• বাংলা
  • English
  • জাতীয়

    চাঁদার দাবীতে এলাকার রাস্তা নির্মাণে বাঁধা, অয়ন শর্মাসহ কয়েক জনের বিরুদ্ধে ওয়ার্ডবাসীর মানববন্ধন।

    চট্টগ্রাম নগরীর হামজা খান লেনের শাহ আমানত আবাসিক এলাকার সড়কের সামনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।  মানববন্ধনে শাহ আমানত মালিক কল্যাণ সমিতির সভাপতি শাহেদ আলী রানা ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ দিদারুল আলম বলেন, ২৫ বছর যাবত নগরীর শাহ আমানত মালিক কল্যাণ সমিতি গঠিত। এ সড়ক দিয়ে আবাসিক এলাকার প্রায় দুই হাজার মানুষ চলাচল করে। কয়েকদিন আগে প্রধান সড়ক সংস্কারের কাজ শুরু হলে ভূমিদস্যু আক্তার হোসেন ও তার স্ত্রী রীনা আক্তার এবং অয়ন শর্মা সড়কের জন্য চাঁদা দাবি করেন। উপস্থিত সকলের অভিযোগ, চাঁদা না দেওয়ায় তারা রাস্তা সংস্কারে বাধা দেন। এ সময় বক্তারা অবিলম্বে এসব ভূমিদস্যুদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

    মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন, শাহ আমানত আবাসিক মালিক কল্যাণ সমিতির উপদেষ্টা মুক্তিযোদ্ধা সুলতান আহমেদ, সহ-সভাপতি কামালউদ্দিন, কলামিস্ট কায়কোবাদ চৌধুরী, সাজ্জাদ ইসলাম, মোঃ শোয়েব, মোঃ জসিম উদ্দিন, মোঃ শামীম, ফয়জুল আলম, মোঃ শফিউল আলম, মোঃ সাইদুল ইসলাম, খাতিজা বেগম, আলেয়া বেগম প্রমুখ।

    এলাকার সাধারণ মানুষের চলাচলের জন্য রাস্তা নির্মাণের প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন স্থানীয়রা। একই সঙ্গে অয়ন শর্মার শাস্তিও দাবি করেন। এ ঘটনায় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের (সিএমপি) কাছে অভিযোগ করেছেন আবাসিক সভাপতি শাহেদ আলী রানা। একই অভিযোগ করা হয়েছে সিএমপির উপ-কমিশনার (উত্তর) বরাবরে। পাঁচলাইশ থানা পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে।

     

    গত বছরের ২২ ডিসেম্বর দায়ের করা অভিযোগে অয়ন শর্মাকে ৪ নম্বর আসামী করা হয়েছিল। অন্য আসামিরা হলেন আক্তার হোসেন ও তার স্ত্রী রিনা আক্তার ও নুরুল বাশার বিপলু। মোটরসাইকেল জব্দের ঘটনায় গ্রেফতারকৃত আক্তারের ছেলের সহযোগী হিসেবে মামলার আসামি বিপুল।

    হযরত শাহ আমানত আবাসিক এলাকার সাধারণ সম্পাদক দিদারুল আলম জানান, আমরা দীর্ঘদিন ধরে এটিকে আবাসিক সড়ক হিসেবে ব্যবহার করে আসছি। রাস্তার নিচে পানি ও গ্যাসের লাইন এবং উপরে বিদ্যুৎ লাইন রয়েছে। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন যখন রাস্তার উন্নয়ন করতে যাচ্ছে তখন রাস্তার সামনের কিছু অংশ দাবি করেন আক্তার ও রিনা। তারা সাধারণ মানুষের চলাচলে বাধা দেয়। আদালত ও ভূমি অফিসে বিষয়টি নিষ্পত্তির পরও তারা বাধা দিচ্ছেন। আর চট্টগ্রাম প্রতিদিনের অয়ন শর্মা এসব ভূমিদস্যুদের পক্ষে সংবাদ প্রকাশ করে বিভ্রান্তি ছড়ান। তারও বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছে এলাকার লোকজন।

    আবাসিক প্লট মালিকরা জানান, আক্তার ও রিনা রাস্তার জায়গা দাবি করে প্লট মালিকদের কাছ থেকে ৩০ থেকে ৪০ লাখ টাকা আদায় করার কথা বলছেন। সেই টাকার একটা বড় অংশ অয়ন শর্মাকে দেওয়ার মৌখিক চুক্তি হয়েছিল। জমি দখলকারী আখতারের বিভিন্ন অপকর্ম ধামাচাপা দিতে অয়ন শর্মা তার পত্রিকার প্রভাব খাটিয়ে থানায় তদবির করেছিলেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।

    জানা গেছে, আক্তার-রীনা দম্পতি নিজেদের অংশ দাবি করে রাস্তার অংশে রাস্তা দেখিয়ে দুটি প্লট বিক্রি করেছেন। ওই দুটি প্লট বিক্রয় দলিলের কপি  আমাদের হাতে রয়েছে।

    এছাড়া অয়ন শর্মা প্রতিদিন চট্টগ্রামের একই সড়ক নিয়ে একাধিক সংবাদ প্রকাশ করেন। বিষয়টি নিয়ে হাস্যকর মন্তব্য করেছেন এক প্লট মালিক। তিনি বলেন, একজন সাংবাদিক কীভাবে আদালতের রায় ও ভূমি অফিসের নথি অস্বীকার করে সংবাদ পরিবেশন করতে পারেন তা আমার বোধগম্য নয়।

    সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, দীর্ঘদিনের দাবিকৃত চাঁদা না পেয়ে অভিযুক্তরা ঘটনাটিকে ভিন্ন খাতে মোড় নিতে পুলিশ কমিশনারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। হাইকোর্টের স্থিতাবস্থা অমান্য করে রাতের আঁধারে জমি ভরাট করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। প্রকৃতপক্ষে, এটি কমপক্ষে ১৫ বছর ধরে একটি সর্বজনীন রাস্তা হিসাবে ব্যবহৃত হয়েছে। চট্টগ্রাম তৃতীয় যুগ্ম জেলা জজ আদালতে মামলার বাদী বাবুল কুমার শীলের পক্ষে নিযুক্ত অ্যাটর্নি সামশুল হুদা ও আসামি সাধন শীল।

    আবাসিক প্লটের মালিক ও বাক প্রতিবন্ধী মুক্তিযোদ্ধা মো. এ অভিযোগের বিষয়ে পুলিশ কমিশনারকে লিখিত বক্তব্য দিয়েছেন সুলতান আহমেদ। সেখানে তিনি বলেন, মিথ্যা অভিযোগকারীদের নির্যাতনে বিরক্ত হয়ে আমি ২০১৮ সালে পাঁচলাইশ থানায় অভিযোগ করি। আক্তার হোসেন বাড়ির লোকজনকে ভয়ভীতি দেখিয়ে বিভিন্নভাবে হয়রানি ও সন্ত্রাস করে। ফলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে হাজার হাজার বাসিন্দাকে।

    অভিযোগের বিষয়ে অয়ন শর্মা আমাদের সময়কে বলেন, আমি কখনো কারো পক্ষে সংবাদ করে কারো কাছে টাকা দাবি করিনি। আর আমার বিরুদ্ধে কমিশনারের কাছে কেউ অভিযোগ করেনি। আমার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ বা মামলা হলে আমি জানতে পারব। এগুলো সব মিথ্যা। অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, আমি এগুলোর কিছুই জানি না। আমি আপনার কাছ থেকে প্রথম শুনলাম।

    তথ্যসূত্র: দৈনিক আমাদের সময়

    মন্তব্য করুন