• বাংলা
  • English
  • জাতীয়

    দেদার আমদানিতেও ধুন্ধুমার চোরালান

    রেকর্ড ভাঙছে সোনা আমদানি। চোরাচালান আগের মতোই রয়েছে। বৈধ-অবৈধ মাধ্যমে দেশে স্বর্ণ প্রবেশের স্থানীয়ভাবে তেমন চাহিদা নেই। এর বেশির ভাগই দেশের বাইরে পাচার হচ্ছে। আর পুরো ঘটনায় জড়িত রয়েছে অনেক সিন্ডিকেট ও প্রভাবশালী ব্যক্তির নাম।

    বৈধ আমদানির অনুমোদন সত্ত্বেও দেশে স্বর্ণের ব্যবসা রয়ে গেছে চোরাচালানের ওপর নির্ভরশীল। এক সময় ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর স্বর্ণের চুরির প্রধান রুট হলেও চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দর দিন দিন ট্রানজিট হয়ে উঠছে। এ ছাড়া সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়েও চোরাই স্বর্ণ প্রবেশ করছে। যাত্রীরা বৈধভাবে স্বর্ণ আমদানি করলেও অবৈধ রুটে এখনও বড় সিন্ডিকেট সক্রিয় রয়েছে।

    এই সিন্ডিকেটের মধ্যে রয়েছে রাউজান, রাঙ্গুনিয়া, ফটিকছড়ি চক্রসহ চট্টগ্রামের আরও কয়েকটি গ্রুপ। চক্রটির নেতৃত্বে আবু আহমেদ নামে একজনসহ ১২ জন কারাগারে থাকলেও তাদের লোকজন এ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এরই মধ্যে তার ২৪টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে সাড়ে চার কোটি টাকার স্বর্ণের পাচারের তথ্য পেয়েছে সিআইডি। প্রসাধনী ও ইলেকট্রনিক্সের আড়ালে লেনদেন হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে সিআইডি। ইতিমধ্যে আবুসহ ১২ চোরাকারবারীকে আটক করেছে তারা। আটককৃতদের জবানবন্দিতে সিন্ডিকেটের অন্য সদস্যদের নামও উঠে এসেছে।

    আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, শাহজালাল বিমানবন্দরের আশেপাশে দীর্ঘদিন ধরে এক শ্রেণির অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ‘ম্যানেজ’ করে স্বর্ণের ব্যবসা চলছে। বিমানবন্দরের দায়িত্বে থাকা বিভিন্ন সরকারি সংস্থার কর্মকর্তাদের বার্তা দেওয়া হয়, চুরি করা স্বর্ণ বিমানবন্দরে প্রবেশ করলে তার সম্পূর্ণ দায়ভার তাদের নিতে হবে। চোরাই স্বর্ণ ধরা পড়লেও এর পেছনে কারা রয়েছে তা বলাই বাহুল্য। এমন কঠোর বার্তার পর শাহজালাল ছাড়া চট্টগ্রাম ও সিলেট রুট হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

    চট্টগ্রাম কাস্টমস কমিশনার ফখরুল আলম বলেন, বৈধভাবে সোনা আমদানি বেড়েছে। কিন্তু স্বর্ণও আসছে অবৈধভাবে। কাস্টমস কর্তৃপক্ষ আগের চেয়ে অনেক বেশি সতর্ক। যে কারণে একের পর এক চোরাকারবারিরা ধরা পড়ছে। শুল্ক গোয়েন্দার চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপ-পরিচালক একেএম সুলতান মাহমুদ বলেন, গডফাদাররা আত্মগোপনে রয়েছে। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আগের চেয়ে এখন অনেক বেশি সতর্ক। এ জন্য চোরাকারবারিদের নতুন কৌশল নিতে হবে।

    সিআইডির পুলিশ সুপার শাহ নেওয়াজ খালেদ জানান, স্বর্ণ উদ্ধারের পর সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা করা হয়েছে। বিবৃতির সূত্র ধরেই তদন্ত চলছে। কেন মূল আসামিদের আসামি করা হচ্ছে না তা সংশ্লিষ্ট থানাই বলতে পারবে। আবু আহমেদসহ কয়েকজন হোতাকে চিহ্নিত করে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। তবে কোনো মামলার রায় হয়নি।

    দুবাই থেকে চট্টগ্রামগামী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটের দুটি সিটের নিচ থেকে সাত কোটি টাকা মূল্যের ১০ কেজি স্বর্ণের বার উদ্ধার করেছে শুল্ক গোয়েন্দারা। শনিবার সকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তল্লাশি অভিযান চালিয়ে স্বর্ণ উদ্ধার করা হয় বলে জানিয়েছেন শুল্ক গোয়েন্দার চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপ-পরিচালক একেএম সুলতান মাহমুদ। তিনি বলেন, যাত্রীরা নামার পর ফ্লাইটে তল্লাশি চালানো হয়। এ সময় দুটি আসনের নিচে সোনার বার পাওয়া যায়। উদ্ধার হওয়া স্বর্ণের মূল্য প্রায় ছয় কোটি টাকা বলে জানান ওই কর্মকর্তা। এর আগেও একই ঘটনা ঘটেছে।

    মন্তব্য করুন