• বাংলা
  • English
  • শিক্ষা

    জিপিএ-৫ খুবই  ভয়ংকর ব্যাপর: জাফর ইকবাল

    দেশের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের গ্রেডিং পদ্ধতি জিপিএ-৫ নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছেন শিক্ষাবিদ ও লেখক মুহম্মদ জাফর ইকবাল। তিনি জিপিএ-৫ পাওয়াকে ‘খুবই ভীতিকর’ বলে বর্ণনা করেছেন।

    বুধবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে পঞ্চম বাংলাদেশ রোবট অলিম্পিয়াড ২০২২-এর সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।

    মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, একটা সময় আমাকে কেউ বলত আমার ছেলে বা মেয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছে। আমি বলব বাহ! তারপর আস্তে আস্তে দেখতে লাগলাম, জিপিএ-৫ পাওয়া আসলে খুব ভয়ের ব্যাপার। একজন অভিভাবক যখন বলেন আমার ছেলে বা মেয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছে, তখন আমি বলি শিশুকে স্কুলে যেতে, কোচিং করতে, তারপর প্রাইভেট পড়তে, গাইড বই মুখস্থ করতে, পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস করতে কত কষ্ট করতে হয়। , বাবা-মা ফেসবুক থেকে প্রশ্ন ডাউনলোড করে সমাধান করছেন, তারপর মুখস্থ করছেন… আহা, বাচ্চার কষ্ট হচ্ছে! আমার মধ্যে আনন্দ নেই তারপরও কোনোভাবে রেজাল্ট একটু খারাপ হলে বাবা-মা, আত্মীয়-স্বজন শিশুটিকে গালিগালাজ করে। আমার মন ভেঙ্গে যায় যখন দেখি একটা ছেলে অমুক জায়গায় আত্মহত্যা করছে পরীক্ষার রেজাল্ট খারাপের কারণে। তাদের নিয়ে চিন্তা করবেন না। আপনি আপনার মস্তিষ্ককে বাঁচিয়ে রাখুন, আর কিছুর দরকার নেই।

    দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠানটি যৌথভাবে আয়োজন করে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তর, রোবোটিক্স অ্যান্ড মেকাট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্ক।

    মুহম্মদ জাফর ইকবাল অনুষ্ঠানের প্রতিযোগী ও তাদের অভিভাবকদের উদ্দেশে বলেন, ‘সবাই পুরস্কার পাবে না, কেউ কেউ পাবে। পুরস্কার পাওয়া বড় কথা নয়, পুরস্কার না পেলে জীবন নষ্ট হয় না। আমাদের দেশের অনেক শিশু রোবট নিয়ে কাজ করেছে। ৫০ বছর আগে আমরা যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তাম, আমরা ভাবতাম যে আমরা একদিন রোবট পাব, আমরা কি একদিন রোবট দেখব? সে জন্য রোবট নিয়ে গল্প লিখতাম। এবং এখন আপনি (ছাত্ররা) আপনার নিজের রোবট তৈরি করছেন। এটা অনেক সুন্দর দেখাচ্ছে!’

    অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শিশুদের সুকুমার বৃত্তি-চিন্তা ক্ষমতার বিকাশ এবং পরীক্ষার চাপ কমাতে নতুন পাঠ্যক্রম চালু করার নির্দেশ দিয়েছেন। এটি ষষ্ঠ শ্রেণী থেকে শুরু হয়। আমরা চেষ্টা করছি এ ক্ষেত্রে অভিভাবক ও শিক্ষকদের সহযোগিতা প্রয়োজন।

    তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. মোস্তফা কামালের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এনএম জিয়াউল আলম। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ রোবট অলিম্পিয়াডের সভাপতি লাফিফা জামাল। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোবোটিক্স অ্যান্ড মেকাট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারপারসন সেঁজুতি রহমান। আলোচনা শেষে ৫ম রোবট অলিম্পিয়াডের বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন মুহাম্মদ জাফর ইকবাল ও মহিবুল হাসান চৌধুরী।

    মন্তব্য করুন