জাতীয়

টেকনাফ সেন্টমার্টিন রুট: অবৈধ স্পিডবোট বাড়াচ্ছে ঝুঁকি

টেকনাফ সেন্টমার্টিন রুটে চলছে অবৈধ স্পিডবোট। সরকারি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন ছাড়াই চলাচল করছে। স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় প্রতিদিন এসব অবৈধ স্পিডবোটে চলে লাখ টাকার বাণিজ্য। এতে ঝুঁকি বাড়ছে যাত্রীদের। সম্প্রতি এই নৌরুটে এক নারী যাত্রী নিহতের ঘটনায় টেকনাফজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে।
স্থানীয়রা বলছেন, টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন রুটে ৫০টির বেশি অবৈধ স্পিডবোট চলাচল করে। টেকনাফ ও সেন্টমার্টিনের একটি যৌথ সিন্ডিকেট সেটি নিয়ন্ত্রণ করে।
অবৈধ স্পিডবোটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আদনান চৌধুরী। তিনি বলেন, নিয়ন্ত্রণকারী সিন্ডিকেটে জড়িতদের বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে শিগগিরই তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, এক প্রভাবশালী ব্যক্তি সেন্টমার্টিনের অবৈধ স্পিডবোট সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করেন। টেকনাফ মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ জোবাইর সৈয়দ বলেন, স্পিডবোট ডুবির ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় কেউ অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জানা গেছে, সর্বশেষ গত শুক্রবার টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে অবৈধভাবে চলাচলরত যাত্রীবাহী ২৪ জনের একটি স্পিডবোট তলা ফেটে ডুবে যায়। তাদের উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসারত অবস্থায় এক নারীর মৃত্যু হয়। নিহত ফিরোজা খাতুন সেন্টমার্টিন দ্বীপের তিন নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক নারী ইউপি সদস্য। শুক্রবার নাফ নদের মোহনায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
সেন্টমার্টিনের উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া ওই স্পিডবোটে স্থানীয় ও পর্যটকসহ ২৪ যাত্রী ছিলেন। নাফ নদীর মোহনায় পৌঁছানোর পরপরই হঠাৎ করে স্পিডবোটের তলা ফেটে তা ডুবে যায়। সংবাদ পেয়ে কোস্টগার্ডের একটি টিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ভুক্তভোগীদের উদ্ধার করে। তাদের সবাইকে স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়ার পর একজনের মৃত্যু হয়। বৃষ্টি এবং ঝড়ো বাতাসের কারণে সাগর উত্তাল থাকায় সমুদ্রের গোলগড়া নামক স্থানে পৌঁছলে বোটটির তলদেশ ছিদ্র হয়ে ডুবে যায়।
সূত্র জানায়, ওই স্পিডবোটটির মালিক সেন্টমার্টিন দ্বীপের বাসিন্দা নুরুল আলম। দীর্ঘদিন ধরে এ রুটে অনুমতি ছাড়াই বেশ কিছু স্পিডবোট অবৈধভাবে চলছে। ডাবল ইঞ্জিনের স্পিডবোট চালানোর বাধ্যবাধকতা থাকলেও তা কেউ মানে না। সরকারি বিভিন্ন সংস্থার অনুমোদন না নিয়ে চলাচল করে এসব স্পিডবোট।
যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে এ ধরনের অবৈধ স্পিডবোট চলাচল বন্ধে সরকারি সংস্থাগুলোর তদারকি বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।