বিনোদন

তাপস-মুন্নি ও গানবাংলা নিয়ে মুখ খুললেন ন্যান্সি

শেখ হাসিনার পতনের পর অনেক নির্যাতিত মানুষ মুখ খুলতে শুরু করেছে। শিল্পীরাও সেই দলে। জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত কণ্ঠশিল্পী নাজমুন মুনিরা ন্যান্সি তাদের একজন।

গত ২০ আগস্ট দেশের কয়েকটি টিভি চ্যানেলের মালিকানা ও পরিচালনা পর্ষদ পরিবর্তনের দাবি জানান তিনি। গানের বাংলা চ্যানেলে ‘প্রাণ বাংলা’ লিখে চ্যানেলের প্রতি ক্ষোভও প্রকাশ করেন এই গায়ীকা।

সোশ্যাল মিডিয়ায় ন্যান্সি লিখেছেন, এদেশে প্রাণ বাংলা নামে একটি মিউজিক চ্যানেল ছিল। চ্যানেলে তানসেনকে সাদা পোশাকে দেখানো হয়েছে। তানসেনের এক পুত্রবধূ ছিল। চ্যানেলটিতে অনেক স্বদেশী শিল্পী ছিলেন। বউটি ছিলেন সেই শিল্পীদের আদরের কন্যা। চ্যানেলটির এত শৈল্পিকতা ছিল যে এটি সারা রাত ধরে গান নিয়ে গবেষণা করত, যা জাতি সোশ্যাল মিডিয়ার জন্য লাইভ দেখতে এবং শুনতে পেত।

গান বাংলা চ্যানেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কৌশিক হোসেন তাপস। তাপসের ব্যান্ড তাপস অ্যান্ড ফ্রেন্ডস-এর প্রতি কটাক্ষ করে ন্যান্সি লিখেছেন, তানসেন অ্যান্ড ফ্রেন্ডস সারা বছর হেলিকপ্টারে চড়ে বাংলার সব প্রান্তে জয় বাংলা কনসার্ট পরিবেশন করে দর্শকদের মুগ্ধ করার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। তানসেনের খালি কন্ঠে গাওয়া ‘দে তালি বাঙালি’ গানটিতে, ভারতে পালিয়ে যাওয়া নেতা ‘পালায় না’ বলার পরেও হাততালি দিয়েছিলেন। নেতার অনুসারীরা প্রায়ই বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তাদের মরিচা কণ্ঠস্বর চিৎকার করতে এবং করতালি পেতে কালো রঙের চ্যানেলে যেতেন।

চ্যানেলের অর্থায়নের উৎস কোথায়? এমন প্রশ্ন তুলে তিনি লিখেছেন, ‘দিনবদলের হাওয়া’ নামের একটি নিয়মিত অনুষ্ঠান বিদেশ থেকে একদল যন্ত্রশিল্পীকে নিয়ে স্থানীয় শিল্পীদের একত্রিত করে তানসেন ও তানসেন পরিবার ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে উপহার দিয়েছে। নতুন আঙ্গিকে পুরনো গানের পরিবেশনা নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবিদার। কিন্তু প্রতিটি গানে তানসেনের অবাঞ্ছিত উপস্থিতি শ্রোতাদের মধ্যে দারুণ বিরক্তির সৃষ্টি করে। চ্যানেলের নিয়মিত অনুষ্ঠান বাদ দিয়ে তানসেন ও তার স্ত্রী এত টাকা পায় কোথা থেকে, সেইসব সবুজ প্রশ্ন আমাদের অজ্ঞ মনে প্রায়ই জাগে।

সম্প্রতি বেশ কয়েকটি টিভি চ্যানেলে হামলা ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। কয়েকটি চ্যানেল বন্ধের দাবি উঠেছে। তাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে ন্যান্সি লিখেছেন, এখন কিছু টিভি চ্যানেল বন্ধের জোর দাবি উঠেছে। অতীতে আমি বা আমরা কিছু বিতর্কিত চ্যানেলের আধিপত্যে ছিলাম। তবে আমি ব্যক্তিগতভাবে কোনো টিভি চ্যানেল বন্ধ করার পক্ষে নই। বরং বিতর্কিত চ্যানেলগুলোর মালিকানা ও পরিচালনা পর্ষদ পরিবর্তন করুন। কারণ বিগত সরকারের আমলে অনেক চ্যানেলের মালিকানা হস্তান্তর করা হয়েছিল, এমনকি অনেককে তাদের প্রতিষ্ঠান থেকে জোরপূর্বক উচ্ছেদ করা হয়েছিল। শোনা যাচ্ছে, ‘প্রাণ বাংলা’ নামের বাংলাদেশের একমাত্র মিউজিক চ্যানেলটি আসল মালিকের কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। চ্যানেলগুলোকে সরকারি চাটুকারিতা ও রাজনীতি থেকে মুক্ত করতে হবে।

বর্তমান বিটিভির প্রশংসা করে তিনি লিখেছেন, যারা বিটিভির জন্য কান্নাকাটি করছিলেন, তারা অন্তত আগামী কয়েকদিন বিটিভি দেখুন। ‘এমন দেশ চাইছিলাম’, ‘এতো অল্প সময়ে কীভাবে বিটিভির সম্প্রচারের মান এতটা উন্নত হলো’ বলবেন না।

উল্লেখ্য, অনেক জনপ্রিয় গানের শিল্পী ন্যান্সি দীর্ঘদিন ধরে নিখোঁজ ছিলেন। বিএনপির রাজনীতিতে জড়িত থাকায় তাকে নানাভাবে হয়রানির শিকার হতে হয়েছে। 21 অক্টোবর, 2013, এই শিল্পী ফেসবুকে তার রাজনৈতিক অবস্থান ঘোষণা করেন। সেখানে বিএনপিকে সমর্থন জানানোর পাশাপাশি তিনি বেগম খালেদা জিয়ার প্রশংসা করেন। এরপর পুলিশ তার বাড়িতে অভিযান চালায়। তার দাবি, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দীর্ঘদিন স্টেজ শো থেকে বঞ্চিত ছিলেন এই শিল্পী।