ছাগলনাইয়া রাজনীতিতে হঠাৎ শান্তির নিঃশ্বাস
একই স্থানে সমাবেশ ডেকে উত্তেজনা ছড়ায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। তেলসহ নিত্যপণ্যের দাম কমানো এবং ভোলায় ছাত্রদল ও স্বচ্ছাসেবক দলের দুই নেতাকে হত্যার প্রতিবাদে বিএনপির পক্ষ থেকে এ সমাবেশের ঘোষণা দেওয়া হয়। এদিকে একই স্থানে উপজেলা আওয়ামী লীগ সমাবেশ ডেকে তিন দিন ধরে প্রচারণা চালায়। দুই পক্ষের মুখোমুখি অবস্থানের কারণে অপ্রীতিকর পরিস্থিতির আশঙ্কা রয়েছে। উভয় দলের উত্তেজিত কর্মীরা তাদের শক্তি প্রদর্শনের জন্য লাঠি মিছিল ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত নজিরবিহীন দৃশ্য দেখা গেল মঙ্গলবার সকালে। আওয়ামী লীগ নেতারা কর্মীদের শান্ত হওয়ার নির্দেশ দেন এবং বিএনপি নেতারা সমাবেশস্থল এক কিলোমিটার দূরে সরিয়ে দেন। ফলে ফেনীর ছাগলনাইয়া রাজনৈতিক অঙ্গনে এখন শান্তি বইছে।
সংশ্লিষ্ট দলগুলো জানিয়েছে, নিত্যপণ্যের দাম কমানোসহ অন্যান্য দাবিতে গত ২২ আগস্ট থেকে বিএনপি বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে। সারাদেশের মতো ফেনীর বিভিন্ন উপজেলায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিএনপির সংঘর্ষ হয়েছে। গত সোমবারও ফেনীর সোনাগাজী ও ফুলগাজীতে বিএনপির সঙ্গে সংঘর্ষের সময় পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে পাঁচ বিএনপি কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এ ঘটনায় বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টুসহ শতাধিক নেতাকর্মীর নামে দুটি মামলা করেছে পুলিশ। এরপর গতকাল সকালে মধুমতি বাজার এলাকায় বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশ হয়। তবে সম্ভাব্য অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে সকাল ৯টার দিকে ছাগলনাইয়া সদরের জিরো পয়েন্টে আসেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান মেজবাউল হায়দার চৌধুরী সোহেল। তিনি দলীয় নেতাদের শান্ত হওয়ার নির্দেশ দিলে পরিবেশ পাল্টে যায়। অপরদিকে শেষ মুহূর্তে সভার স্থান পরিবর্তন করেন উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক নূর আহমদ মজুমদার। তিনি নেতাকর্মীদের এক কিলোমিটার দূরে পশ্চিম ছাগলনাইয়া কলেজ রোডে জড়ো হতে বলেন। এরপর হাজার হাজার নেতাকর্মী লাঠিসোঁটা ফেলে শান্ত মিছিল নিয়ে সেখানে যান। ফলে উপজেলার ছয়টি আঞ্চলিক মহাসড়ক চলাচল স্বাভাবিক হয়। তবে ফেনী থেকে রিজার্ভ পুলিশ এসে উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ সড়কসহ বিভিন্ন স্থানে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা মেজবাউল হায়দার চৌধুরী সোহেল বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমপি নিজাম উদ্দিন হাজারী নির্দেশ দিয়েছেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে ভোট দিতে উৎসাহ দিয়ে কর্মসূচি পালন করতে হবে। তাই নেতাকর্মীদের শান্তিপূর্ণ জনপদকে বিঘ্নিত না করে ধৈর্যের সাথে পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে বলা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ গ্রাম সরকার বিষয়ক সম্পাদক বেলাল আহমেদ বলেন, বিএনপি দেশের সাধারণ মানুষের সমর্থন নিয়ে রাজনীতি করে বলে জনগণের জানমালের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে শান্তিপূর্ণভাবে দলীয় কর্মসূচি শেষ করেছে।
অপরদিকে, সদরের কলেজ রোডে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক নূর আহমদ মজুমদারের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জালাল আহমদ মজুমদার।