• বাংলা
  • English
  • রাজনীতি

    ঢাকায় কবর দেওয়া মাহমুদুরই করা হয়েছে বিএনপি নেতা হারিছ চৌধুরী

    বিএনপির বহুল আলোচিত প্রভাবশালী নেতা হারিছ চৌধুরী, যাকে ঢাকার সাভারের একটি মাদ্রাসায় অধ্যাপক মাহমুদুর রহমান হিসেবে সমাহিত করা হয়েছিল। ডিএনএ পরীক্ষার রিপোর্টে এ তথ্য উঠে এসেছে।

    প্রায় আড়াই বছর পর অবশেষে নিশ্চিত হওয়া গেছে লাশটি মাহমুদুরের নয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরীর।

    সাভার থানার ওসি মো. জুয়েল মিয়া ও হারিছ চৌধুরীর মেয়ে সামিরা তানজিন চৌধুরী বুধবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

    আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে পলাতক থাকা অবস্থায় তিনি ২০২১ সালের ৩ সেপ্টেম্বর ঢাকার একটি হাসপাতালে মারা যান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৮ বছর। সে সময় প্রেক্ষাপটের কারণে পলাতক হারিছের লাশ অজ্ঞাতনামায় দাফন করতে বাধ্য হন স্বজনরা।

    পুলিশ জানায়, গত ৬ নভেম্বর আদালতে ডিএনএ রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়।সিআইডি এই প্রতিবেদন পেয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

    সিআইডির অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার কামরুন মুনিরা গণমাধ্যমকে বলেন, বিষয়টি আদালতের, তাই আদালত এ বিষয়ে তথ্য দেবেন।

    ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলা ও শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে হারিছ চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে বলে স্বজনরা জানিয়েছেন। এ ছাড়া দুদক দুর্নীতি মামলা ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাজা ও জরিমানা করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি, ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারি করা হয়। এমন প্রেক্ষাপটে হারিছ চৌধুরী তার নাম ও চেহারা পরিবর্তন করে আত্মগোপনে চলে যান। মাহমুদুর রহমান ঢাকায় গোপন জীবন শুরু করেন।

    সিলেটের জোকিগঞ্জের হারিছ চৌধুরী বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব ছিলেন। তার দল বিএনপি ও সরকারে তার ব্যাপক প্রভাব ছিল। ওয়ান-ইলেভেনে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পাল্টে গেলে আত্মগোপনে চলে যান তিনি। এরপর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে হারিছ চৌধুরীর নাম পরিবর্তন করে অধ্যাপক মাহমুদুর রহমান করা হয়। তিনি ২০২১ সালের ৩ সেপ্টেম্বর ঢাকার একটি হাসপাতালে মারা যান। সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়নের কমলাপুর জালালাবাদ এলাকার জামিয়া খাতামুন্নাবিয়ান মাদ্রাসা কবরস্থানে তার মরদেহ দাফন করা হয় অধ্যাপক মাহমুদুর রহমানের নামে।

    শিক্ষার্থীদের গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার সরকার উৎখাতের পর মেয়ে সামিরা তানজিম চৌধুরী তার বাবার পরিচয় জানতে হাইকোর্টে রিট করেন ৫ সেপ্টেম্বর। আদালত লাশ উত্তোলন ও ডিএনএ পরীক্ষার অনুমতি দেন। গত ১৬ অক্টোবর হারিছ চৌধুরীর লাশ উত্তোলন করে নমুনা সংগ্রহ করে সিআইডি।

    তবে হারিছ চৌধুরীর মেয়ে সামিরা তানজিন চৌধুরী জানান, তিনি এখনো কোনো আইনি তথ্য পাননি। তার আইনজীবী হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চের সঙ্গে আলোচনা করে এ বিষয়ে ব্রিফ করবেন।