টানা বৃষ্টিতে পাহাড়ে মাইকিং, টেকনাফে পানিতে আটকা পড়েছে পাঁচ হাজার মানুষ
টানা বর্ষণে কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার পাঁচ হাজারের বেশি মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ফসলি জমি-চিংড়ি ঘেরও পানিতে তলিয়ে গেছে। প্রাণহানি এড়াতে বিপজ্জনক পাহাড়িদের সরিয়ে নেওয়ার জন্য মাইকিং করছে উপজেলা প্রশাসন।
সোমবার সকাল থেকে টানা বৃষ্টির কারণে টেকনাফ উপজেলার বাসিন্দাদের অন্য এলাকায় চলে যেতে বলা হচ্ছে।
উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের মৌলভীবাজার, ওয়াবরাং, চৌধুরী পাড়া, রাঙ্গিখালী লামার পাড়া, সাবরাং ইউনিয়নের পথ আলী পাড়া, বাহারছড়া পাড়া, কুড়া বুইজিয়াপাড়া, মুন্ডার ডেলে পাড়া গ্রামের আড়াই হাজার পরিবারের পাঁচ হাজারের বেশি মানুষ জলাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। এছাড়া টেকনাফ পৌরসভার ১২টি ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ে ভূমিধসের ঝুঁকিতে রয়েছে ২০ হাজার মানুষ। প্রবল বর্ষণে ভূমিধসে এসব মানুষ আবার প্রাণ হারাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
পুরনো পল্লানপাড়া পাহাড়ের পাড়ে বসবাস। জোবায়ের বলেন, “টানা বৃষ্টির কারণে ভয়ে আছি। এ সময় নির্ঘুম রাত কাটে। অন্য সময় ভয় তেমন কাজ করে না। এছাড়া দুপুর থেকে এখান থেকে সরে যাওয়ার জন্য মাইকিং করা হচ্ছে।
রাঙ্গিখালী লামার পাড়ার বাসিন্দা আয়েশা বেগম টানা বৃষ্টিতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। তিনি বলেন, ‘ঘরে পানি ঢুকেছে, ফলে ঘরের সবকিছু পানিতে তলিয়ে গেছে। সকাল থেকে শুধু ছানামুড়ি খেয়েই দিন পার করছি। কেউ আমাদের খোঁজ নিতে আসেনি। আমাদের চারপাশে ৩৫টি পরিবার রয়েছে। সবার ঘরবাড়ি তলিয়ে গেছে। মূলত সুইচ গেটের কারণে আমরা সবাই পানিতে আটকে আছি।
হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান রাশেদ মোহাম্মদ আলী বলেন, আমার এলাকার চারটি গ্রামের ২০০০ পরিবারের ৪৫০০ জনের বেশি মানুষ ভারি বর্ষণে পানিতে আটকা পড়েছে। মূলত বৃষ্টির পানির কারণে এসব এলাকা জলাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। সীমান্ত সড়কের সুইচ গেট থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।আমরা সেগুলো খতিয়ে দেখছি।
সুবরাং ইউনিয়ন পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. সেলিম বলেন, “ভারী বর্ষণে আমার এলাকার প্রায় দেড় শতাধিক পরিবার জলাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। ড্রেন-খাল দখলের কারণে পানি চলাচলের এলাকা বন্ধ হয়ে গেছে। যার কারণে মানুষের এই অবস্থা।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামরুজ্জামান বলেন, “ভারী বর্ষণে অনেক গ্রাম জলাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। আমরা সেগুলো খতিয়ে দেখছি। এছাড়া ভারী বর্ষণের কারণে ভূমিধসের সম্ভাবনা রয়েছে। তাই ঝুঁকিপূর্ণ বাসিন্দাদের সকাল থেকে অন্যত্র সরে যেতে বলা হচ্ছে। আশ্রয়কেন্দ্র ছেড়ে যান, ভূমিধসে প্রাণ হারানোর হাত থেকে রক্ষা পাবে সিপিপি সদস্যরা।এছাড়া পাহাড়ে বসবাসকারীদের জানমাল রক্ষায় সিপিপি সদস্যরা তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন।এছাড়াও আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করেছি।