ট্রাম্প জনগণকে শুল্ক থেকে ২,০০০ ডলার ‘লভ্যাংশ’ দেবেন
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন যে, বিদেশী পণ্যের উপর আরোপিত শুল্ক থেকে প্রতিটি আমেরিকান কমপক্ষে ২০০০ ডলার সুবিধা বা ‘লভ্যাংশ’ পাবে। তিনি বলেছেন যে, এই শুল্ক নীতি দেশের অর্থনীতিকে আগের চেয়ে আরও শক্তিশালী করবে। এক প্রতিবেদনে, দেশটির সংবাদমাধ্যম সিবিএস নিউজ এই তথ্য জানিয়েছে।
গতকাল রোববার (৯ নভেম্বর) ট্রাম্প তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে লিখেছেন, ‘যারা শুল্কের বিরোধিতা করে তারা সম্পূর্ণ বোকা! সবাই কমপক্ষে ২০০০ ডলার লভ্যাংশ পাবে (উচ্চ আয়ের মানুষ ছাড়া)।’
এই মন্তব্যের পর, মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেস্যান্ট এবিসি নিউজের ‘দিস উইক’ অনুষ্ঠানে বলেন যে, শুল্ক আরোপের প্রাথমিক ফলাফল হবে সরকারি রাজস্ব বৃদ্ধি। তবে, দীর্ঘমেয়াদে এর লক্ষ্য রাজস্ব সংগ্রহ করা নয়, বরং দেশের শিল্প ও উৎপাদন খাতকে পুনরুজ্জীবিত করা এবং বাণিজ্যে ভারসাম্য আনা।
তিনি বলেন, ‘এটি অর্থ সংগ্রহের বিষয়ে নয়, এটি অর্থনৈতিক ভারসাম্য পুনরুদ্ধারের একটি উদ্যোগ।’ বেসান্ত আরও বলেন যে, ট্রাম্পের ঘোষিত ২০০০ ডলার লভ্যাংশ বিভিন্ন রূপে দেওয়া যেতে পারে, যেমন কর হ্রাস বা নির্মূল করা। রাষ্ট্রপতি ইতিমধ্যেই টিপস এবং ওভারটাইমের উপর কর বাতিল করার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন।
অন্যদিকে, ট্রাম্প প্রশাসনের শুল্ক নীতি দেশজুড়ে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। বিরোধীরা অভিযোগ করেছেন যে, বিদেশী পণ্যের উপর শুল্ক বৃদ্ধি আসলে আমেরিকান ব্যবসা এবং ভোক্তাদের উপর অতিরিক্ত করের বোঝা তৈরি করছে।
গত সপ্তাহে, এই শুল্ক নীতি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছিল। শুনানির সময়, প্রধান বিচারপতি জন রবার্টস বলেন, “যদি রাষ্ট্রপতির বৈদেশিক নীতি পরিচালনার ক্ষমতা কংগ্রেসের কর আরোপের ক্ষমতাকে ছাড়িয়ে যায়, তাহলে দুটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য ব্যাহত হবে।”
এই মন্তব্যের জবাবে, ট্রাম্প সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, “যদি রাষ্ট্রপতি বিদেশী দেশের সাথে সমস্ত বাণিজ্য বন্ধ করতে পারেন, তাহলে শুল্ক আরোপে আপত্তি কেন? এটি সম্পূর্ণ অযৌক্তিক।” তিনি আরও বলেন, “শুল্ক এখন বিদেশী ব্যবসাগুলিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগে আগ্রহী করে তুলছে। এটি আমাদের অর্থনীতিকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে।”
ট্রাম্পের শুল্ক নীতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে একটি বড় রাজনৈতিক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। ট্রাম্পের সমর্থকরা বিশ্বাস করেন যে, এটি দেশের উৎপাদন এবং কর্মসংস্থান বৃদ্ধি করবে। অন্যদিকে, সমালোচকরা বলছেন যে, শুল্কের বোঝা শেষ পর্যন্ত সাধারণ ভোক্তাদের উপর পড়বে। তবে, রাষ্ট্রপতি ট্রাম্প আত্মবিশ্বাসী যে তার নীতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে একটি শক্তিশালী অর্থনীতির দিকে নিয়ে যাবে এবং জনগণ ‘লভ্যাংশ’ আকারে সরাসরি এর সুবিধা পাবে।

