• বাংলা
  • English
  • জাতীয়

    তদন্ত প্রতিবেদনে ঈশ্বরদীর ওই কৃষকরাই দায়ী।ঋণ পরিশোধ করলে মামলা থেকে রেহাই পাবেন

    পাবনার ঈশ্বরদীতে ঋণ পরিশোধ না করায় ১২ কৃষককে আটকের তদন্ত শেষ করেছে বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংক। এর জন্য কৃষকদের দায়ী করা হয়েছে। ব্যাংকের উপ-মহাব্যবস্থাপক এবং তদন্ত দলের প্রধান (পরিদর্শন ও আইন) আহসানুল গণি শুক্রবার এ দাবি করেন, প্রতিষ্ঠানের মাঠকর্মী বা কর্মকর্তাদের কারও অন্যায় বা অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এর আগে বুধবার কোম্পানির মহাব্যবস্থাপকের কাছে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয় বলে জানান তিনি। এ অবস্থায় ঋণের টাকা পুরোপুরি পরিশোধ না হওয়া পর্যন্ত মামলা চলবে।

    আহসানুল গণি বলেন, কৃষকরা নির্দোষ হলে মামলা হতো না। সময়মতো টাকা পরিশোধ না করায় মামলা করা হয়। আইন অনুযায়ী ১২ জনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। তবে ঋণ পরিশোধ করেও তিনি জেলে গেছেন- এমন অভিযোগ সত্য নয়। কৃষকরা জানান, তারা সমিতির সভাপতির কাছে ঋণের টাকা পরিশোধ করলেও রশিদ কারো কাছে নেই। সব জমার রশিদ কেউ দেখাতে পারেনি। এতে সমিতির সভাপতি বা সম্পাদকের অবহেলা থাকতে পারে। এর দায় ব্যাংক নেবে না। এখন মামলা স্বাভাবিক গতিতে চলবে। টাকা না দিলে পরিত্রাণের উপায় নেই।

    তিনি জানান, ২০১৬ সালে উপজেলার ভাড়াইমারী উত্তরপাড়া সবজি চাষী সমবায় সমিতির ৪০ জন কৃষককে ১৬ লাখ টাকা ঋণ দেওয়া হয়। প্রত্যেকে পান ৪০ হাজার টাকা। সময়মতো ঋণ ও সুদ পরিশোধ না করার কারণে, ৩৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে এবং দায় নিষ্পত্তি করায় তিনজনকে জড়িত করা হয়নি।

    এদিকে তদন্ত প্রতিবেদনে হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অভিযুক্ত কৃষকরা। সমিতির সভাপতি বিলকিস আক্তার বলেন, আমরা ১৬ লাখ ঋণ নিয়ে ১৩ লাখ টাকা পরিশোধ করেছি। পরে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আরও ১৩ লাখ টাকা দাবি করে এবং টাকা না দেওয়ায় মামলা করে। জমার রশিদ তাদের কাছে থাকতে হবে। কৃষকদের ভালো ঘর নেই; ঋণের কাগজ কীভাবে সংরক্ষণ করবেন! তা ছাড়া তারা কৃষকদের কাছে ১৫ শতাংশ সুদ দাবি করছেন?

    ভারিমারীর কৃষক সিদ্দিকুর রহমান ময়েজ বলেন, আমাদের পেটে খিদে নেই। আপনি যদি এক বেলা খেতে পারেন তবে আপনি অন্য খাবার খেতে পারবেন না। অধিকাংশ কৃষকের ঘরবাড়ি ভেঙ্গে গেছে। লোনের টাকা জমার রশিদটি বেড়ার ভাঁজে, বাড়ির খুঁটির সাথে রেখেছিলাম। এখন তদন্ত কমিটি চাইলে তাদের দেব কিভাবে? সেই কাগজ দেখাতে পারি না বলেই আমাদের ঋণখেলাপি বলা হয়; তদন্তে দোষী সাব্যস্ত।

    কৃষকদের মামলাটি পরিচালনা করছেন জেলা জজ আদালতের আইনজীবী খন্দকার মাহবুব আহমেদ রিটন। তিনি বলেন, বাদীর দাবি অনুযায়ী এরই মধ্যে ব্যাংকের বকেয়া টাকা পরিশোধের ব্যবস্থা করা হয়েছে। শিগগিরই দায় পরিশোধ করা হবে। সে পর্যন্ত মামলার কার্যক্রম চলবে। টাকা দিলে তা বরখাস্ত করা হবে।

    মন্তব্য করুন