• বাংলা
  • English
  • জাতীয়

    দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ।ডিসি সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন

    বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে আগামী দিনে পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখাকে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে বিবেচনা করছে সরকার। আসন্ন রমজান মাসে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বাজার মনিটরিং দায়িত্ব পালনের জন্য জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) নির্দেশ দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। অবৈধ মজুদকারীদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে বাজার মনিটরিংয়ে বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার কথা তুলে ধরেছেন জেলার সর্বোচ্চ কর্মকর্তারা।
    বুধবার রাজধানীর ওসমানী মিলনায়তনে ডিসি সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে ২০টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। এ ছাড়া দুর্নীতি দমন কমিশনের সঙ্গে ডিসিদের বৈঠকও হয়েছে। এদিন স্থানীয় সরকার বিভাগ, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয় ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত বিষয়গুলো আলোচনায় গুরুত্ব পেয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তিন দিনব্যাপী সম্মেলন আজ শেষ হচ্ছে।
    বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, বাজার ব্যবস্থাপনায় যেকোনো ধরনের অনিয়মের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অবৈধ সুযোগের মাধ্যমে কেউ যেন বাজারকে অস্থিতিশীল করতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে হবে ডিসিদের। স্থানীয় পর্যায়ে বাজার মনিটরিংসহ টিসিবির বিভিন্ন কার্যক্রমে সহযোগিতার জন্য বাণিজ্যমন্ত্রী ডিসিদের প্রশংসা করেন।
    অন্যদিকে বাজার মনিটরিংয়ে কর্মকর্তাদের ঘাটতির কথা তুলে ধরেছেন ডিসিরা। তারা জানান, বাজার মনিটরিংয়ের জন্য জেলা প্রশাসন গুরুত্বের সঙ্গে কাজ করছে। কিন্তু জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে পর্যাপ্ত কর্মকর্তা না থাকায় নানা সমস্যা হচ্ছে। এ ব্যাপারে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর থেকে কিছু উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা যথেষ্ট নয়। বাজার কমিটির নেতাদের মনিটরিংয়ে বড় ভূমিকা রাখার সুযোগ রয়েছে। বাজার কমিটিগুলোর সক্রিয় ভূমিকা নিশ্চিত করা গেলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব বলে মনে করেন ডিসিরা। আর এ ক্ষেত্রে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের ভূমিকা রাখার সবচেয়ে বেশি সুযোগ রয়েছে বলে মনে করছেন জেলা প্রশাসকরা।
    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ডিসি বলেন, কিছু অদৃশ্য বিষয় বাজার মনিটরিংকে প্রভাবিত করে। উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, যখন চাঁদাবাজ বা পণ্যবাহী ট্রাকে অবৈধ মজুদকারীদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত অনুষ্ঠিত হয়, তখন রাজনৈতিক লবিং শুরু হয়। এসব সমস্যা আগের তুলনায় অনেক কম। ভবিষ্যতে এটি আরও কমাতে সামাজিক ও রাজনৈতিক পদক্ষেপ জরুরি।
    সম্মেলনে স্থানীয় পর্যায়ে জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব নিয়েও আলোচনা হয়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, স্থানীয় পর্যায়ের কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে বিরোধের কোনো সুযোগ নেই। কারণ প্রত্যেকেই নিজ নিজ জায়গা থেকে আইন অনুযায়ী দায়িত্বশীল। কিছু ক্ষেত্রে ধারণাগত পার্থক্য থাকতে পারে।
    আলোচনায় সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ প্রকৃত অসহায় মানুষের কাছে বিভিন্ন সরকারি ভাতা পৌঁছে দেওয়ার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন। এ বিষয়ে ডিসিরা সামাজিক নিরাপত্তা ভাতা বাড়ানোর কথা বলেছেন। ডিসিরা বলেন, এই মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ১১১টি সেবা বিধবা, অসহায় শিশু, অন্ধ, বধির ও পক্ষাঘাতগ্রস্তসহ বিভিন্ন মানুষের কাছে পৌঁছেছে। কিন্তু এসব অনুদানের পরিমাণ খুবই কম। ডিসিরা অনুদানের টাকা বাড়ানোর জন্য সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
    বিজয় কিবোর্ড? বাধ্যতামূলক নয়: অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোনে বিজয় কীবোর্ড সফটওয়্যার ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়নি বলে জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। সম্মেলনে আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
    টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি) মোবাইল ফোন বিক্রিতে বিজয় কীবোর্ড সফ্টওয়্যার বাধ্যতামূলক ব্যবহারের বিষয়ে ১৩ জানুয়ারি একটি নির্দেশনা জারি করে। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘অ্যান্ড্রয়েড ফোনে যেকোনো সফটওয়্যার রাখতে পারেন, ইন্সটল করে ফেলুন, আবার ইন্সটল করুন। অতএব, বাধ্যতামূলক শব্দ প্রয়োগ করার প্রয়োজন নেই। এটা বাধ্যতামূলক নয়।’
    দেশের বিভিন্ন স্থানে টাওয়ার বসানো যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী। কারণ কিছু লোক প্রচার করে যে টাওয়ারটি বিকিরণ নির্গত করে। পরীক্ষায় দেখা গেছে এগুলো অপপ্রচার। টাওয়ার বসাতে হবে।
    সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য পূর্বানুমতির প্রয়োজন নেই: দেশের কোথাও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজনের আগে প্রশাসনের অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন নেই। কিন্তু আমাদের অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে যেন সংস্কৃতিতে ‘উপ-সংস্কৃতি’ অনুপ্রবেশ না করে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ।
    স্থানীয় প্রশাসন যাত্রাপালা আয়োজনে সহযোগিতা না করার প্রশ্নে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেন, ‘সরকারের কোনো বাধা নেই। শুধু যাত্রার কারণে কোনো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে প্রশাসনের পূর্বানুমতি লাগে না। আমরা জেলা প্রশাসককেও চিঠি দিয়েছি

    মন্তব্য করুন