আন্তর্জাতিক

তালেবানরা আফগানিস্তানের প্রাদেশিক রাজধানী দখল নিতে যাচ্ছে

আফগানিস্তানের দক্ষিণ হেলমান্দ প্রদেশের রাজধানী লস্করগাহ দখল করতে চলেছে মার্কিন ও আফগান বাহিনীর সঙ্গে তীব্র সংঘর্ষের পর তালেবানরা।

তালেবানরা লস্করগাহের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করলে প্রথমবারের মতো একটি বড় আফগান শহর পতন হবে। এবং এটি আফগান সরকারের জন্য একটি “বড় ধাক্কা” হবে।

২০বছরের আগ্রাসনের পর, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ন্যাটো ৩১ আগস্ট থেকে আফগানিস্তান থেকে সমস্ত সৈন্য প্রত্যাহারের চূড়ান্ত প্রক্রিয়া শুরু করে।

মে মাসে এই প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর থেকে তালেবানরা আফগানিস্তানে সরকারি বাহিনীর ওপর হামলা এবং বিভিন্ন এলাকার নিয়ন্ত্রণ ফিরে পেতে অভিযান বাড়িয়েছে।

আফগানিস্তানের হেলমান্দ ছাড়াও হেরাত এবং কান্দাহার নিয়ন্ত্রণের জন্য তালেবানরা মারাত্মকভাবে লড়াই করছে।

সোমবার যৌথ আফগান-মার্কিন বাহিনী তালেবানদের লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালায়। কিন্তু তালেবানরা ছাড়ছে না। তারা পাল্টা আক্রমণ করছে এবং আফগান সেনাবাহিনীকে পরাজিত করছে।

আফগান সেনাবাহিনীর মেজর জেনারেল সামি সাদাত বলেন, “যদি তালেবান এখানে জয়ী হয়, তাহলে তা বিশ্ব নিরাপত্তার জন্য ভয়াবহ পরিণতি বয়ে আনবে।”

আফগানিস্তানের তথ্য মন্ত্রণালয় বলছে, তালেবানের অব্যাহত হামলা ও হুমকির কারণে হেলমান্দ প্রদেশে ১১ টি রেডিও স্টেশন এবং চারটি টিভি স্টেশন সম্প্রচার বন্ধ করে দিয়েছে।

আফগানিস্তানের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর কান্দাহার বিমানবন্দরে তালেবানদের রকেট হামলার পর যৌথ বাহিনী একটি বড় অভিযান শুরু করে।

তালেবানরা কান্দাহারের একটি টিভি স্টেশন দখল করেছে। প্রচণ্ড লড়াইয়ে পথ হারিয়ে মানুষ গ্রামের দিকে ছুটছে, বড় বড় ভবনের পেছনে নিজেদের জীবন বাঁচানোর চেষ্টা করছে।

আফগানিস্তানের পশ্চিমাঞ্চলীয় হেরাত প্রদেশে জাতিসংঘের ঘাঁটিতে শুক্রবার তালেবান হামলা চালায়। তবে আফগান ও মার্কিন বাহিনীর যৌথ অভিযানে বেশ কিছু এলাকা খালি করা হয়েছে বলে।

সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে আসা ভিডিওতে দেখা যায়, হেরাতের একটি শহরের বাসিন্দারা রাস্তায় এবং ভবনের ছাদে দাঁড়িয়ে একসাথে “আল্লাহু আকবর” জপ করছে।

তালেবানদের কাছে পরাজিত আফগান সরকার পরিস্থিতির জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করে।

দেশটির প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি পার্লামেন্টে বলেছেন, “আফগানিস্তান থেকে দ্রুত সেনা প্রত্যাহারের কারণে আজকের পরিস্থিতি।” আমি পরিস্থিতি সম্পর্কে ওয়াশিংটনকে আগেই সতর্ক করে দিয়েছিলাম। ”

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য পাকিস্তান সীমান্তবর্তী একটি দখলকৃত শহরে বেসামরিক লোকদের হত্যা করে তালেবানদের সম্ভাব্য যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ করেছে।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিনকেন বলেছেন, তালেবানের নৃশংসতা অগ্রহণযোগ্য। তারা যা করছে তা কেবল প্রতিশোধ হত্যাকাণ্ড।

আফগানিস্তানে সহিংসতার পরিপ্রেক্ষিতে, বাইডেন প্রশাসন বলেছে যে তারা মার্কিন বাহিনীর সাথে কাজ করা হাজার হাজার আফগান শরণার্থীকে যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় দেবে।

মন্তব্য করুন