তারেকের মামলায় ধীরগতি, দিন দিন বাড়ছে নেতাকর্মীদের ক্ষোভ
শেখ হাসিনার সরকারের দীর্ঘ সময়কালে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নামে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে একের পর এক মামলা হয়েছে। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, তার বিরুদ্ধে মামলার সংখ্যা অন্তত ৮৭টি। বিএনপির মতে, এসব মামলার বেশির ভাগই সরকারি দলের ইন্ধনে। এক কথায় রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে প্রধান বিরোধী দলকে দমন করার ঘৃণ্য উদ্দেশ্য নিয়ে। এ সময় তারেক রহমানের চারটি মামলায় সাজা ও রায় ঘোষণা করা হয়। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা হয়। নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পর আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে যেসব নেতাকর্মী, সংগঠক, সাংবাদিক ও ভিন্নমতাবলম্বীদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল সেগুলো দ্রুত নিষ্পত্তি করা হচ্ছে। . অনেকে মুক্তি পেয়েছে, অনেকের সাজা বাতিল হয়েছে। কিন্তু তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মামলা নিয়ে তেমন কোনো উদ্যোগ দৃশ্যমান নয়। সম্প্রতি হাইকোর্টে চারটি মামলা খারিজ হয়েছে। এ ছাড়া বাকি মামলা নিষ্পত্তি বা প্রত্যাহারের দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নেই। এতে তারেক রহমানের দেশে ফিরতে বিলম্ব হতে পারে। এ কারণে দিন দিন ক্ষোভ ও উৎকণ্ঠা ছড়িয়ে পড়ছে বিএনপি ও সমমনা রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে। তাদের মতে, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফিরতে তারেক রহমানকে যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফিরিয়ে আনা জরুরি হয়ে পড়েছে। সেই অপেক্ষায় রয়েছেন বিএনপির নেতাকর্মী-সমর্থকরাও।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের আইনজীবীরা বলেছেন, তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা তিনি আইনিভাবে মোকাবেলা করবেন। তাদের আশা সব মামলা মোকাবেলা করে শিগগিরই দেশে ফিরবেন তারেক রহমান। এদিকে, আইনবিদরা বলছেন, ফৌজদারি কার্যবিধি, ১৮৮৯ এর ধারা ৪০১ এর উপ-ধারা ১ এর বিধান অনুসারে, সরকার যে কোনও ব্যক্তিকে স্থগিত বা প্রত্যাহার করার ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারে। তারেক রহমানের ক্ষেত্রেও তা প্রয়োগের সুযোগ রয়েছে।
তারেক রহমানের দেশে ফেরার আইনি বাধা দূর করতে বিএনপি কী করছে জানতে চাইলে দলের আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, তারেক রহমান আইন, সংবিধান, সিআরপিসি ও আদালতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই আইনগতভাবে সব মামলা মোকাবেলা করে তিনি যথাসময়ে দেশে ফিরবেন। এই আইনজীবী আরও বলেন, বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে হাজার হাজার মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার করে তার বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহার করতে চান তিনি।
ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, ওয়ান ইলেভেন সরকারের আমলে করা মামলার জবানবন্দিতে তারেক রহমানের নাম ছিল না। তাকে শন অ্যারেস্ট দেখানো হয়। সেসব মামলা প্রত্যাহার করা হচ্ছে। এছাড়া দেশের বিভিন্ন জেলায় তার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও মানহানির মামলা হয়েছে। এসব মামলার বাদী অনেকেই মারা গেছেন, কেউ প্রত্যাহার করছেন। আবার আদালত খারিজ করছে। তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মোট ৮০ থেকে ৮২টি মামলা রয়েছে বলে জানান তিনি।
বিএনপির আইনজীবীরা বলেন, মামলাগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হওয়ায় সরকার চাইলে তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দিতে পারে। মুক্তি পেলে তারেক রহমানের দেশে ফিরতে কোনো বাধা নেই।