাবেক্ষণ ইত্যাদি বিষয়ে কার্যকর সমন্বয় সাধন করবেন। বিতরণ শিক্ষার্থীদের তালিকা প্রস্তুতকরণ সহ মানসম্পন্ন বইগুলি শিক্ষার্থীদের যথাসময়ে পৌঁছে দেওয়াসহ অন্যান্য সমস্ত কার্যক্রম পরিচালনা করবে।

মন্তব্য করুন