• বাংলা
  • English
  • জাতীয়

    ছোট দলগুলোর প্রস্তাবে ঘুরেফিরে তিন নাম।সার্চ কমিটিতে ১৯ দলের নাম দেয়নি ১৮টি

    ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, তার সহযোগী ও ১৯টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল সম্ভাব্য নির্বাচন কমিশনারদের তালিকা সার্চ কমিটিতে জমা দিয়েছে। সরকারপন্থী হিসেবে পরিচিত কয়েকটি ছোট দলের তালিকায় একজন সাবেক বিচারপতি এবং দুজন সাবেক আমলা রয়েছেন। তাদের কাছে এই তিনজনের জীবনবৃত্তান্ত জমা দেওয়া হয়েছে বলে এসব দলের সূত্রে জানা গেছে।

    নিবন্ধিত ৩৯টি দলের মধ্যে বিএনপি, জোটের শরিক দল এবং ১৮টি ডান ও বাম দল সার্চ কমিটিতে তাদের নাম দেয়নি। অন্য দুটি দল – এনডিএস এবং সাংস্কৃতিক মুক্তি জোট -কে পাওয়া যায়নি।

    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ১৩ দলের মতে, প্রধানমন্ত্রী যাকে চাইবেন তাদের নিয়েই নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে, তাই নামকরণ অর্থহীন। অন্য পাঁচটি পক্ষ জানিয়েছে, তারা চিঠিটি দেরিতে পেয়েছে এবং প্রক্রিয়ার জটিলতার কারণে নাম প্রকাশ করা যাচ্ছে না।

    বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোশাররাফ হোসেন ভূঁইয়া ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দিনের নাম রয়েছে। এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ, নির্বাচন কমিশনের সাবেক সচিব মো. মোহাম্মদ জাকারিয়াসহ ইসির সাবেক কর্মকর্তাদের নাম বেশ কয়েকটি দলের তালিকায় রয়েছে।

    আওয়ামী লীগ ১০ মনোনয়নপ্রত্যাশীর নাম প্রকাশ করেনি। জাতীয় পার্টি (জাপা) করেনি। দলটির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, জিজ্ঞাসাবাদের তিনজনের নাম জাপার তালিকায় নেই। এই তালিকায় সাবেক বিচারপতি, সাবেক সেনা কর্মকর্তা ও আমলা রয়েছেন বলে সূত্র জানায়। রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ আবদুল হামিদ আগামী ইসিতে প্রধান কমিশনারসহ চার নির্বাচন কমিশনার পদে যোগ্য ব্যক্তিদের নিয়োগ দিতে গত ৫ ফেব্রুয়ারি একটি সার্চ কমিটি গঠন করেন। বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে গঠিত কমিটি পরদিন বৈঠক করে ৩৯টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের নাম চায়। গতকাল শুক্রবার ছিল নাম জমা দেওয়ার শেষ দিন।

    কমিউনিস্ট পার্টি ছয়জন, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ পাঁচ, আওয়ামী লীগ ১০, গণতন্ত্রী পার্টি আট, ওয়ার্কার্স পার্টি ১০, বিকল্পধারা পাঁচ, জাতীয় পার্টি ১০, জাসদ পাঁচ, জাকের পার্টি পাঁচ, তরিকত ফেডারেশন ১০, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি ১০ প্রার্থী মনোনয়ন দিয়েছে। আটজনের, গণফ্রন্ট সাতটি, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি ১০টি, ইসলামী ঐক্যফ্রন্ট ১০টি, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট ছয়টি, বিএনএফ সাতটি, বাংলাদেশ কংগ্রেস ১০টি ও জেপি ১০টি । ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ) তালিকা দিলেও কতজনের নাম ছিল তা বলতে পারেননি দলটির চেয়ারম্যান। এ ছাড়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির মোট ৫শ’ নাম সার্চ কমিটিতে জমা পড়েছে।

    সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়াকে সিইসি পদে মনোনয়ন দিয়েছে বিকল্পধারা, গণফ্রন্ট, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি, মহাজোট শরিক গণতন্ত্রী পার্টি ও তরিকত ফেডারেশন। ২০১৭ সালে তরিকত সিইসি পদে কে এম নুরুল হুদার নাম প্রস্তাব করে।

    মোশাররফ হোসেন বলেন, গত কয়েকদিন কারও সঙ্গে তার কথা হয়নি। অনেকেই আমাকে চেনেন। নাম দিয়ে থাকতে পারে। তবে যাঁরা নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেন, তাঁরেই নিবেন।

    বাংলাদেশ কংগ্রেস ও বাংলাদেশ জাতীয় পার্টিসহ অন্তত চার দলের তালিকায় সিইসি পদে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীকে প্রস্তাব করেছে। সাবেক সচিব মোস্তফা কামালের নাম প্রস্তাব করেছে কমিউনিস্ট পার্টি, এনপিপি, গণতন্ত্রী পার্টিসহ একাধিক দল।

    দুই সাংবাদিকের নামও সুপারিশ করা হয়েছে। বিকল্পধারা বাংলাদেশের পক্ষে সাংবাদিক আবু সাঈদ খানের নাম প্রস্তাব করা হয়েছে। সাংবাদিক নেতা ইকবাল সোবহান চৌধুরীর নাম প্রস্তাব করেছে বাংলাদেশ ইসলামিক ফ্রন্ট।

    দলের একাধিক নেতার মতে, নাম জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া জটিল। সার্চ কমিটিতে উল্লেখযোগ্য কর্ম ও অর্জনের বর্ণনাসহ একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনী দিতে হবে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে  দেওয়া দলগুলোর পক্ষে কঠিন। কিন্তু এর পরেও অনেক দল দিতে পেরেছে। তবে সব কাগজপত্র প্রস্তুত করে নাম প্রস্তাব করার মতো কোনো অফিস বা জনবল নেই। এসব নেতার দাবি, সরকার প্রদত্ত সিভি। সেটাই তারা জমা দিয়েছেন।

    মন্তব্য করুন