• বাংলা
  • English
  • জাতীয়

    দল পুনর্গঠনের সুযোগে নির্বাচনের প্রস্তুতি।বগুড়া বিএনপি

    বগুড়ায় অধিকাংশ কমিটি পুনর্গঠন করেছে বিএনপি। এ উপলক্ষে আগামী সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন দলের বর্তমান ও সাবেক সংসদ সদস্য এবং জেলা-উপজেলা ও কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা। পছন্দের আসনে দলীয় মনোনয়ন পেতে তৃণমূলের মতামত নিজেদের পক্ষে নেওয়ার চেষ্টা করছেন তারা। এছাড়া নির্বাচনে বিজয় নিশ্চিত করতে তাদের অনেকেই তাদের আস্থাভাজনদের নিয়ে দলের ওয়ার্ড থেকে ইউনিয়ন, পৌর ও উপজেলা পর্যায়ে কমিটি গঠনের প্রতিযোগিতায় নেমেছেন। কোথাও কোথাও উপজেলা কমিটির শীর্ষ পদও দখল করেছেন প্রার্থীরা।

    ২০১৯ সালের ১৫ মে বগুড়া জেলা বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত হওয়ার পর একই বছরের সেপ্টেম্বর থেকে সম্মেলনের মাধ্যমে ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, পৌরসভা ও উপজেলা পর্যায়ে নতুন কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়। ১০৯টি ইউনিয়নের মধ্যে ১০৫টি এবং ১২টি পৌরসভার ১০টি ইতিমধ্যে সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠন করেছে। এছাড়া ১২টি উপজেলার মধ্যে ১০টিতে সম্মেলন সম্পন্ন হয়েছে।

    জানা গেছে, বগুড়া-৩ (দুপচাঁচিয়া ও আদমদীঘি) আসনের দুপচাঁচিয়া উপজেলা এলাকায় প্রথমে জেলা সম্মেলনের মাধ্যমে দল পুনর্গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়। ১৭টি ইউনিয়ন, দুইটি পৌরসভা ও উপজেলায় নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে। নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বগুড়া-৩ আসনের দুপচাঁচিয়ায় ওই আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী হামিদুল হক চৌধুরী হিরুর আস্থাভাজন ব্যক্তিদের তৃণমূল থেকে উপজেলা পর্যন্ত সব কমিটিতে রাখা হয়েছে। পাশের আদমদীঘি উপজেলায় জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ফজলুল বারী তালুকদার বেলালের অনুসারীর সংখ্যা বেশি। তারা দুজনই আগামী নির্বাচনে দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী।

    বগুড়া-২ আসনে শিবগঞ্জে তৃণমূলের গঠিত কমিটিগুলোতে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মীর শাহে আলমের অনুসারীর সংখ্যা বেশি। আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতিও শুরু করেছেন তিনি। তবে ২০১৮ সালে মনোনয়ন পাওয়া জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি এম ইসলাম স্বাধীনও হাল ছাড়তে নারাজ।

    বগুড়া-৪ আসনের কাহালু ও নন্দীগ্রাম দুই উপজেলায় গঠিত নতুন কমিটির সবাই বর্তমান এমপি জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোশাররফ হোসেনের অনুসারী। অনুসারীদের দাবি, আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন পাওয়ার যোগ্যতার দিক থেকে অন্যদের চেয়ে এগিয়ে থাকবেন মোশাররফ হোসেন। দীর্ঘদিন ধরে দলীয় কর্মকাণ্ডে নিষ্ক্রিয় থাকা সাবেক এমপি ডা. জিয়াউল হক মোল্লাও সম্প্রতি তার এলাকায় যাতায়াত বাড়িয়েছেন। তবে ওই দুজন ছাড়াও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি সাইফুল ইসলামও মনোনয়ন চাইবেন বলে শোনা যাচ্ছে।

    বগুড়া-৪ আসনের দুই উপজেলার মধ্যে সোনাতলায় দলের সর্বস্তরে নতুন কমিটি গঠনের কাজ শেষ হয়েছে। সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আহসানুল তৈয়ব জাকির আবারো দলের উপজেলা কমিটির সভাপতির পদ ধরে রেখেছেন। তিনি মনোনয়ন চাইবেন। তবে পার্শ্ববর্তী উপজেলা সারিয়াকান্দির ১২টি ইউনিয়নে নতুন কমিটি গঠন করা হলেও পৌরসভা ও উপজেলায় এখনো কোনো সম্মেলন হয়নি। বিএনপির তৃণমূল পর্যায়ের সব কমিটিতে ওই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য কাজী রফিকুল ইসলামের অনুসারীরা জায়গা করে নিয়েছেন বলে জানা গেছে। এরই ধারাবাহিকতায় সারিয়াকান্দি পৌরসভা ও উপজেলা কমিটিও তার অনুসারীদের নিয়ন্ত্রণে থাকবে। এরই মধ্যে তিনি নিজ এলাকায় গিয়ে দলীয় নেতাকর্মী ও জনগণের সঙ্গে মতবিনিময় করছেন।

    বগুড়া-৫ আসনের শেরপুর উপজেলায় দল পুনর্গঠনের কাজ শেষ হলেও আশপাশের ধুনটে পৌরসভা ও উপজেলায় এখনো সম্মেলন হয়নি। নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শেরপুর উপজেলা কমিটি এমপি গোলাম মোহাম্মদ সিরাজের অনুসারীদের নিয়ন্ত্রণে থাকলেও তা চলে গেছে পৌর কমিটির নিয়ন্ত্রণ গ্রুপের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মাহবুবর রহমান হারেজ ও জানে আলমের হাতে। খোকা, শেরপুর পৌরসভার মেয়র মো. সম্মেলনের অপেক্ষায় পার্শ্ববর্তী ধুনট উপজেলা ও পৌর কমিটিতে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে উভয় পক্ষই এখন মরিয়া। তারা তিনজনই আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন চাইবেন। তবে এ ছাড়া বগুড়া জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট মাহবুবর রহমান ও ধুনট উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি তৌহিদুল আলম মামুনও মনোনয়নের দাবিদার।

    বগুড়া-৬ (সদর) এবং বগুড়া-৭ (গাবতলী ও শাহজাহানপুর) আসনটি জিয়া পরিবারের জন্য সংরক্ষিত। গত ২০১৮ সালের নির্বাচনেও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ওই দুটি আসনে প্রার্থী ছিলেন। তবে দুর্নীতির মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় তার প্রার্থিতা বাতিল করা হয়। জানা গেছে, খালেদা জিয়া বা জিয়া পরিবারের অন্য কেউ এবার প্রার্থী হতে না পারলে বগুড়া-৬ আসনে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক রেজাউল করিম বাদশা ও সাবেক জেলা বিএনপির সভাপতি সাইফুল ইসলাম এবং গাবতলী উপজেলা বিএনপির সভাপতি মোর্শেদ মিল্টন শাহাজানপুর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান বাদল মনোনয়ন চাইতে পারেন।

    মন্তব্য করুন