রাজনীতি

জামায়াতের শীর্ষ নেতারা নেতাদের বিতর্কিত মন্তব্য সম্পর্কে কী বলছেন?

স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে জামায়াত নিরাপদ অবস্থান থেকে রাজনীতি করে আসছে। তবে আওয়ামী লীগের গত ১৫ বছরের শাসনামলে দলটি কিছুটা স্থবির ছিল। ছাত্র ও জনসাধারণের গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের পতনের পর, দলের কার্যক্রম আবার গতি লাভ করে। নির্বাচন ও রাজনীতিতে জামায়াত তার অবস্থান সুসংহত করার জন্য কঠোর পরিশ্রম করে চলেছে। এর সাথে সাথে নেতাদের বিতর্কিত ও আপত্তিকর বক্তব্যও বেড়েছে।
কখনও থানার ওসিকে শিবির-জামায়াতের লোকদের সাথে ‘সহায়ক পুলিশ’ সরবরাহ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, আবার কখনও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, নবী সাংবাদিক ছিলেন, নবী মক্কা থেকে মদিনায় পালিয়ে গেছেন – এই ধরণের কুৎসিত মন্তব্য দলীয় নেতাদের বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
সম্প্রতি, জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য শাহজাহান চৌধুরীর বক্তব্য ‘দেশের আলোচনার বিষয়’ হয়ে উঠেছে। তিনি ঘোষণা করেছিলেন যে, প্রশাসনকে নিয়ন্ত্রণে নেওয়া হবে। শাহজাহান চৌধুরীর জন্য সূর্য স্থির থাকবে, তিনি নিজেকে চট্টগ্রামের অভিভাবক বলে অভিহিত করেছিলেন। এমন সাহসী বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে নাগরিক সমাজ এবং পেশাজীবীরা।
আবারও ওয়াজ মাহফিলে দলের আরেক নেতা আমির হামজার বক্তব্যের সমালোচনা করা হয়েছে। যদিও তিনি নিজেকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র বলে দাবি করেন, তা সঠিক নয়। একটি সমাবেশে তিনি মুহাম্মদ (সা.) কে সাংবাদিক বলে মন্তব্য করে বিতর্কও তৈরি করেছেন। এই ঘটনাগুলি সত্ত্বেও, জামায়াত কেবল সতর্কীকরণ এবং শোক প্রকাশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। ফলে জনমনে প্রশ্ন উঠছে যে, দলের উদাসীনতার কারণে কি এই নেতারা বেপরোয়া?
জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এবং দলের মুখপাত্র এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেছেন যে, অনুপযুক্ত বক্তব্যটি ব্যক্তির নিজস্ব, এবং দল এর দায় নেবে না। তিনি বলেন, প্রয়োজনে আমরা যথাসম্ভব কঠোর হব। যদি কারও সংশোধন প্রত্যাশিত অর্থবহ না হয়, তাহলে আমরা সংবিধান অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।
দলের আরেক সহকারী মহাসচিব হামিদুর রহমান আজাদ বলেন, “দল হিসেবে আমরা কোনও ভুল মেনে নিই না। যদি কোনও ব্যক্তি ভুল করে এবং তা সীমা বা মাত্রা বা দলীয় নীতির বাইরে যায়, তাহলে আমরা সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিই।” পরিস্থিতি বুঝে নেতা-কর্মীদের সাবধানতার সাথে কথা বলার এবং কাজ করার পরামর্শ দিয়েছেন জামায়াতের শীর্ষ নেতারা।