টিটিই শফিকুল ইসলামের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হচ্ছে
ঢাকাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেসে রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজনের স্বজনদের জরিমানা করা ট্রাভেল টিকিট পরীক্ষক (টিটিই) শফিকুল ইসলামকে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হচ্ছে।
রোববার বিকেলে রেলওয়ে হাউজে এক সংবাদ সম্মেলনে নুরুল ইসলাম সুজন এ কথা বলেন।
পাকশী রেলওয়ের ডিভিশনাল কমার্শিয়াল অফিসার (ডিসিও) নাসির উদ্দিনকে শোকজ করা হবে বলে জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, ভুল হলে মানুষ সেভাবেই দেখবে। এখানে যদি দেখা যায় আমার স্ত্রী কিছু ভুল করেছে… সে করেছে… এখানে আমার কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না। মন্ত্রীর কারণেই এমনটা হচ্ছে বলে জানা গেছে। আমার কিছু করার থাকলে আমি সরাসরি করতে পারতাম। কারো সাহায্য লাগবে না। বার্তাটি যেভাবে গেছে তা সঠিক নয়। ‘
রেলমন্ত্রী সুজন বলেন, টিটিই শফিকুল ইসলাম সেদিন তার দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করেছিলেন।
টিটিইর কাজ হল রেলে শৃঙ্খলা আনা,” তিনি বলেন তার কাজ রেলযাত্রীদের সাহায্য করা, তাকে সাহায্য করা, সঠিক জায়গায় সেবা করা। সেই দায়িত্ব রেলবাসীর। ঘটনা যেভাবে চলছে তাতে আমরা বিব্রত।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, শফিকুল ইসলামকে পদোন্নতি বা অন্যান্য সুবিধা দেওয়া হতে পারে। রেল মন্ত্রণালয় তাকে পুরস্কৃত করার কথাও বিবেচনা করবে।
গত শুক্রবার রাতে পাবনার ঈশ্বরদী স্টেশন থেকে ঢাকাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেনে ওঠেন রেলমন্ত্রীর স্ত্রীর ভাগ্নে তিন যাত্রী। তারা হলেন মন্ত্রীর স্ত্রীর বোনের ছেলে ইমরুল কায়েস প্রান্ত এবং তার চাচাতো ভাই ওমর ও হাসান।
তাদের টিকিট না থাকলেও রাত ৮টায় খুলনা ছেড়ে যাওয়া সুন্দরবন এক্সপ্রেসের এসি কেবিনে আসন নেন তিনজন। এরপর টিটিই শফিকুল ইসলাম তাদের কেবিন থেকে বের করে একটি সুন্দর বগিতে করে ৩৫০ টাকা জরিমানা করেন। এরপর ট্রেনটি ঢাকায় পৌঁছানোর আগেই মধ্যরাতে টিটিইকে স্থগিত করে মোবাইল ফোনে জানানো হয়।
নিজেকে মন্ত্রীর আত্মীয় পরিচয় দেওয়া তিন যাত্রীর একজন ইমরুল কায়েস প্রান্তের মা ইয়াসমিন আক্তার নিপা পরে বলেন, রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজনের স্ত্রী শাম্মী আক্তার মনিরকে ট্রেনের মোবাইল টিকিট পরীক্ষক বরখাস্ত করেছেন। নিপা মন্ত্রীর স্ত্রীর চাচাতো বোন।
এ ঘটনায় দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়।
শুক্রবারের ঘটনার ব্যাখ্যা জানতে শফিকুল ইসলামকে রোববার বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তার (ডিসিও) কার্যালয়ে তলব করা হয়েছে। রেলওয়ের পাকশী বিভাগের সহকারী পরিবহন কর্মকর্তা সাজেদুল ইসলামকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে।
টিটিই থেকে বরখাস্ত হওয়া ডিসিও নাসির উদ্দিন লিখিত বক্তব্যে দাবি করেছেন যে শফিকুল মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন। এর আগেও তিনি যাত্রী ও সহকর্মীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছেন।