‘দেশে প্রতি চারজনের মধ্যেএকজন মানসিক রোগে ভুগছেন’
দেশে প্রতি চারজনের একজন কোনো না কোনো মানসিক রোগে ভুগছেন। প্রতি বছরই এই হার বাড়ছে। আক্রান্তদের ৯২ শতাংশ চিকিৎসার বাইরে। আক্রান্তদের বেশির ভাগই তরুণ-তরুণী।
সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে ‘মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য বিশেষ উদ্যোগ’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানানো হয়।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডা. হেলাল উদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, দেশে ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক এবং ১২ দশমিক ৬ শতাংশ শিশু-কিশোর কোনো না কোনো মানসিক রোগে ভুগছে। বেকারত্ব, হতাশা, অস্থিরতা, ব্যক্তিজীবনে অনিয়ম, বিশৃঙ্খলা, নানা চাপ, অপ্রাপ্তি, লোভ ও অবিচার তরুণদের মানসিক রোগীতে পরিণত করছে।
মূল প্রবন্ধ অনুযায়ী, দেশে প্রতি বছর গড়ে ১০ হাজারের বেশি মানুষ আত্মহত্যা করে। বিয়াল্লিশ শতাংশ গুরুতর অসুস্থ রোগী কোনো না কোনো দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতায় ভোগেন। করোনার সময় মানসিক রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। করোনার প্রথম বছরেই সারাদেশে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষ আত্মহত্যা করেছে। তাদের অনেকেই ছাত্র।
আলোচনাকালে একটি ভিডিও বার্তা দেন অটিজম ও নিউরো ডেভেলপমেন্ট ডিসঅর্ডার বিষয়ক বাংলাদেশ জাতীয় উপদেষ্টা কমিটির সভাপতি সায়মা ওয়াজেদ পুতুল। তিনি বলেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার কোনো বিকল্প নেই। তিনি সীমিত সম্পদের মাধ্যমে সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করতে প্রতিবন্ধীদের প্রতি আহ্বান জানান।
কর্মসূচি অনুযায়ী, বিশ্বে ১০০ কোটি মানুষ মানসিক রোগে ভুগছে। বিশ্বব্যাপী মোট মৃত্যুর এক-তৃতীয়াংশ আত্মহত্যার কারণে হয়। তরুণদের মধ্যে মৃত্যুর দ্বিতীয় প্রধান কারণ হল মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা।
এএইচএম এনায়েত হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, করোনার কারণে দেশে অনেকেই বিভিন্ন মানসিক সমস্যায় ভুগছেন। দেশে অনেকেই মানসিক রোগে চিকিৎসকের কাছে যান না। দেশের প্রতিটি জেলায় আলাদা মানসিক স্বাস্থ্য ইউনিট গঠন করা হবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বাংলাদেশের প্রতিনিধি ডা. বর্ধন জং রানা, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এনসিডিসি প্রোগ্রামের লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডাঃ রোবেদ আমিন উপস্থিত ছিলেন।