• বাংলা
  • English
  • জাতীয়

    দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি।গরিবের চালের চাহিদা বাড়ছে, জোগান কমছে

    বাজারে চালের দাম বৃদ্ধি এবং করোনা মহামারির কারণে দরিদ্রের সংখ্যা বৃদ্ধি সত্ত্বেও স্কুল ফিডিং, চতুর্থ শ্রেণির শ্রমিক ও গার্মেন্টস শ্রমিক এবং টিআর (টেস্ট রিলিফ) খাতে খাদ্যশস্য বিতরণ বন্ধ রয়েছে। দুস্থ নারী উন্নয়ন (ভিজিডি), দুস্থদের খাদ্য সহায়তা (ভিজিএফ), মুক্তিযোদ্ধা, কাবিখা এবং জিআর (চ্যারিটি সহায়তা) খাতে নামমাত্র খাদ্যশস্য বিতরণ করা হচ্ছে। ফলে ওএমএস (উন্মুক্ত বাজার) ট্রাকের লাইনে দাঁড়িয়ে আছে সব গরিব মানুষ।

    এদিকে অর্থবছর শেষ হতে পাঁচ মাস আগেই ওএমএসের বরাদ্দ প্রায় শেষ হয়ে গেছে। ওএমএস চাল-আটা না পেয়ে মানুষ এখন খালি হাতে ফিরছে। এর মধ্যে ওএমএস শুধুমাত্র দেশের সিটি করপোরেশন এবং পৌরসভায় পাওয়া যায়। অন্যান্য খাতে খাদ্যশস্য বিতরণ বন্ধ ও কমানো হলেও উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে ওএমএস চালু হয়নি। এ অবস্থায় আগামী রমজানে নিম্ন আয়ের মানুষের খাদ্য সংকটের আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। এ জন্য ওএমএসের বরাদ্দ বাড়ানোর জন্য খাদ্য মন্ত্রণালয়কে ডিও (আধা-সরকারি চিঠি) দিয়েছেন জনপ্রতিনিধিরা। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ১০ মার্চের তথ্য অনুযায়ী, সরকারি গুদামে ১৬ লাখ ১২ হাজার টন চাল ও ২ লাখ ২৩ হাজার টন গম রয়েছে।

    জানা গেছে, বিভিন্ন মাধ্যমে খাদ্যশস্য বিতরণ সংকোচনের কারণে ওএমএসের ওপর চাপ বেড়েছে। ২০২১-২২ অর্থবছরে ওএমএস-এর জন্য দেড় লাখ টন চাল এবং ৬৩,১৫৮ টন আটার মধ্যে দুই লাখ টন আটা বরাদ্দ করা হয়েছিল। ছয় মাসে বরাদ্দ প্রায় শেষ। এরপর জানুয়ারিতে আরও তিন লাখ টন চাল ও এক লাখ টন গম বরাদ্দ দেওয়া হয়। অতিরিক্ত বরাদ্দ থাকলেও অর্থবছর শেষ হওয়ার পাঁচ মাস আগেই ৮২৬শতাংশ চাল শেষ হয়ে গেছে। আর ময়দা তৈরির কাজ শেষ। ফলে ফেব্রুয়ারিতে ওএমএস আটা বিতরণ কমে গেছে। এর আগে ১ ডিসেম্বর থেকে চাল ও আটার বিক্রি কমে যায়। জানুয়ারিতে অতিরিক্ত বরাদ্দের পর বিতরণ বাড়ানো হয়।

    খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোছাম্মত নাজমানারা খানুম বলেন, যেভাবে ওএমএস বিতরণ করা হচ্ছে তাতে এপ্রিলের মধ্যে অতিরিক্ত বরাদ্দ শেষ হয়ে যাবে। রমজানকে সামনে রেখে বরাদ্দ চেয়ে অর্থ বিভাগে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

    জনপ্রতিনিধিদের ডিওর বিষয়ে তিনি বলেন, ওএমএস সর্বোচ্চ পরিমাণে বাড়ানো হয়েছে। এ মুহূর্তে তা বাড়ানো সম্ভব নয়।

    খুলনা সিটি করপোরেশনে মাত্র ২৪টি কেন্দ্র ও চারটি ট্রাকে ওএমএস বিতরণ করা হচ্ছে। এলাকার অধিকাংশ মানুষ ওএমএস পাচ্ছেন না। ফলে ওএমএস বরাদ্দ বাড়াতে খাদ্য মন্ত্রণালয়ে ডিও পাঠিয়েছেন খুলনার সংসদ সদস্য ও শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান এবং সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক।

    নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন থেকেও চিঠি দেওয়া হয়েছে। অধিকাংশ জেলা ও সিটি কর্পোরেশন থেকে খাদ্য মন্ত্রণালয়ে প্রতিনিয়ত ওএমএস বৃদ্ধির চিঠি আসছে।

    ঢাকা বিভাগের আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক তপন কুমার দাস বলেন, নারায়ণগঞ্জ ও ফরিদপুরে ওএমএস বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে প্রস্তাব অনুযায়ী তা বাড়েনি।

    ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে প্রতি মাসে দুস্থ নারীদের মাঝে ৩০ কেজি চাল বিতরণ করা হয়। আয়রন, ফলিক অ্যাসিড, জিঙ্ক মিশ্রণ বিতরণ করা হয় পুষ্টি প্রদানের জন্য। তবে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা বাড়লেও ভিজিডির সংখ্যা বাড়েনি।

    মন্তব্য করুন