বাণিজ্য

নতুন টেলিকম নীতি মেনে নিতে নারাজ মোবাইল অপারেটরদের বিদেশী মালিকরা!

বিএনপির পর এবার নতুন টেলিকম নীতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মোবাইল অপারেটরদের বিদেশী মালিকরা। খসড়া নীতিতে মোবাইল ফোন কোম্পানিগুলিতে বিদেশী মালিকানা সর্বোচ্চ ৮৫ শতাংশে সীমাবদ্ধ রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। এর বিরুদ্ধে আপত্তি জানিয়ে টেলিনর, ভিওন এবং আজিয়াটা গ্রুপ প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে চিঠি দিয়েছে। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে যে বিদেশী মালিকানা সীমিত করার পদক্ষেপ বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করবে। দেড় দশক পর সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া নতুন টেলিকম নীতি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনা চলছে। বিএনপির উদ্বেগের পর এটি আরও গতি পেয়েছে। সমালোচনার তালিকায় এখন মোবাইল অপারেটররাও যোগ দিয়েছে। নতুন খসড়া নীতিতে মোবাইল ফোন অপারেটর কোম্পানিগুলিতে বিদেশী মালিকানা সর্বোচ্চ ৮৫ শতাংশে রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। অন্যান্য অপারেটরদের ক্ষেত্রে এই সীমা সর্বোচ্চ ৫৫ শতাংশ। আপত্তি এখানেই। বর্তমানে গ্রামীণফোনের ৫৫.৮ শতাংশ শেয়ার নরওয়ের টেলিনরের হাতে। বাকি ৪৪.২ শতাংশ দেশীয় উদ্যোক্তাদের হাতে। রবির ৯০ শতাংশ শেয়ার মালয়েশিয়ার আজিয়াটা গ্রুপের হাতে। ১০ শতাংশ মূলধন বাজারে। বাংলালিংকের ১০০ শতাংশ মালিকানা দুবাই-ভিত্তিক ভিওনের হাতে। নতুন নিয়ম অনুসারে, রবিকে আরও ৫ শতাংশ এবং বাংলালিংকের ১৫ শতাংশ শেয়ার বিক্রি করতে হবে। রবির প্রধান কর্পোরেট এবং নিয়ন্ত্রক বিষয়ক কর্মকর্তা শাহেদ আলম বলেন, আরও ১০ শতাংশ শেয়ার পুঁজিবাজারে বিক্রি করা যেতে পারে, তবে তার আগে, পুঁজিবাজারের তা নেওয়ার ক্ষমতা আছে কিনা তা দেখা প্রয়োজন। এটি বিবেচনা না করে ৮০ শতাংশের প্রতিশ্রুতি দেওয়া সম্ভব নয়। টেলিনর, ভিওন এবং আজিয়াটা গ্রুপ নতুন প্রস্তাব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রধান উপদেষ্টাকে চিঠি দিয়েছে। যেখানে উল্লেখ করা হয়েছে যে জোরপূর্বক মালিকানা সীমিত করার পদক্ষেপ বিদেশী বিনিয়োগকারীদের আস্থা হ্রাস করবে। আন্তর্জাতিক এসএমএস ব্যবসা মোবাইল অপারেটরদের কাছ থেকে সরিয়ে নেওয়ার উদ্যোগকে নিয়ন্ত্রক সংস্থার একটি অবাঞ্ছিত হস্তক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। তবে আলোচনার পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়) ফয়েজ আহমেদ তৈয়ব। তিনি বলেন, আলোচনার পর এটি কিছুটা কম-বেশি হতে পারে। তবে এর মাধ্যমে বিদেশী বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে না। বরং এর মাধ্যমে স্থানীয়দের জন্য সীমিত সুরক্ষা ব্যবস্থা প্রদান করা হচ্ছে। উল্লেখ্য যে, বর্তমানে দেশে মোট ১৮৭.৬ মিলিয়ন মোবাইল সংযোগধারীর মধ্যে ১৮১ মিলিয়ন গ্রামীণফোন, রবি এবং বাংলালিংকের গ্রাহক।