ডলারের বিপরীতে টাকার মান বাড়াতে আজ মুদ্রানীতি ঘোষণা হবে
টাকার মান আরও দামি ও শক্তিশালী করার পরিকল্পনা নিয়ে সুদের হার বাড়িয়ে নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধে (জানুয়ারি-জুন) বুধবার (১৭ জানুয়ারি) এই মুদ্রানীতি ঘোষণা করতে যাচ্ছে আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।
দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে সাধারণ মানুষ যখন হতাশায় ভুগছে তখন নতুন মুদ্রানীতিকে জনবান্ধব করাই সরকারের মূল লক্ষ্য। এবারের মুদ্রানীতিতেও সংকোচন নীতি গ্রহণ করা হয়েছে। এই নীতিতে, ক্রলিং পেগ পদ্ধতিতে ডলারের দাম নিয়ন্ত্রণ করা হবে। এছাড়াও এবারের মুদ্রানীতিতে বৈদেশিক লেনদেনের ভারসাম্যহীনতা ও অনিয়ন্ত্রিত ব্যাংকিং খাত নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করা হবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত ডিসেম্বরে মূল্যস্ফীতি ছিল ৮ শতাংশ। আগামী জুনের মধ্যে তা ৬ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্য নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তবে গত বছরের নভেম্বর শেষে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৪৯ শতাংশ। মুদ্রাস্ফীতি কমাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের বাজারভিত্তিক ঋণের সুদের হার রয়েছে। এছাড়া নীতিমালায় সুদের হারও বেড়েছে। ঋণের সুদের হার ৯ শতাংশ থেকে বেড়ে ১১ দশমিক ৮৯ শতাংশ হয়েছে। এদিকে তারল্য সংকট ও সুদের হারের কারণে বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহ নেতিবাচক। গত নভেম্বরে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি ছিল ৯ দশমিক ৯০ শতাংশ। ডিসেম্বর পর্যন্ত ঋণের পরিমাণ ১০ দশমিক ৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর আতিউর রহমান বিভিন্ন গণমাধ্যমকে বলেন, চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের মুদ্রানীতির মূল লক্ষ্য হবে মূল্যস্ফীতি কমানো। এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে এটি এই বছরের মুদ্রানীতিতে প্রাধান্য পাবে। মুদ্রাস্ফীতি কমানোর অনেক উপায় আছে। আর্থিক নীতির সাথে একটি বড় প্রভাব রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন ব্যাংককে যে পলিসি রেট দেয় তার সাথে মুদ্রানীতি ওঠানামা করে। আমাদের অর্থের বাজার যথেষ্ট আঁটসাঁট নয়, এটি যথেষ্ট আলগা। বাজারে অনেক টাকা আছে। যার কারণে পণ্যের দাম কমানো যাচ্ছে না। এ কারণে এ বছর পলিসি রেট বাড়বে বলে আমার বিশ্বাস। তবে কতটা বাড়বে তা শেষ মুহূর্তে সিদ্ধান্ত নেবেন রাজ্যপাল। তবে এটা নিঃসন্দেহে বলা যায় যে এবারের মুদ্রানীতি হবে সংকোচনমূলক। যার মাধ্যমে আমদানি পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে বলেও মনে করেন তিনি।