বিবিধ

দুই দিনে ২ কোটি টাকার কলা বিক্রি

চুয়াডাঙ্গা সদর থেকে বদরগঞ্জ বাজারের দূরত্ব ১০ মাইল। কাকতালীয়ভাবে জায়গাটির নামও দশমাইল। ঢাকা-চুয়াডাঙ্গা সড়কের পাশে ১০ মাইল দূরে একটি কলার হাট রয়েছে। সপ্তাহে দুই দিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত দোকান খোলা থাকে।

চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া অঞ্চলের কৃষক ও মৌসুমি ব্যবসায়ীরা কলা বাজারে নিয়ে আসেন। এই কলার গুণগত মান ভালো হওয়ায় এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। গত বছরের তুলনায় এবারের রোজায় দাম বেশি। বিক্রি বেশি।

প্রতিটি বাজারে ৫০ লাখ টাকার বেশি মূল্যের কলা বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা কলা কিনে ট্রাক বোঝাই করে মোকামে নিয়ে যাচ্ছেন। সপ্তাহে দুদিন বাজারে বিক্রি হচ্ছে এক কোটি টাকার বেশি মূল্যের কলা।

বাজারে চিনিচাপা, বগুড়ার সবরি, মেহের সাগর, কাঁঠাল, বাইশ চারিসহ বিভিন্ন ধরনের কলা পাওয়া যায়। প্রতিটি শুঁড়ের জাত ও আকার অনুযায়ী কলা বিক্রি হয় ৩৫০ থেকে এক হাজার টাকায়। সপ্তাহে দুই দিন প্রায় ৪০-৪৫ ট্রাক কলা বিক্রি হয়। চলতি মৌসুমে জেলায় ১ হাজার ৬৯৫ হেক্টর জমিতে কলা চাষ করছেন কৃষকরা।

চুয়াডাঙ্গার হাটবোয়ালিয়া গ্রামের কৃষক সোহেল হুদা। এ বছর তিনি তিন বিঘা জমিতে বগুড়ার সবরি কলা চাষ করেছেন। খুব ভালো ফলন হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার ৫০টি কান্নার কলা বাজারে বিক্রি করেন তিনি। তিনি বলেন, প্রতি টিয়ার ৫০০-৭০০ টাকায় বিক্রি করেছি, দামও বেশ ভালো।

দামুড়হুদা হোগলডাঙ্গা গ্রামের কৃষক সাইফুল ইসলাম বলেন, আমরা নিয়মিত দশমাইল বাজারে কলা নিয়ে আসি। বাজারের নিরাপত্তা ব্যবস্থা খুবই ভালো।

কুমিল্লা চাঁদপুরের ব্যবসায়ী শরীফ হাওলাদার জানান, রোজায় কলার দাম বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। তিনি ট্রাকে কলা বোঝাই করে ঢাকা, সাভার, কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন বাজারে বিক্রি করেন।

কুঁড়েঘরের ইজারাদার বাঘ জানান, এই কুঁড়েঘরের সাবরীকলা বিখ্যাত হওয়ায় চাহিদা বেশি। ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত বাজারে কলা কেনা-বেচা হয়। দশমাইল বাজার কমিটির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ মিন্টু জানান, সঠিক দাম পেয়ে কৃষকরা বাজারে কলা নিয়ে এসেছেন। কলার কুঁড়েঘর অনেক পুরনো।

কুতুবপুর ইউপি চেয়ারম্যান আলী আহমেদ হাসানুজ্জামান মানিক জানান, বাজারের পরিবেশ ভালো থাকায় কলার বাজার জমে উঠেছে। রমজান মাসে কলার চাহিদা অনেক বেড়ে যায়। প্রতিটি হাটে ২০-২৫ গাড়ি কলা কিনেছেন ব্যবসায়ীরা। সবার সহযোগিতায় বাজার সুষ্ঠুভাবে চলছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিবাস চন্দ্র সাহা জানান, চুয়াডাঙ্গায় আবহাওয়া ভালো থাকায় ও মাটির উর্বরতা ভালো হওয়ায় কলার ফলন ভালো হয়েছে। কলা চাষ লাভজনক হওয়ায় কৃষকরাও আগ্রহ দেখাচ্ছেন। কৃষকদের সব ধরনের সহযোগিতা করছে কৃষি বিভাগ।

মন্তব্য করুন