• বাংলা
  • English
  • জাতীয়

    ঢাকা ও বেইজিংয়ের মধ্যে সম্পর্ক জোরদার করার লক্ষ্য

    ছাত্র-জনতার বিদ্রোহের মুখে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্রের দায়িত্ব নেয়। বাংলাদেশে একটি বড় রাজনৈতিক পরিবর্তন এবং ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় আসার পর, ঢাকা ও নয়াদিল্লির মধ্যে সম্পর্ক যথেষ্ট ঠান্ডা হয়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন ২১ থেকে ২৫ জানুয়ারি চীন সফর করবেন। সফরের প্রস্তুতি হিসেবে ইতোমধ্যে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক হয়েছে।

    সূত্র বলছে, বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক আরও গভীর করাই এই সফরের লক্ষ্য। বর্তমান বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার করা শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, চীনের জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। যদিও ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন এই সরকার শুধু চীনের সঙ্গে নয়, সব দেশের সঙ্গে ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখার নীতি নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে।

    চীনের ওপর বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান নির্ভরতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে যুক্তরাষ্ট্র, ভারত ও ইইউভুক্ত দেশগুলো। কিন্তু বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রকল্পের ঋণের মূল উৎস হয়ে উঠেছে চীন।

    অন্যদিকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকে প্রতিবেশী ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক ঠাণ্ডা। শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর ভারত তাকে আশ্রয় দেওয়ার বিষয়টি বাংলাদেশের জন্য ক্ষোভের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এ ছাড়া অতিরিক্ত হাসিনা-সদৃশ মনোভাবও ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের অন্তরায়। এরই মধ্যে শেখ হাসিনাকে ফেরানোর দাবি জানিয়ে কূটনৈতিক নোট পাঠিয়েছে বাংলাদেশ। নয়াদিল্লি এখনও পর্যন্ত সেই চিঠির জবাব দেয়নি।

    সূত্র জানায়, হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশের বাস্তবতা মেনে নিতে এবং হাসিনা ইস্যুকে প্রাসঙ্গিক রেখে সম্পর্ককে সমান্তরালভাবে এগিয়ে নিতে ভারত থেকে বার্তা এসেছে। উভয় প্রতিবেশী পারস্পরিক আস্থা বৃদ্ধি এবং স্থিতিশীলতাকে স্বীকৃতি দিতে আগ্রহ দেখিয়েছে। দুই দেশের সমৃদ্ধি ও সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সহযোগিতা করার ইচ্ছাও স্পষ্ট হয়েছে। পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠকসহ সাম্প্রতিক কূটনৈতিক বিনিময় ইঙ্গিত দেয় যে দুই দেশ তাদের সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া বিরোধের সমস্যা সমাধানে দুই দেশের কূটনৈতিক আচরণও ইতিবাচক বলে মনে করা হচ্ছে।

    ১ জানুয়ারি, পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন স্পষ্টভাবে বলেছিলেন যে ২০২৫ সালে এই তিনটি প্রধান শক্তি – মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ভারত এবং চীন – এর সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। এবং দিল্লির সাথে ঢাকার সম্পর্ক শুধুমাত্র একটি ইস্যুতে সীমাবদ্ধ থাকবে না। , কিন্তু আরো প্রসারিত হবে. কিন্তু ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের বিষয়টি সমাধান না হলে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক কীভাবে এগোবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, অবশ্যই এটি একটি ইস্যু, আমাদের মধ্যে আরও অনেক দ্বিপাক্ষিক সমস্যা রয়েছে। আমি মনে করি দুই পক্ষ একযোগে সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যাবে। পারস্পরিক স্বার্থের অনেক বিষয় রয়েছে। আমরা এক এক করে এসব বিষয় নিয়ে কাজ করব।

    অন্যদিকে পাকিস্তানের সঙ্গেও সম্পর্ক বেড়েছে, যা গত ১৫ বছরের আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে প্রায় বন্ধ ছিল। স্বাধীনতা যুদ্ধের পর পাকিস্তান থেকে প্রথম কার্গো জাহাজ বাংলাদেশে আসে। জাহাজটি ১৩ নভেম্বর করাচি থেকে ছেড়ে যায় এবং চট্টগ্রাম বন্দরে ডক করে। ঢাকায় পাকিস্তান হাইকমিশন ঘটনাটিকে দুই দেশের মধ্যে প্রথম সরাসরি সামুদ্রিক সংযোগ হিসেবে বর্ণনা করেছে। বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানি হাইকমিশনার সৈয়দ আহমেদ মারুফ ঘটনাটিকে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের একটি বড় পদক্ষেপ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তবে পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশে জাহাজ আসা নিয়ে উদ্বিগ্ন ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী। ভারতীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।

    Do Follow: greenbanglaonline24