ডেঙ্গুতে আরও ২ জনের মৃত্যু, এক সপ্তাহে মৃত ৮
পটুয়াখালীর উপকূলীয় মহিপুর থানা এলাকায় ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এই সপ্তাহে মহিপুর থানা এলাকায় ডেঙ্গুতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে আটজনে দাঁড়িয়েছে এবং আক্রান্তের সংখ্যা শতাধিক ছাড়িয়েছে।
গতকাল সোমবার (১০ নভেম্বর) রাত ১০টার দিকে, বরিশালের শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মহিপুরের একজন সুপরিচিত দর্জি জনাব শিশির দাস এবং আলীপুর কালাচাঁপাড়া এলাকার ফার্মেসি ব্যবসায়ী উবাচো রাখাইন মারা যান। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন লতাচাঁপালি ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান হাওলাদার।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এর আগে খাজুরা এলাকার নূরজামাল ফকির এবং মিশ্রিপাড়া এলাকার হাবিব ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। এছাড়াও, ১৩ অক্টোবর মহিপুরে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও চারজনের মৃত্যু হয়, যাদের মধ্যে একজন গর্ভবতী মহিলা ছিলেন। সন্তান প্রসবের কিছুক্ষণ পরই তিনি মারা যান। এই ঘটনা পুরো এলাকায় গভীর শোক ও উদ্বেগের ছায়া ফেলেছে।
কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শঙ্কর প্রসাদ অধিকারী বলেন, “মহিপুর এলাকায় প্রতিদিন ডেঙ্গুর সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমরা ইউনিয়ন পর্যায়ে সচেতনতামূলক প্রচারণা, মাইকিং এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম পরিচালনা করছি। তবুও স্থানীয়দের উদ্বেগ কমছে না। বর্তমানে মহিপুর, আলীপুর এবং আশেপাশের এলাকার অন্তত পঞ্চাশজন কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং বরিশাল মেডিকেলে ভর্তি আছেন। আলীপুরের এক পরিবারের তিনজনকে একই সাথে ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।”
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাওসার হামিদ বলেন, “ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত ফগার দিয়ে স্প্রে করা হচ্ছে। এছাড়াও, প্রতিটি বাড়ি এবং আশেপাশের পরিবেশ পরিষ্কার রাখার জন্য ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ডেঙ্গু সংক্রমণ রোধে প্রশাসন সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করছে। একই এলাকায় বারবার মৃত্যুর ঘটনায় উপকূলের সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। সমুদ্র বেষ্টিত এই শহরটি নীরবে ডেঙ্গু জ্বরে কাঁপছে।

