• বাংলা
  • English
  • রাজনীতি

    চসিক নির্বাচন।সহিংসতা বাড়ছে।হামলা-পাল্টা হামলা,পড়ছে লাশ।

    চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) নির্বাচনের পরিস্থিতি ক্রমশ হিংস্র হয়ে উঠছে। দল সমর্থিত প্রার্থীদের বাইরে আওয়ামী লীগের অর্ধ শতাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী থাকায় পাল্টা হামলার সংখ্যা বাড়ছে। লাশও পড়ছে। নির্বাচনী সহিংসতা নিয়ে ইতোমধ্যে তাদের মধ্যে সংঘর্ষে দু’জন নিহত হয়েছেন। আনোয়ার জাহিদ তানবীর গত বছরের ১৮ই মার্চ রাতে দক্ষিণ কাট্টলি ১১ নম্বর ওয়ার্ডে সহিংসতায় প্রাণ হারিয়েছেন। তিনি পাহাড়তলী থানা আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ছিলেন। গত মঙ্গলবার রাতে পাথানটুলির ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে আবার লাশ পড়েছে। এবার আজগর আলী বাবুল নামে আওয়ামী লীগের আরেক কর্মী প্রাণ হারান। কাউন্সিলর পদে বিদ্রোহী প্রার্থী আবদুল কাদেরের সমর্থকরা দল সমর্থিত প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাহাদুরের সাথে সংঘর্ষের সময় নিহত হন। গুলিবিদ্ধ আরেকজন গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে আছেন। ঘটনার পরে আবদুল কাদেরসহ ২৬জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বুধবার সকালে কাদেরসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলাও করা হয়। চট্টগ্রামে পাল্টা আক্রমণের চিত্র বাড়ছে। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে বিভিন্ন ওয়ার্ডে অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। বিশিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এই চিত্র পরিবর্তন না করা হলে চট্টগ্রামে সহিংসতা বাড়বে। পড়বে আরো লাশ। জানতে চাইলে সুশাসনের (সুজন) চট্টগ্রাম জেলা শাখার নাগরিকের সভাপতি অধ্যাপক সিকান্দার খান বলেন যে নির্বাচনটি উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত। তবে এখন এর বিপরীত ঘটনা ঘটছে। ক্ষমতাসীন দলের বেশিরভাগ ওয়ার্ডে একাধিক প্রার্থী রয়েছে। আবার কিছু প্রার্থী পেশীশক্তি নিয়ে নির্বাচনে জয়ের চেষ্টা করছেন। এ কারণে পাল্টা হামলার সংখ্যা বাড়ছে। নির্বাচন কমিশনকে এখন এখনই শক্ত হাতে দমন করতে হবে। উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি করতে প্রার্থীদেরও এগিয়ে আসা উচিত। চসিকের ক্রমবর্ধমান সহিংস নির্বাচনের পিছনে কাউন্সিলর পদে প্রার্থীরা রয়েছেন। নগরীর ৪১ টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৫ টিতে আসন্ন কাউন্সিলররা এবার দলীয় সমর্থন পাননি। এর মধ্যে বারোজন বিদ্রোহী প্রার্থী হিসাবে মাঠে রয়েছেন। আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন ও দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল-আলম হানিফ একাধিকবার সাক্ষাত করেছেন এবং বিদ্রোহীদের নির্বাচন থেকে সরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। তবে মাত্র ২ জন তাদের ডাকে সাড়া দিয়েছে। জরিপে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসাবে এখনও রয়েছেন প্রাক্তন কাউন্সিলর। এ কারণে আক্রমণ ও পাল্টা হামলার সংখ্যা বাড়ছে। আধিপত্য বিস্তার করতে কাউন্সিলর প্রার্থীর অনুসারীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ছেন। যদিও মেয়র পদে লোকেরা বেশি আগ্রহী, মূল প্রার্থীদের অনুসারীরা এখনও বেপরোয়া আচরণ করেননি। জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, আমরা ভোটকেন্দ্রকে উৎসবমুখর রাখতে কঠোর পরিশ্রম করছি। এ কারণে মেয়র পদ নিয়ে এখনও কোনও সহিংস ঘটনা ঘটেনি। তবে কাউন্সিলর পদে একাধিক প্রার্থী থাকায় পাল্টা-পাল্টি আক্রমণ চলছে। বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী। শাহাদাত হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থীদের অনুসারীরা তাদের পেশী শক্তি প্রদর্শনের জন্য প্রায় প্রতিদিনই পাল্টা আক্রমণে জড়িয়ে পড়ছেন। এরই মধ্যে একাধিক লাশও পড়ছে পড়েছে। এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে নির্বাচন আর উৎসবমুখর পরিবেশ থাকবে না। কাদেরসহ ১১ জনকে আদালতে রিমান্ড মঞ্জুর করে বুধবার চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম শফি উদ্দিনের আদালত এই আদেশ দেন। রিমান্ড প্রাপ্ত আসামিরা হলেন- আব্দুল কাদের, হেলাল উদ্দিন, ওবায়দুল করিম মিন্টু, আসাদ রায়হান, ইমরান হোসেন ডলার, দিদার উল্লাহ, মিনহাজ হোসেন ফরহাদ, শহিদুল ইসলাম ওরফে শাহেদ, জাহিদুল আলম জাহিদ, শহিদুল ইসলাম ও আবদুর রহমান। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক শাহাদাত হোসেন খান জানান, ছয় আসামি ও পাঁচ সন্দেহভাজনসহ ১১ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতে হাজির করা হয়েছে এবং তাদেরকে ১০ দিনের রিমান্ডে রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে। আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।

    মন্তব্য করুন