ঢাকা প্রায় সব হাসপাতালেই করোনার চিকিৎসা
রাজধানীর প্রায় সমস্ত সরকারী হাসপাতাল করোন ভাইরাসযুক্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য সংযুক্ত করা হচ্ছে। ভয়াবহ সংক্রমণের চাপ সামাল দিতে স্বাস্থ্য বিভাগ কর্তৃপক্ষ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই সিদ্ধান্তটি বাস্তবায়িত হলে করোনার চিকিৎসা আনুষ্ঠানিকভাবে রাজধানীতে ৩,৫৮০ শয্যা, রাজধানীর উপকণ্ঠে ৭০ এবং তিনটি জেলায় ২৫০ শয্যা সহ মোট ৩,৯০০ শয্যা বাড়বে।
জাতীয় অর্থোপেডিক পুনর্বাসন ইনস্টিটিউট (এনআইটিওআর), জাতীয় নাক কান ও গলা ইনস্টিটিউট এবং জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ছাড়াও রাজধানীর অন্যান্য সরকারী হাসপাতাল করোনার রোগীদের চিকিৎসায় জড়িত থাকবে।
প্রতিটি হাসপাতালকে স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে এ বিষয়ে নির্দেশনা প্রেরণের মাধ্যমে প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদফতরের একটি প্রতিনিধি দল ঘটনাস্থলে হাসপাতালের প্রস্তুতি পরিদর্শন করছে। কোভিড -১৯ ডেডিকেটেড বেডটি প্রস্তুত করতে কত জনশক্তি এবং চিকিৎসার সরঞ্জাম প্রয়োজন তা নিয়ে একটি তালিকা তৈরি করা হচ্ছে।
বর্তমানে রাজধানীতে সরকারী পরিচালিত করোনার রোগীদের জন্য ২,৯১৮ শয্যা এবং ১,৪৮২ ব্যক্তিগত শয্যা রয়েছে। এবং সারা দেশে ছয় হাজার ৬৩৬ টি শয্যা রয়েছে। যদি এই নতুন শয্যা যুক্ত করা হয় তবে এই সংখ্যাটি ১৪,৮৬৮ টিতে দাড়াবে। একই সঙ্গে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের সরকারী হাসপাতালে করোনার ইউনিট চালু করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পৃথক বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সরকারের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হলে করোনভাইরাস সংক্রামিত রোগীদের চিকিৎসা দ্রুত হবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন যে রোগী বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে রাজধানীর তিনটি সরকারী হাসপাতাল এবং সিটি করপোরেশনের অন্তর্ভুক্ত তিনটি হাসপাতাল ছাড়াও সবগুলি করোনার রোগীদের চিকিৎসার সাথে যুক্ত করা হচ্ছে। এছাড়াও, ইতিমধ্যে করোনার চিকিৎসা সহ হাসপাতালে শয্যা সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে। তিনি বলেন যে নতুন হাসপাতাল যেগুলি করোনার রোগীদের চিকিৎসা যুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চালু করা হবে।
রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে প্রাথমিকভাবে আরও ১০০ শয্যা থাকার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে এই হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা ৫০০-এ উন্নীত করা হচ্ছে। জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ২০০ শয্যা বাড়ানো হচ্ছে। শ্যামলী আড়াইশো শয্যা বিশিষ্ট টিবি হাসপাতাল, জাতীয় হার্ট ইনস্টিটিউট, মিরপুর লালকুঠি মাতৃ ও শিশু হাসপাতাল এবং কমলাপুর রেলওয়ে জেনারেল হাসপাতালের প্রত্যেককে ১৫০ শয্যা বাড়ানো হচ্ছে।
জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট, কিডনি রোগ ও ইউরোলজি জাতীয় ইনস্টিটিউট, জাতীয় ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স, শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট, মহানগর জেনারেল হাসপাতাল এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি শয্যা রয়েছে। এবং সংক্রামক রোগের হাসপাতালটি ১০ থেকে ৫০ শয্যা পর্যন্ত বাড়ানো হচ্ছে। রাজধানীর উপকণ্ঠে কেরানীগঞ্জের জিনজিরাতে ২০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালটি করোনার চিকিৎসার জন্য ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। নারায়ণগঞ্জের খানপুর হাসপাতালে আরও ৫০ টি শয্যা থাকবে। গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দিন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতাল ও জামালপুরের শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালও আড়াইশ শয্যাবিশিষ্ট বাড়ছে।
৫০০ শয্যাবিশিষ্ট মুগদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালও ৩০টি শয্যা বাড়ানো হয়েছে।