• বাংলা
  • English
  • বিবিধ

    তাদের ‘কাজ’ হ’ল মোটা অঙ্কের অর্থ ছিনিয়ে নেওয়া।।এখনও পর্যন্ত ১৭ জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে

    ১২ জানুয়ারী, পুরান ঢাকার লালবাগ এতিমখানার ভাতের গলিতে একটি প্রাইভেট গাড়িতে করে হঠাৎ করে একজনকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। তিনি হলেন একেএম জাহাঙ্গীর হাসান, ম্যানেজার, সাজ প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রিজ। উত্তরা ব্যাংকের আজিমপুর শাখা থেকে টাকা তুলে তিনি রিকশায় করে অফিসে ফিরছিলেন। পরে সোনারগাঁয়ের মদনপুর এলাকায় তাকে চোখ বাধাঁ অবস্হায়  ফেলে যায়। তার কাছে থেকে ছিনতাই করা হয় তিন লাখ ২০ হাজার টাকা।

    ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, আশুলিয়া ও সাভার অঞ্চলে এ ধরনের ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘন ঘন ঘটে থাকে। একটি চক্র প্রায় এক দশক ধরে এমন অপরাধ করে আসছে। সম্প্রতি রিংলিডার মামুন খানসহ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত তিনটি ব্যক্তিগত গাড়ি জব্দ করা হয়েছে। গাড়িতে উঠার পরে কেউ যদি  বাধা দেয় তবে তারা শ্বাসরোধে হত্যা করতেও দ্বিধা করেন না।

    মামুন ছাড়াও ঢাকা মহানগর পুলিশের লালবাগ বিভাগ রাজধানীসহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ইমরান হোসেন, মোহাম্মদ আলী, আহমেদ আলী, জাহাঙ্গীর আলম ও আল আমিনকে গ্রেপ্তার করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, তারা এই ছিনতাই চক্রের সদস্য। এখনও পর্যন্ত মামুনের ছিনতাই চক্রে সরাসরি জড়িত এমন ১৭ জনের নাম পাওয়া গেছে।

    পুলিশ লালবাগ বিভাগের জেলা প্রশাসক (ডিসি) বিপ্লব বিজয় তালুকদার  বলেছেন, লালবাগের একটি ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে  বড় ধরনের  ছিনতাই চক্রের খোজ পাওয়া গেছে। তারা ঢাকাসহ তিনটি জেলায় সক্রিয় রয়েছে। যারা বড় লেনদেন করেন তাদের টার্গেট করে। এই চক্রের আরও কয়েকজন সদস্যকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

    পুলিশ জানিয়েছে, জাহাঙ্গীরের মামলার তদন্তকালে প্রায় ৫৭ হাজার মোবাইল নম্বর এবং ৭৭ টি সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করা হয়। এর পরে ছিনতাইয়ের চক্রের গল্পটি বেরিয়ে আসে। মামুন খান এই চক্রের নেতা। তিনি মিরপুর -১০ সেকশনে থাকতেন। ছিনতাইয়ের বিশ্বে গুরু হিসাবে পরিচিত মামুনের অন্তত আটটি ছদ্মনাম রয়েছে। তিনি ‘বুলেট বিপ্লব’ নামে বেশি পরিচিত।

    তদন্তের সাথে জড়িত একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তিনি শ্যামল, মামুন খান, রোমান, রুমান, ওয়াকিল, ওয়াকিল সুলতান, সুলতান, মোহাম্মদ আলী এবং বুলেট বিপ্লব নামে পরিচিত ছিলেন। কখনও কখনও তারা লক্ষ্যযুক্ত ব্যক্তিদের ব্যক্তিগত গাড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্য গোয়েন্দা পুলিশ এবং র‌্যাব হিসেবে পরিচয়  দেয়। তারা আইন প্রয়োগের আকারে জ্যাকেট এবং ওয়াকি-টকিজ ব্যবহার করে। ভয় দেখানোর জন্য খেলনা পিস্তল, ধারালো  ছুরিও রয়েছে। বুলেট বিপ্লব প্রতিটি ক্রিয়াকলাপের আগে দলের সদস্যদের জন্য নতুন মোবাইল এবং সিম নম্বর সরবরাহ করে। সমস্ত ক্রিয়াকলাপের আগে প্রতিটি সদস্যকে একটি নতুন ছদ্মনাম দেওয়া হয়। ঘটনার ভূমিকা অনুযায়ী অর্থ ভাগ করা হয়।

    মন্তব্য করুন