শিক্ষা

ঢাকা কলেজে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ১৫ জন আহত

ঢাকা কলেজে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার রাত সাড়ে আটটা নাগাদ কলেজের নর্থ ও সাউথ ব্লক হোস্টেলের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

প্রায় দুই ঘণ্টা পর সাড়ে দশটার দিকে সংঘর্ষ থামে। এতে ১৫-২০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে তাদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, শনিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে সাউথ ব্লকের আল আমিন নামে এক ছাত্রকে একা পেয়ে নর্থ ব্লকের কয়েকজন ছাত্র তাকে মারধর করে। পরে এ খবর ছড়িয়ে পড়লে উভয় গ্রুপ দেশীয় অস্ত্র, লাঠি, রড, রামদা নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে বলে কলেজের একাধিক শিক্ষার্থী জানান।

ঘটনার বিষয়ে জানতে ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ ইউসুফের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, সিনিয়ররা নিজেদের মধ্যে বিষয়টি মিমাংসা করেছেন। তাই রাতে ঝামেলার ভয় নেই। সবাই যার যার হোস্টেল রুমে ফিরে গেল।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সাউথ ব্লকের এক ছাত্র দাবি করেন, দীর্ঘদিন ধরে কলেজের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়া (ঢাকা কলেজ ক্যাফেটেরিয়া) নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিরোধ চলছিল। মাসখানেক আগে তাদের হল থেকে এক ভাই লিজ নিয়েছিলেন। বাইরের কেউ ক্যান্টিনে নিলে হলের ছাত্ররা খায়, বেতন কম। কিন্তু হলের ভাই হওয়ায় তারা কম টাকা দিতে পারেনি, চাঁদাবাজি করতে পারেনি। রাগের শুরু এখান থেকেই।

তিনি বলেন, গত বৃহস্পতিবার ক্যান্টিনে খাওয়ার টাকা না দেওয়ায় নর্থ ব্লকের ছাত্রলীগ কর্মী শাহরিয়ার হাসান জিওনকে সাধারণ ছাত্ররা মারধর করে এবং ক্যান্টিন ম্যানেজার টাকা চাওয়ায় ক্যান্টিনে তালা ঝুলিয়ে দেয়। সে কলেজের ২০১৬-১৭ সেশনের ছাত্র এই ঘটনায় ওই ব্লকের ছাত্ররা আলামিনকে মারধর করে। এই সংঘর্ষ মূলত ক্যান্টিন নিয়ে।

এর আগে ২০ এপ্রিল সায়েন্স ল্যাবের বায়তুল মামুর মসজিদ মার্কেট এলাকার একটি দোকান থেকে আট পাঞ্জাবি তুলে নিয়ে টাকা না দেওয়ায় জিয়নসহ আরও ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়। এ ঘটনায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

কলেজ ছাত্রলীগের নেতা ফুয়াদ হাসান বলেন, জুনিয়রদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির কারণে ঝামেলা হয়েছে। প্রশাসনের সহযোগিতায় যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, ঢাকা কলেজে দীর্ঘদিন ধরে ছাত্রলীগের কমিটি নেই। ২০১৩ সালের ২৯ নভেম্বর রাতে ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে একজন নিহত হন। এ ঘটনায় গত ৩০ নভেম্বর ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি স্থগিত করা হয়। ওই কমিটির সভাপতি ছিলেন ফুয়াদ হাসান পল্লব এবং সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন সাকিব হাসান সোয়াম।

২০১৬ সালের ১৭ নভেম্বর নূরে আলম ভূঁইয়া রাজুকে তিন মাসের, তৎকালীন ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসেনকে আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন দেন। এরপর ২০১৭ সালের ২২ জানুয়ারি দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় ঢাকা কলেজ শাখার আহ্বায়কসহ ১৯ নেতাকর্মীকে বহিষ্কার করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।

ওই কমিটিতে যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন ফুয়াদ। গত ১৪ মে ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় জানান, শিগগিরই ঢাকা কলেজে কমিটি ঘোষণা করা হবে, কিন্তু এখন পর্যন্ত তা দেখা যায়নি।

মন্তব্য করুন