দেশজুড়ে

তিস্তার পানি বিপৎসীমা ছুঁইছুঁই, পানিবন্দি সাত হাজার পরিবার

বৃষ্টিপাত এবং উজানের প্রবাহের কারণে লালমনিরহাটে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে ব্যারেজের ডালিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার উপরে প্রবাহিত হচ্ছে। টানা দুই দিন ধরে তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার উপরে থাকায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। আজ, বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) সকাল ৬টায় পানি বিপদসীমার উপরে ১১ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে হাতীবান্ধা, কালিগঞ্জ, আদিতমারী এবং সদরের ২০টি গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ফলস্বরূপ, ৭,০০০ পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। গ্রামীণ রাস্তাঘাট, আবাদ করা আমন ক্ষেত এবং বিভিন্ন ফসল পানিতে ডুবে গেছে। পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। পানি বৃদ্ধির কারণে বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অনেকেই তাদের গৃহপালিত পশুপাখি নিয়ে বাঁধ এবং উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন। পানি প্রবাহ স্বাভাবিক রাখতে ব্যারেজের ৪৪টি স্লুইস গেট খোলা রাখা হয়েছে। পাউবো জানিয়েছে, আগামী দুই দিন এ অঞ্চলে ভারি বর্ষণ ও উজান থেকে বয়ে যাওয়া অব্যাহত থাকতে পারে। এতে লালমনিরহাট, নীলফামারী, গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রামে স্বল্পমেয়াদি বন্যার আশঙ্কা রয়েছে। বন্যা সতর্কীকরণ কেন্দ্রের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপদসীমার ২০ সেন্টিমিটার এবং ধরলা নদীর শিমুলবাড়ি পয়েন্টে ১০ সেন্টিমিটার নিচে প্রবাহিত হচ্ছে। জেলার পাটগ্রাম, হাতীবান্ধা, কালীগঞ্জ, আদিতমারী ও সদর উপজেলার চর ও নিচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বিশেষ করে পাটগ্রাম, হাতীবান্ধার গড্ডিমারী, দোয়ানী, ছায়ানী, সানিয়াজান, সিংগামারী, সিন্দুরনা, হলদিবাড়ী, দৌয়াবাড়ী; কালীগঞ্জের বটমারী, শৈলমারী, নোহালী; আদিতমারীর মহিষখোচা, গোবর্ধন, কালমাটি, বাহাদুরপাড়া, পলাশী এবং সদর উপজেলার ফলিমারি, খুনিয়াগাছ, কুলাঘাট, মোগলহাট, রাজপুর, বড়বাড়ি এবং গোকুন্ডা ইউনিয়নে পানি প্রবেশ করেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, সৌর প্যানেল স্থাপনের ফলে নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়েছে এবং পানি এলাকায় প্রবেশ করছে, যা বাঁধ ও বসতি স্থাপনের জন্য হুমকিস্বরূপ। দক্ষিণ ভোটমারী এলাকার বাসিন্দা শাহ আলম বলেন, সৌর প্যানেলের কারণে এলাকার রাস্তা ও বাঁধের উপর পানির চাপ বাড়ছে। এগুলো রক্ষা না করলে হাজার হাজার বসতি ও ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়ে যাবে। জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শুনিল কুমার রায় বলেন, উজানে অব্যাহত ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে আগামী দুই দিন নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে। পরিস্থিতি এবং ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধগুলো সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। অন্যদিকে, জেলা প্রশাসক এইচএম রকিব হায়দার বলেন, ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করতে ইউএনওদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তালিকাটি সম্পূর্ণ হয়ে গেলে, ত্রাণ এবং সহায়তা দ্রুত পৌঁছে দেওয়া হবে।